স্বদেশের বা বিদেশের নামী প্রতিষ্ঠানে বিদ্যালাভের সুযোগ পেতে পারেন। সব কাজে কমবেশি সাফল্যের যোগ। আয় ... বিশদ
বাস্তবিকই ঠান্ডা এই পড়ল গতকাল। তাও এ স্থায়ী ঠান্ডা নয়। দিন সাতেক থেকে আবার উধাও হবে। ঠিকঠাক শীত পড়তে ঢের দেরি। ফলে গুড় তৈরি করতে শিউলিরা এখনও মাঠে নামেননি। কনকচূড় খই উঠতেও কম করে পনেরো দিন। তারপর জয়নগরে তৈরি হবে মোয়া। অথচ ট্রেনে-বাসে, বাজারে, পাড়ার অস্থায়ী দোকানে জয়নগরের মোয়া বলে দেদার বিক্রি হচ্ছে। দামও অস্বাভাবিক কম। ৫০, ৬০ কি ৭০ টাকা প্যাকেট। মোয়া ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ‘ভালো মানের একটি মোয়ার দাম কম করে ২০ টাকা। এখন যে মোয়া বিক্রি হচ্ছে তা জয়নগরের তো নয়ই। এমনকি এটিকে মোয়াও বলা যায় না।’ ফলে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ বহড়ু ও জয়নগরের ব্যবসায়ীদের। তাঁদের আর্জি, ‘নকল আটকাতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে। না হলে সমূহ বিপদ।’
মন মাতানো স্বাদ। মাতোয়ারা সুগন্ধ। এই দুই কারণে গোটা বিশ্ব জয়নগরের মোয়াকে সেলাম ঠোকে। ফ্রান্স থেকে আমেরিকা, দুবাই থেকে আফ্রিকা পর্যন্ত যায় এই মিষ্টি। জয়নগর মোয়া জিআই স্বীকৃতি অর্জন করেছে এই কারণেই। নামডাক আগেও ছিল। জিআই পাওয়ার পর তা হু হু করে আরও বেড়েছে। ফলে অক্টোবর শেষ হয়নি তখনও, তখনই এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী গুড়ের এসেন্স দিয়ে নকল মোয়া বানিয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছেন বাসে-ট্রেনে-খোলা বাজারে। কিন্তু জাঁকিয়ে শীত পড়ার পরই শুরু হয় মোয়ার সিজন। চলে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
কাহার আলি সরদার নামে এক শিউলি (রস সংগ্রহকারী ও গুড় প্রস্তুতকারক) বলেন, ‘এখন গাছ মুড়নো হচ্ছে। আরও দিন পনেরো বাদে রস পাওয়া যাবে। তারপর তৈরি হবে গুড়।’ বহড়ু ও জয়নগরের মোয়া ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ‘এখন তো সর্বত্র দোকান খুলে নকল জয়নগরের মোয়া বলে বিক্রি করা হচ্ছে।’ এখন মোয়া বিক্রি করছেন সোনারপুরের এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, ‘নলেন গুড় এখানে তেমন ভালো নেই বলে বসিরহাট থেকে আনছি। মোয়া তৈরি করছি।’ জিরান কাঠের নলেন গুড় ও কনকচূড় ধান ছাড়া ভালো মোয়া হবে না। কনকচূড় আষাঢ় মাসে রোয়া হয়। নভেম্বর মাসের শেষে ফসল ওঠে। ডিসেম্বরে মেলে। তা দিয়ে হয় খই। রায়দিঘির কাশীনগর হাট থেকে ব্যবসায়ীরা কিনে আনেন। খেজুর গাছ মুড়ো দিয়ে পনেরো দিন পর মাঝ বরাবর চাঁচার কাজ হয়। প্রথম রস জাল দিয়ে তৈরি গুড়কে জিরান কাঠের গুড় বলে। যা অতিশয় মিষ্টি। এ দু’টি ছাড়া ভালো মোয়া তৈরি সম্ভবই নয়। নিজস্ব চিত্র