নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ২০০২ সালে বাম জমানায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পুলিস এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ নিয়ে নানা টালবাহানা দেখিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত আলিপুর আদালতের কড়া গুঁতোয় নড়েচড়ে বসেছিল যাদবপুর থানার পুলিস। অসহায় বাঘাযতীন কলোনির বাসিন্দা যুবকের বৃদ্ধা মা শীলা সেনের অভিযোগ তড়িঘড়ি গ্রহণ করে ঘটনার তদন্তে নেমেছিল পুলিস। পরবর্তী সময় দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নামকাওয়াস্তে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলায় আলিপুর আদালতে চার্জশিট দিয়ে দায় সারে পুলিস। দীর্ঘ ২২ বছর পরেও সেই মামলায় ২৫ জনের মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন এযাবৎ মাত্র তিনজন। শুধু তাই নয়, বর্তমানে সেই মামলায় নেই কোনও সরকারি কৌঁসুলি। ফলে বর্তমানে মামলাটি একপ্রকার বিশবাঁও জলে। প্রবীর সেন নামে মৃত ওই যুবকের ভাই সোমনাথ সেন বৃহস্পতিবার একরাশ ক্ষোভ ও অভিমান নিয়ে বলেন, ‘সেদিন বাম সরকারের পুলিস কেন দাদার রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় ‘জাস্টিস’ দিতে নানা টালবাহানা করেছিল? কেন আমার বৃদ্ধা মা’কে দিনের পর দিন পুলিস প্রশাসন ও আইন আদালতের দরজায় ঘুরে বেড়াতে হয়েছিল?’ এদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি শিবনাথ অধিকারী বলেন, এনিয়ে তিনি বিস্তারিত খোঁজখবরের পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০২ সালে ২৬ আগস্ট রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছিলেন যাদবপুর থানার বাঘাযতীন কলোনির বাসিন্দা প্রবীর সেন। পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজির পর যুবকের বাড়ির লোকজন জানতে পারেন, প্রবীর ভর্তি আছেন বাঙ্গুর হাসপাতালে। ২ সেপ্টেম্বর প্রবীরবাবুকে মৃত অবস্থায় দেখা যায় হাসপাতালে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মাথায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছিল। মৃত যুবকের মা বারবার থানায় গিয়েও আইনি সুরাহা না পেয়ে কোর্টের দ্বারস্থ হন।
আদালত সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে মামলায় তিনজন সরকারি কৌঁসুলি বদল হয়েছে। একাধিক বিচারকও বদলি হয়েছেন। বর্তমানে এই মামলায় নেই কোনও সরকারি কৌঁসুলি। ফলে মামলার শুনানি বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। প্রবীণ সরকারি আইনজীবী নবকুমার ঘোষ বলেন, ‘দীর্ঘদিন কোনও মামলার শুনানি না হওয়ার অর্থ, মামলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।’