আয় বৃদ্ধি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। কর্মস্থলে সাফল্য ও প্রশংসা লাভের সম্ভাবনা। শরীর-স্বাস্থ্য বুঝে চলুন। ... বিশদ
১৭৭৫ সালের পাঁচ আগস্ট কলকাতায় ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল নন্দকুমারকে। ব্রিটিশ ভারতের প্রথম আইনি ফাঁসি দেওয়ার ঘটনা। ১৭৬৩ সালে ওয়ারেন হেস্টিংসের দুর্নীতি ধরেছিলেন নন্দকুমার। তার জেরে কালেক্টরেটের পদ খোয়াতে হয় হেস্টিংসকে। সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ট্রেজারিতে জমাও করতে হয়। তার কিছু পরে হেস্টিংস গর্ভনর জেনারেল হয়ে ফিরে আসেন কলকাতায়। এসেই নন্দকুমারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা শুরু করেন। বদলা নিতে আনলেন জালিয়াতির অভিযোগ। হেস্টিংসের বন্ধু এলাইজা ইম্পে তখন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। ফলে দুয়ে দুয়ে চার করে ফাঁসির নির্দেশ দিতে বিলম্ব করেননি। নন্দকুমারের ফাঁসি ঘোষণা হল। তৎকালীন কলকাতার কুলিবাজার যা এখন হেস্টিংস মোড়, সে জায়গায় কুয়ো তৈরি করা হয়। জায়গাটি এখনও ‘ফাঁসিঘর’ নামে পরিচিত। সেখানে আনা হল মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত নন্দকুমারকে। প্রভাবশালীর দুর্নীতি ফাঁস করে চিরকালই বিপদে পড়তে হয়েছে মানুষকে। নন্দকুমারের হল ফাঁসি।
মানুষ ভুলতে বসেছে মহারাজা নন্দকুমারকে। ঐতিহাসিক সেই ফাঁসিঘর এখন প্রায় আস্তাকুঁড়। এই বিষয়ে একাধিকবার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে ‘বর্তমান’ সংবাদপত্রে। জায়গাটি পরিষ্কার করার লাগাতার দাবি তুলছিল সবাই। জায়গাটি পূর্তদপ্তরের। তবে সেটি সাফাইয়ের দায়িত্ব পায় কলকাতা পুরসভা। সম্প্রতি সেই জায়গাটি সাফ করা হয়। আগাছা ইত্যাদি সাফাই করা হয়েছে। এসব করতে গিয়েই তৈরি হয়েছে নয়া বিতর্ক। গোটা ফাঁসিঘরটি নীল-সাদা রঙে রাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেওয়ালে পড়েছে সাদা রংয়ের পোচ। দরজা নীল করে দেওয়া হয়েছে। হেরিটেজ স্থানের রং কীভাবে বদল করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সবাই। ‘ইয়ং কলকাতা’র চেয়ারম্যান সনাতন হালদার বলেন, ‘পাঁচ আগস্ট নন্দকুমারকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। চলতি বছর তাঁর স্মৃতিতে ওখানে আমরা একটি ফলক বসিয়েছি। অনেক অনুরোধের পর জায়গাটি সাফ হয়েছে। কিন্তু পাল্টে যাওয়া রং দেখে আমরা অবাক। হেরিটেজের রং বদল হয় কী করে! আমরা বিষয়টি সরকারকে জানাব।’ কলকাতা পুরসভার হেরিটেজ বিভাগের মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘হেরিটেজের রং বদল করা উচিত নয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’ অন্যদিকে ওই জায়গাটির নাম হেস্টিংস মোড়ের বদলে ‘নন্দকুমার মোড়’ করার দাবি তুলেছেন সনাতনবাবুরা। একইসঙ্গে ফাঁসিস্থলটি সাজিয়ে তোলা, নন্দকুমারের আবক্ষমূর্তি ও ফলক সরকারিভাবে বসানোর দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় চিঠি লিখেছেন তিনি। -নিজস্ব চিত্র