কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা ভোটে উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন পুরসভা ও ব্লক এলাকায় শাসকদলের ভরাডুবি হয়েছে। এত উন্নয়নের পরও কেন এমন ফল, তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব। তাতে নিচুতলায় দুর্নীতির পাশাপাশি সাংগঠনিক দুর্বলতাই চিহ্নিত হয়েছে। সেকারণে, প্রশাসনিক পদে থাকা ব্লক বা শহর তৃণমূলের সভাপতিদের কোনও একটি পদ থেকে সরানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেকের এলাকা কমিয়ে একই ব্লক বা শহরে একাধিক সভাপতি রাখার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। দমদম পুরসভা এলাকা বর্তমানে সাংগঠনিকভাবে দু’ভাগে বিভক্ত। আগামীদিনে দমদম পুরসভা এলাকাকে চার ভাগে ভাগ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। অর্থাৎ সাংগঠনিকভাবে দমদমে চারজন সভাপতি হবেন। বরানগর পুরসভা এলাকায় দু’জন শহর তৃণমূল সভাপতি রয়েছেন। আগামীদিনে তা ভেঙে তিনটি করার পরিকল্পনা রয়েছে। হাবড়া পুরসভা এলাকাকেও দুটি ভাগে ভাগ করা হবে। রেল লাইনের দু’পারের ওয়ার্ডগুলিকে নিয়ে পৃথক সভাপতি করা হবে। বারাসত শহরকেও দুটি ভাগে ভাগ করে দু’জন সভাপতি করা হবে। ব্লকগুলির ক্ষেত্রেও একই কথা ভাবা হয়েছে। বাগদা ব্লককে দুটি ভাগে ভাগ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখানে পাঁচটি ও চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে নিয়ে দুটি পৃথক সাংগঠনিক ব্লক করা হবে, সেখানে দু’জন সভাপতি থাকবেন। জেলা নেতৃত্বের দাবি, এর ফলে বাগদার মতো বিস্তীর্ণ এলাকায় সাংগঠনিক দিক থেকে দল আরও মজবুত হবে।
অন্যদিকে, বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান তথা শহর তৃণমূলের সভাপতি সুনীল মুখোপাধ্যায়কে মাসখানেক আগে দলীয় পদ থেকে সরানো হয়েছে। এক্ষেত্রেও দলের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, একইসঙ্গে দুটি পদ থাকায় সাংগঠনিক কাজ উপেক্ষিত হচ্ছে। সেকারণেই তাঁকে সরানো হয়েছে। শুধু বারাসত শহর নয়, জেলার বিভিন্ন শহর ও ব্লকের একাধিক নেতা দুটি পদে বসে রয়েছেন। এক্ষেত্রেও বদল আনা হবে। শাসকদলের জেলা নেতাদের দাবি, পুরসভার চেয়ারম্যান বা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে মানুষের কোনও অভিযোগ থাকলে, তা সংশ্লিষ্ট শহর বা ব্লকের দলীয় সভাপতিকে জানানো যাবে। যদি একই ব্যক্তি দুটি পদে থাকলে, অভিযোগ জানানোর প্রথম ধাপেই বাধা পাবেন সাধারণ মানুষ। তিনি সঠিক বিচার পাবেন না। দলও বহু ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের রাগ ও অভিমানের কথা জানতে পারবে না। ফলে ক্ষুব্ধ মানুষ বাধ্য হয়েই সভাপতির বিরুদ্ধ গোষ্ঠী কিংবা বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এই ব্যবস্থার অবসান হলে এক ব্যক্তি ও এক পদের দিকে এগনোর পরিকল্পনা মাথায় রাখছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও এই পদক্ষেপ কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে দলের অভ্যন্তরে প্রশ্ন রয়েছে। শুধু তাই নয়, এই নিয়ম দলের সর্বস্তরে, নাকি শুধুমাত্র নিচুতলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
দলের জেলা সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, শহর ও ব্লকে সভাপতিদের এলাকা কমানোর প্রাথমিক পরিকল্পনা করেছি। এছাড়া দলীয় পদ ও প্রশাসনিক পদে একই ব্যক্তি থাকার কারণে সাংগঠনিক কাজে গাফিলতি আসছে। এইসব মাথায় রেখেই দলে সাংগঠনিক রদবদলের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। তবে প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিচুতলায় বসে সার্বিক আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।