দক্ষিণবঙ্গ

একরাশ অভিমান নিয়েই শিক্ষকতার পেশা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সিমলাপালের ধূর্জটি

রঞ্জুগোপাল মুখোপাধ্যায়, সিমলাপাল: রাজনৈতিক কারণে শিক্ষকের চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। বঞ্চনার শিকার হওয়ার পর বাড়িতেই কার্যত পাঠশালা খুলে বসেন সিমলাপালের ধূর্জটি চক্রবর্তী। শিক্ষাদানের বিনিময়ে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা দাবি না করার ব্যাপারে যৌবনেই তাঁর বাবা তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই থেকে গ্রামগঞ্জের গরিব ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে পড়িয়েছেন দীর্ঘ প্রায় অর্ধশতাব্দী। তবে জীবন সায়াহ্নে এসে একরাশ অভিমান নিয়ে সেই শিক্ষকতার মহান পেশা থেকেই সরে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর আক্ষেপ, এখন ছাত্রছাত্রীরা জ্ঞান অর্জনের থেকে বেশি নম্বর পাওয়াটাকেই ধ্যানজ্ঞান করছে। ফলে তাঁর মতো শিক্ষকের প্রয়োজন ফুরিয়েছে বলে তিনি মনে করেন। সেই কারণে প্রাইভেট টিউশনি ছেড়ে পৌরহিত্যকেই পেশা হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন। সম্প্রতি নেট দুনিয়ায় ধূর্জটিবাবু ‘ভাইরাল’ হয়েছেন। 
সিমলাপাল ব্লকের লক্ষ্মীসাগর অঞ্চলের প্রত্যন্ত গোপালপাড়া গ্রামে ধূর্জটিবাবুর বাড়ি। ৩০ বছর আগে তাঁর স্ত্রীবিয়োগ হয়। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে এক ভাইয়ের কাছে ওই বৃদ্ধ থাকেন। ভাই বাসের হেল্পারি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এক চিলতে মাটির বাড়িতে তাঁদের অভাবের সংসার। ধূর্জটিবাবুর সঞ্চয় বলতে বর্তমানে প্রায় কিছুই নেই। আজীবন বিনাপয়সায় তিনি ছাত্রছাত্রীদের পড়িয়েছেন। কেউ কেউ অবশ্য গুরুপ্রণামী হিসেবে তাঁকে কিছু দিলে তা ফিরিয়ে দিতেন না। তবে সেই টাকা নিজের কাছে তেমন রাখতেন না। ওই টাকা দিয়ে অন্য গরিব ছাত্রছাত্রীদের বই, খাতা কিনে দিতেন। প্রাথমিক থেকে উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের তিনি শিক্ষার পাঠ দিতেন, সেইসঙ্গে ন্যায়-নীতি-ত্যাগ-সংযমেরও। 
শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে ধানখেত ঘেরা গোপালপাড়া গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ধূর্জটিবাবুর দেখা পাওয়া যায়নি। তিনি সকালে উঠে পাশের গ্রামে পৌরহিত্য করতে যান। গ্রাম থেকে ফেরার পথে রাস্তায় তাঁর সঙ্গে দেখা। দ্বিপ্রহরে দীর্ঘদেহী ধূর্জটিবাবু সাইকেলে চেপে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। অগত্যা রাস্তার পাশের গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে হল। প্রখর রোদে সাইকেলে দীর্ঘপথ যাত্রা করার পরেও তাঁর চোখেমুখে কোনও ক্লান্তির ছাপ ছিল না। নেই কোনও বিরক্তিভাবও। একমুখ হাসি নিয়ে খোলা মনে আলাপচারিতা সারলেন। 
ধূর্জটিবাবু বলেন, কংগ্রেস জমানায় আমি ‘হাত’ শিবিরের সমর্থক ছিলাম। সেই কারণে বাম আমলে আমাকে শিক্ষকতার চাকরি দেওয়া হয়নি। তারপর থেকেই টিউশনি পড়ানো শুরু করি। শিক্ষা দানের বিনিময়ে কারও কাছে কোনওদিন ফি দাবি করিনি। আশপাশের অন্তত ১০-১২টি গ্রামের অগুনতি ছাত্রছাত্রী আমার কাছে পড়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে দেশ বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমার শিক্ষকতা জীবনের প্রথম দিকের ছাত্রছাত্রীদের সন্তান এমনকী নাতি-নাতনিদেরও পরবর্তীকালে পড়িয়েছি। তবে কয়েকমাস ধরে পড়ানো বন্ধ করে দিয়েছি। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন ছাত্রছাত্রীরা বিষয়ের গভীরে গিয়ে জ্ঞান অর্জন করতে চায় না। তারা শুধু আশি, নব্বইয়ের ঘরে নম্বর পাওয়াকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। বর্তমানে রাজ্য সরকারের দেড় হাজার টাকা পুরোহিত ভাতা পাই। যজমানদের প্রণামীও রয়েছে। তা দিয়েই কোনওরকমে চলে যাচ্ছে।
15d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পেশা ও ব্যবসায় উন্নতির বড় কোনও সুযোগ প্রাপ্তি। ধর্মভাব শুভ। স্বাস্থ্য গড়বড় করতে পারে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৮৩ টাকা৮৪.৫৭ টাকা
পাউন্ড১০৯.৩৫ টাকা১১২.৯২ টাকা
ইউরো৯১.৯২ টাকা৯৫.১২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা