দক্ষিণবঙ্গ

স্বামীর অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করার জেদেই মণিকা আজ নামী মৃৎশিল্পী

নিজস্ব প্রতিনিধি, মোহনপুর: স্বামী মারা গিয়েছিলেন দুরারোগ্য ব্লাড ক্যান্সারে। বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যে স্বামীকে হারানোয় মাথার উপর আকাশ ভেঙে পড়েছিল। সেই বছরেই স্বামীর অর্ডার নেওয়া পাঁচটি ঠাকুর বানানোর দায়িত্ব ঘাড়ে পড়ে। সেই কাজ করতে গিয়ে শুনতে হয়েছিল নানা কটূক্তি। বিভিন্ন এলাকার মানুষ বলতেও শুরু করে, ‘মেয়ে মানুষ বানাতে পারবে না ঠাকুর’। তাতে জেদ চেপে বসে। সেই মহিলাই প্রায় ৩০ বছর ধরে মা দুর্গার মূর্তি গড়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। গল্পটা খড়গপুর-১ ব্লকের মোহনপুর সোফিয়াবাদ এলাকার বাসিন্দা মণিকা পালের। তাঁর এই লড়াইকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন এলাকার মানুষ। এবছরও তিনি বিপুল সংখ্যক ঠাকুরের বরাত পেয়েছেন। দিন রাত পরিশ্রম করে তৈরি করছেন দেবীর মূর্তি। মণিকা দেবী ঠাকুর বানানোর ফাঁকে ফাঁকে বলেন, বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই স্বামীর মৃত্যু হয়। প্রচুর টাকা খরচ হয়ে গিয়েছিল। তার উপর ৫টি ঠাকুর তৈরির চাপ। অনেকেই বলেছিল আমি পারব না। কিন্তু তাঁদের ভুল প্রমাণ করেছি। তিনি আরও বলেন, টাকা রোজগারের চেয়েও সম্মান অনেক বেশি পেয়েছি। ঠাকুর বানিয়ে নিজে স্বনির্ভর হয়ে মেয়ে প্রিয়াঙ্কা পালকে মানুষ করেছি। তবে শাশুড়ি সহ পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতা ছাড়া কোনওভাবেই এগিয়ে যেতে পারতাম না। 
প্রসঙ্গত, ১৯৯০ সালে প্রফুল্ল পালের সঙ্গে বিয়ে হয় মণিকা দেবীর। প্রফুল্লবাবু পেশায় মৃৎশিল্পী ছিলেন। প্রতিবছর নিয়ম করে তিনি মা দুর্গার মূর্তি গড়তেন। এছাড়াও গণেশ, কালী, বিশ্বকর্মা ঠাকুর তৈরির বরাত পেত পাল পরিবার। ১৯৯১ সালে তাঁদের কন্যা সন্তান হয়। সেই সময়ে ঠাকুর বানাতেন না মণিকা দেবী। তবে পটের উপর আঁকতে ভালোবাসতেন। ১৯৯৪ সালে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রফুল্লবাবু। সেই সময়ে জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভালো না থাকায় চিকিৎসা করানোর জন্য কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ধরা পড়ে ব্লাড ক্যান্সার। চিকিৎসার শুরুতে স্বামীর রক্ত ‘ও নেগেটিভ’ গ্রুপের হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। প্রতি মাসে দুই বোতল রক্ত দিতে হতো। তবে বহু চেষ্টা করেও শেষরক্ষা হয়নি। কয়েক মাসের মধ্যে স্বামী মারা যান। সেই সময় পাঁচটি ঠাকুর তৈরির অর্ডার নিয়েছিলেন প্রফুল্ল বাবু। সেই ঠাকুর শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন কণিকা দেবী। জানা গিয়েছে, আগে খড়ের চালের ঘরে ঠাকুর বানাতেন তিনি। কয়েকবছর আগে মাথার উপর পাকা ছাদ হয়েছে। 
তিনি প্রতিবছর গড়ে ১২টি দুর্গা ঠাকুর, ৫টি গণেশ ঠাকুর, ২৫টি বিশ্বকর্মা ঠাকুর ও ৩০টির মতো কালী ঠাকুর তৈরি করেন। তবে আগের তুলনায় মাটির দাম বেড়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন কণিকা দেবী। তাঁর কথায়, একটা কথা সকলের মনে রাখা দরকার, মনের জোর আর সাহস থাকলেই মানুষ এগিয়ে যেতে পারবে। কোনও দিন ভাবিনি নিজে একজন মৃৎশিল্পী হব। মেদিনীপুর শহরের ধর্মা এলাকার বাসিন্দা পরিতোষ অধিকারীর বলেন, ওঁর তৈরি ঠাকুরের বেশ নামডাক আছে। দারুন ফিনিশিং। বিভিন্ন ক্লাবে সেই ঠাকুর যায়। ওঁর সাহস ও লড়াইকে কুর্নিশ জানাচ্ছি।-নিজস্ব চিত্র
15d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পেশা ও ব্যবসায় উন্নতির বড় কোনও সুযোগ প্রাপ্তি। ধর্মভাব শুভ। স্বাস্থ্য গড়বড় করতে পারে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৮৩ টাকা৮৪.৫৭ টাকা
পাউন্ড১০৯.৩৫ টাকা১১২.৯২ টাকা
ইউরো৯১.৯২ টাকা৯৫.১২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা