অম্বরীশ চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: মিনি ডার্বির নায়ক কোনও কোচ বা ফুটবলার নন। আধঘণ্টার মধ্যে জোড়া লাল কার্ড দেখিয়ে প্রবল বিতর্কে রেফারি হরিশ কুণ্ডু। ম্যাচ ছাপিয়েও আলোচনায় কুণ্ডুর কাণ্ড। বাকি সত্তর মিনিটে (সংযোজিত সময় ধরে) হিজাজিদের দুর্গ ভাঙতে ব্যর্থ কাসিমভরা। বুক চিতিয়ে গোলশূন্য ড্রয়ে এক পয়েন্ট নিয়ে ড্রেসিং-রুমে ফিরলেন শৌভিকরা। গুরুত্ব আর পরিস্থিতির বিচারে যা তিন পয়েন্টের চেয়ে মূল্যবান। অন্যদিকে, তিন ম্যাচ পর জয়ে ফেরার সোনার সুযোগ হাতছাড়া চেরনিশভ ব্রিগেডের। আর কবে গোল করবেন আলেক্সিস, মানজোকিরা? এরপর রুশ কোচের কোনও যুক্তিই ধোপে টেকে না। মানজোকিদের ধরে আনলেন কে? ম্যাচের পর ক্ষোভ উগরে দিলেন হতাশ সাদা-কালো সমর্থকরা।
রক্ষণে হিজাজিকে রেখে প্রথমেই চমক দিয়েছিলেন লাল-হলুদ কোচ ব্রুজোঁ। তাঁর ৪-২-৩-১ ফর্মেশনের পাল্টা ৪-৩-৩ ছকে দল সাজিয়েছিলেন চেরনিশভ। শুরু থেকে তাই আক্রমণের চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করে মহমেডান। দুই প্রান্তে রেমসাঙ্গা ও বিকাশকে বল সাপ্লাই করতে পেন্ডুলামের মতো দুললেন অ্যালেক্সিস। হিজাজির ভুলে দু’বার বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হলেও সামাল দেন আনোয়ার। বোঝাই যাচ্ছে, লাল-হলুদ জার্সি আর গায়ে চাপাতে চাইছেন না হিজাজি। নতুন কোচের অধীনে তাঁর পারফরম্যান্সে দায়সারা ভাব সুস্পষ্ট। অন্যদিকে, তালালের দুরন্ত ফ্রি-কিক শরীর ছুড়ে বাঁচান মহমেডান গোলরক্ষক ভাস্কর রায়। এরপরেই ছন্দপতন। তাল কাটল ম্যাচের। ম্যাচের বয়স তখন ২৮ মিনিট। অমরজিৎকে ফাউল করায় নন্দকুমারকে লাল কার্ড দেখান রেফারি হরিশ কুণ্ডু। পরমুহূর্তে বোতলে লাথি মেরে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন মহেশ সিং। প্রাক্তনদের দাবি, টেনশনের ম্যাচে আরও সংবেদনশীল হওয়া উচিত রেফারির। তবে দায় এড়াতে পারেন না মহেশরাও।
বিরতির পর সকলকে চমকে দিলেন মহমেডান কোচ চেরনিশভ। আক্রমণের চাপ বাড়ানোর বদলে অ্যালেক্সিস ও অমরজিৎকে তুলে নিলেন তিনি। পরিবর্তে মাঠে আসেন লালরিনফেলা ও মানজোকি। দিনের সহজতম সুযোগ মিস করলেন পরিবর্ত নামা মাকেন ছোটে। গোললাইনে দাঁড়িয়ে করা তাঁর হেড লালচুংনুঙ্গার গায়ে বাধা পায়। শেষ পর্বে তালালের বদলে ক্লেটনকে মাঠে পাঠিয়ে একটা চেষ্টা করেছিলেন ব্রুজোঁ। তবে কাজে আসেনি। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ মিলিয়ে টানা চার ম্যাচে অপরাজিত ইস্ট বেঙ্গল। আইএসএলে সাত ম্যাচে তাদের পয়েন্ট মাত্র এক। ব্রুজোঁ জমানায় লড়াইটাই বড় প্রাপ্তি। কুয়াদ্রাত জমানার শেষ পর্বে যা একেবারেই দেখা যায়নি। উল্লেখ্য, লিগ তালিকায় লাস্ট বয়ের একটু উপরে মহমেডান। সমসংখ্যক ম্যাচে তাদের পয়েন্ট পাঁচ।
ইস্ট বেঙ্গল: প্রভসুখন, রাকিপ, আনোয়ার, হিজাজি, লালচুংনুঙ্গা, শৌভিক (জিকসন), সাউল, মহেশ, তালাল (ক্লেটন), নন্দকুমার, দিয়ামানতাকোস (ডেভিড)।
মহমেডান স্পোর্টিং: ভাস্কর, আদিঙ্গা, গৌরব, ফ্লোরেন্ট, জুডিকা, অ্যালেক্সিস (মানজোকি), কাসিমভ, অমরজিৎ (মাফেলা, ইরসাদ), বিকাশ, ফ্রাঙ্কা, রেমসাঙ্গা (মাকেন)।
ইস্ট বেঙ্গল-০ : মহমেডান স্পোর্টিং-০