Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

কেউ দেখেনি
প্রদীপ আচার্য

নিরাপদর নিরাপদে থাকার সুখ উবে গেল। গ্রামের নিরিবিলি প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকার একটা আলাদা সুখ আছে। সেই সুখের মুখে আজ ঝামা ঘষে দিল একটা জানোয়ার। সবাই সাপের ভয় দেখিয়েছে। বলেছে, বর্ষায় জলকাদার হ্যাপা, সাপের উপদ্রব হবে। কিন্তু, গ্রামে যে এইসব এলিমেন্টদের বাস, সেকথা তো কেউ বলেনি! নিরাপদ ভাবেন, আশ্চর্য! সবাই বর্ষার জলকাদা, সাপখোপ নিয়ে হ্যাজালো। আরে বাবা, গ্রামে বর্ষার জলকাদা, সাপের ভয় কি নতুন কথা কিছু? কিন্তু, বর্ষায় গ্রামে যখন সন্ধে নামে, তখন নাগাড়ে ব্যাঙের গ্যাঁ গোঁ আর ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, টিনের চালে অবিরাম বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ। জানলার বাইরে ঘুরঘুট্টি অন্ধকার। ঝড়বৃষ্টিতে লোডশেডিং অনিবার্য। তখন ঘরে হ্যারিকেনের টিমটিমে আলো। সব মিলিয়ে একটা তোফা ভুতো ভুতো সন্ধেরাত। সেই রোমাঞ্চ কি কম?
মধ্যমগ্রাম থেকেই মালতীপুরের স্কুলে যাওয়া আসা করছিলেন নিরাপদ। রিটায়ার করে গ্রামে থাকার ইচ্ছের কথা বলেছেন সরখেলবাবুকে। গ্রামের মানুষ সরখেলবাবু। তিনিই খোলাপোতার জমিটার খোঁজ দিয়েছেন। জমিটা লোভনীয় বলে রিটায়ার করা পর্যন্ত আর অপেক্ষা করলেন না নিরাপদ। জমি আর স্কুল দুই-ই যখন হাসনাবাদ লাইনেই পড়ছে, তখন শুভস্য শীঘ্রম। মধ্যমগ্রামের বাপেরকেলে জমিবাড়ি সব বেচে দিলেন। তিনি একা ওয়ারিশ। তাই প্রোমোটারের দেওয়া মোটা রকমের পুঁজি তাঁর হাতে। পাঁচিলঘেরা জমি। পেল্লায় লোহার গেট। হয়তো কোনও ছোটখাট কারখানা করার স্কিম ছিল। নিরাপদর মতে, এর চেয়ে ভালো জায়গাজমি এত সস্তায় হয় না। পুজোর ছুটিতে রাজমিস্ত্রি লাগিয়ে দিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা রহমত আলির তদারকিতে দেখতে দেখতে বাড়ি একেবারে রেডি। একেবারে হোম সুইট হোম ।
সেই সুইট হোম আজ নিমের চেয়েও তেতো হয়ে গিয়েছে। একটা আস্ত জানোয়ার নিরাপদর মন ভেঙেচুরে দিয়েছে। সব সুখ একেবারে চৌপাট করে দিয়েছে। শহরে মারপিট, খুনখারাপি, তোলাবাজি, চাঁদার জুলুম লেগেই আছে। সেসব থেকে দূরে সরে এসেও রেহাই পেলেন কই? এখানে তো আরও সাংঘাতিক। রীতিমতো ফিজিক্যালি অ্যাসল্ট! উফ! হরিবল!
ছেলেবেলা মহা আনন্দে কেটেছে জলপাইগুড়ির গ্রামে। তারপর আধা গ্রাম মধ্যমগ্রামে এসে বাবা বাড়ি করলেন। সেই মধ্যমগ্রাম এখন শপিংমলে-মলে ঝলমল করছে। সবাই বাপদাদার বসতবাড়ি, ভিটেমাটি বেচে দিয়ে ফ্ল্যাটে উঠে যাচ্ছে। বড় ঘিঞ্জি। একটু ফাঁকা নেই যে প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেবেন। আর এখানে নিরাপদর এই পনেরো কাঠা জমি তাঁর জীবনের সব শখ মিটিয়ে দিয়েছে। একটা ছোট্ট ফুলের বাগান, একটু শাকসব্জির চাষ করার শখ, সে কি আজকের? ছোটখাট দালানকোঠা। ছাদে কাঠের মিস্তিরি ডেকে এনে পাকাপোক্ত পায়রার খোপ বানিয়েছেন। চোত, বোশেখের অলস দুপুরে পায়রার একটানা গুড়গুড় বকম বকম ডাক। নাগাড়ে সেই শব্দ শুনতে শুনতে দিবানিদ্রার সুখ যে কী, তা সবাই বুঝবে না। বাড়ির পিছনদিকে এককোণে পাঁচিল ঘেঁষে পাকাপোক্ত মুরগির ঘর করে দিয়েছেন। চারজোড়া পায়রা আর তিনটে মুরগি, একটা মোরগ এনে দিয়েছে রহমতই। নিরাপদর জমির সীমানায় একটা নিমগাছ একটা জামরুল গাছ আর একটা ল্যাংড়া আমগাছ পড়েছে। তিনটে গাছে পাখপাখালির কলকাকলি লেগেই আছে। পাখিদের কলতান আর মোরগের ডাকে ঘুমভাঙা সকাল। আহা এই হল কোটি টাকার গুড মর্নিং। দু’জন মানুষের দু’খানা ঘর। একটা ছোট্ট ডাইনিং স্পেস। অ্যাটাচড বাথ। মাথার ওপর পাকা ছাদ হলেও বারান্দায় টিনের চাল রাখলেন শখ করেই। ওটা নস্টালজিয়া। বর্ষাকালে বৃষ্টির ঝমঝম শব্দ নিরাপদকে ছেলেবেলায় টেনে নিয়ে যায়। ছেলেবেলা কেটেছে জলপাইগুড়ির মোহিতনগরে। সেখানে তখন সব বাড়ির ছাদই ছিল টিনের চালের। বৃষ্টিও হতো জম্মের বৃষ্টি। দু’দিন-তিনদিন ধরে। আর সেই বৃষ্টির ঝমঝম ঝমঝম শব্দ বাজত টিনের চালে। শুনতে শুনতে কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমের দেশে পাড়ি দেওয়া, আহা! ছেলেবেলার সেই সুখ আবার এত বছর বাদে ফিরে পাওয়া যাবে। বাড়িতে বিশাল একটা উঠোন। বরাতজোরে নিমগাছটা পড়েছে উঠোনের মাঝখানে। নিরাপদর খুশি আর ধরে না। বাড়ির উঠোনে নিমগাছ মানে, নো স্নেক। কোনও বিষধর সাপ এই বাড়ির ত্রিসীমানায় ঘেঁষবে না। বনবিহারীবাবু শুনে বললেন, ‘এর সায়েন্সটা কী?’ নিরপদ বলেন, ‘সায়েন্স মানে... আমার মাকে বলতে শুনেছি।’
—‘অ। তবে পলিউশন ফ্রি গ্রামে থাকার সুখ সবই বুঝলাম। কিন্তু বর্ষাকালে যখন সাপের উপদ্রব হবে, আর রাতে যখন বাড়ির উঠোনে শেয়াল এসে কম্মোটি করে দিয়ে যাবে, তখন টেরটি পাবেন।’
উঁচু পাঁচিলে ঘেরা জমি। জুতসই লোহার গেট। তেমন বুঝলে একটা ডাকাবুকো কুকুরও পুষবেন তিনি। নিঃসন্তান নিরাপদর সাধের তালিকায় একটা কুকুর তো আছেই। আর আছে দুটো গাইগোরু। পিছনে পাঁচিল ঘেঁষে একটা পাকাপোক্ত গোয়ালঘর বানাবেন। রহমতকে ধরে দুটো গোরুও কিনবেন তিনি। কিন্তু ভয় ওই শেয়াল নিয়ে।
শেয়ালের ভয়টা নিরাপদর মনে ঢুকিয়ে দিয়েছেন কাজিসাহেব। খোলাপোতারই আদি বাসিন্দা। কাজিসাহেব আবার একপ্রস্ত মনসামঙ্গলও গেয়ে রেখেছেন। বলেছেন, ‘বর্ষায় সাপের গত্তেও পানি ঢুকে পড়ে। সেই পানির তাড়নায় তখন মা মনসার বাহিনী গত্তের তে বেইরে এইসে এর গোয়ালঘরে, তার রান্নাঘরে সিঁধোয়ে যায়।’ নিরাপদবাবু বললেন, ‘আচ্ছা বাড়ির উঠোনে নিমগাছ থাকলে কোনও বিষধর সেই বাড়ির মুখো হয় না নাকি?’ কাজিসাহেব হেসে বলেন, ‘আম্মো শুনিছি। তা সি বিষয় পস্ট জ্ঞিয়ান আমার নেইকো। তবে আবনারে এট্টা বিষয় সাবধান কইরে দিতিই হবে। তা হল গে শ্যাল।’
‘শেয়াল?’
‘হ্যাঁ, শ্যাল। কুনোদিন টেরেনে রাত হলি আর বাড়ি ফেরার তাল করবেন না। চাঁপাপুকুর টিশানে নেইমে খোলাপোতা আসতি ওই কাটিয়ার বাগ গেরাম, কাঁটাপুকুর গেরাম আর চাঁপাপুকুর গেরাম পার হই তো আসতি হয়। রাস্তার দুধারে ধু ধু মাঠ। সেই দূরে দূরান্তে দু’-একখান বাড়ি। দুধারে শিরিশ গাছ, আকাশমণি গাছ, কৃষ্ণচূড়া গাছ রইয়েছে। দিনির বেলা দেখতি ভালোই লাগে। কিন্তু রেইতির বেলা আন্ধারে বেপদ। রাস্তার দু’ধারের ধানখেতে কাচের সবুজ গুলির পারা শ্যালের টলটলে চোখ জ্বলজ্বল করে। চারপাশ শুনশান। রাত্তিরি ওই পথে পা রাখলি পিছে ফেউ লেগে যাবে।’
‘ফেউ মানে শিয়াল?’
‘হ্যাঁ, ওরা থাকে পালে পালে। দলে বিশ, পঁচিশ, তিরিশটা। নিঃশব্দে পিছু নেবে। তারির পরে তাল বুঝে পায়ের পিছন দিকে গোড়ালির ওপরি আটারির রগটা এক্কেবারে কামড়ে ছিঁড়ে নেবে। তখন ফিনকি দে রক্ত বেরতি থাকবে। যে যত বড় পালোয়ানই হোক সে মাটিতে লুটোয় পড়বেই। তখন গলার কাছে কামড়ে কণ্ঠনালী ছিঁড়ে দেবে, যাতি মানুষ চিৎকার করতি না পারে। সেবার এট্টা নিকুটি মেই মরল শ্যালের কামড়ে। তখন খবরির কাগজিও বেইরেছেলো। একবার মুই নিজিও আন্ধারে ধানখেতে কাঁচের সবুজ সবুজ গুলি দেখিছি। ভয় পে ছুট্টে গে এট্টা বাড়িতে ঢুইকে পড়িছি। সেই বাড়িতি তখন দুই প্রতিবেশীর চিলচিৎকারে তুমুল বিতণ্ডা হচ্ছিল। মানষির সেই গলা ফাটানো চিৎকার শুনে বাছাধনেরা আর আমার পিছু নেয়ার সাহস করেনিকো। ওই গেরস্তের বাড়ি ঢুইকে মুই পার পেই গিয়েস।’
কাজিসাহেবের মুখে শেয়ালের বৃত্তান্ত শুনে শিউরে উঠেছেন নিরাপদ। ভাবলেন, খোলাপোতায় সাধ করে জমিবাড়ি করাটা তাহলে বোধয় ভুল হল। জায়গাটা মোটেই খুব নিরাপদ নয়।’ স্কুল থেকে তো সন্ধের আগেই ফেরেন তিনি। ব্যস। তারপর এদিক ওদিক আর নট নড়নচড়ন। কলকাতার দিকে গেলে বিকেল বিকেল ফিরতে পারলে ফিরবেন, নয়তো পরদিন সকালে। মোদ্দা কথা, ওই শেয়ালের পাল্লায় পড়ে বেঘোরে মরা যাবে না।
সে তো গেল শেয়াল ও সর্পবৃত্তান্ত। কিন্তু এই রাসকেল জানোয়ারটার কথা তো কেউ বলেনি! আশ্চর্য!
আহা! তখন কী আনন্দই না হচ্ছিল। সর্বাঙ্গে আনন্দ একেবারে থই থই করছিল। খুশির ফোয়ারা ঝরছিল। আকাশে চচ্চড়ে রোদ ঝাঁ ঝাঁ করছিল। সূর্যের গনগনে আঁচ। জ্যৈষ্ঠের শেষ। আষাঢ় উঁকি দিচ্ছে। প্রচণ্ড গরম। অথচ নিমগাছের ঘন ছায়ায় হালকা হালকা হাওয়া। মনে হচ্ছিল বসন্তকাল। এই হল গ্রামে থাকার সুখ। কিন্তু হঠাৎ বেলা তিনটে নাগাদ নিরাপদর মাথায় কেন যে সেই ভূত চাপল!
নিরাপদর স্ত্রী নিরুপমা মেঝেতে শীতলপাটি পেতে ফ্যানের হাওয়ায় নাক ডাকিয়ে ভাতঘুম ঘুমোচ্ছেন। নিরুপমার একটুও ইচ্ছে ছিল না এই অজ গাঁয়ে এসে থাকার। নিরাপদ বলেন, ‘গ্রামে থাকার সবচেয়ে বড় অ্যাডভান্টেজটা হল, ফ্রেশ এয়ার আর টাটকা শাকসব্জি। পুকুরের জ্যান্ত মাছ। দামেও যেমন সস্তা, তেমনি তার স্বাদ।’ সে কথা অবশ্য অস্বীকার করেন না নিরুপমা। এখানে রেঁধে খেয়ে সুখ আছে। কিন্তু ঘরের মানুষ ছাড়া দু’দণ্ড কথা বলার মানুষ আর কই?
ঘুম থেকে উঠে নিরুপমা চায়ের জল চাপালেন। বললেন, ‘চা দিয়ে একটু মুড়িমাখা খাবে? মাখব?’ শুনে মুখে রা কাড়লেন না নিরাপদ। গুম মেরে বসে রইলেন। অপমানের জ্বালাটা কিছুতেই ভুলতে পারছিলেন না তিনি। মানুষ হয়, তাকে দু’-দশদিন বাদেও তার একটা মোক্ষম জবাব দেওয়া যায়। অপমানের শোধ তোলা যায়। কিন্তু এ কি মানুষ? এটা তো একটা আস্ত জানোয়ার। নিরাপদকে একেবারে বোবা করে দিয়ে চলে গেল। লোকে শুনলে লজ্জায় মরে যেতে হবে। সবাই ঠাট্টা-তামাশা করবে। আর বনবিহারীবাবু শুনলে তো এ-কান সে-কান পাঁচকান করে বেড়াবেন। লোকটার এমনিতেই খেয়ে কাজ নেই কোনও। নিরাপদকে খুব হিংসে করেন। নাকি হাঁপানিতে ঘুমতে পারেন না। তবু এতদূর ঠেঙিয়ে এসে একদিন একবেলা খেয়ে থেকে জমিবাড়ি ঘুরে দেখে গিয়েছেন। তবে না পেটের ভাত হজম হল তাঁর। উঠোনের ভরা নিমগাছটা দেখে মুখটাকে রোদে পোড়া আমসির মতো করে বললেন, ‘এমনিতে ঠিকই আছে। তবে নিমপাতা আর নিমফল যখন ঝরতে শুরু করবে, তখন উঠোনে ঝাঁট দিতে দিতে কোমরে স্লিপ ডিস্ক হয়ে যাবে দেখবেন।’ নিরাপদ বলেছেন, ‘সে যা-ই বলুন। দুধ দেওয়া গোরুর লাথিটাও ভালো।’
এদিকে নিমতিতা, ওদিকে আমমিঠা। নিরাপদর জমির ওই ল্যাংড়া আমগাছে ফলন কাকে বলে দেখে যা। লোক ডেকে তিনি আম পাড়িয়ে বেচে দিয়েছেন। নিজের ভাগে যা রেখেছেন, সেই অত আম কে খায়? স্কুলে গরমের ছুটি। খেয়ে বসে নেই কাজ তো আম খাও। নিরাপদর সুগার নেই। তাই সকালে দুধচিঁড়ে আর ছাতুর সঙ্গে দু-দু’খানার ছাল ছাড়িয়ে কচলে আঁটি নিঙড়ে নিয়ে আঃ। বিকেলে দুধমুড়ির সঙ্গে— কাটো গিন্নি আরও দু’খানা। খাঁটি ল্যাংড়া বলে কথা। নিজের গাছের আম খেয়ে নিমগাছের হাওয়া খেয়ে তো দিব্যি দিন কাটছিল। কিন্তু, কেন যে তিনি প্রকাশ্যে ওই অপকম্মোটি করতে গেলেন! 
উঠোনে নিমগাছের নীচে একটা চারপেয়ে চৌকিতে মাদুর বিছানো আছে। দুপুরের খাওয়াদাওয়া সেরে নিমগাছের ছায়ায় প্রকৃতির হাওয়ায় শরীর গড়িয়ে দিলেন নিরাপদ। চোখ বুজে শুয়েছিলেন। থাকলে কী হবে? মন তখন পড়ে আছে আসল বস্তুটিতে। ভাবলেন, গিন্নি ঘুমোচ্ছে। এই তালে কম্মো সারা 
হয়ে যাক। 
পা টিপে টিপে ঘরে গিয়ে খাটের নীচ থেকে তিনি আসল বস্তুটাকে টেনে আনলেন। চারপেয়ের ওপর বড় একটা ছড়ানো গামলায় রাখলেন। গুছিয়ে বসলেন। দু’হাতে ভালো করে সর্ষের তেল মেখে নিলেন। তারপর রসে টইটম্বুর তুলতুলে কাঁঠালটায় সামান্য চাপ দিতেই ফালা ফালা হয়ে গেল সেটা। উঁকি দিল রসালো কোয়াগুলি। বীজ ছাড়িয়ে খান দু’-তিন কোয়া মুখে পুরে দিয়ে আবেশে চোখ বুজলেন তিনি। নিমতিতার ছায়ায় বসে এমন মিঠা ফল আহা! চোখ বুজেই তারিয়ে তারিয়ে খাচ্ছিলেন। মন আনন্দে গেয়ে উঠল, ‘কী মিষ্টি, দেখ মিষ্টি, কী মিষ্টি এ কাঁঠাল।’ কিন্তু চোখ খুলতেই সব আনন্দ কর্পূরের মতো উবে গেল। সামনেই এসে বসেছে এক মূর্তিমান শাখামৃগ। একটা পেল্লায় হনুমান। সে নিরাপদর চোখের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। 
মুখপোড়ার চোখের ভাষা হল, ‘কী ব্যাপার? একা একাই খাচ্ছ? আমরা কি আঙুল চুষব?’ হনুমানের চোখের দিকে তাকিয়ে নিরাপদর এমনই মনে হল। তিনি ভয়ে স্ট্যাচু হয়ে গেলেন। আচমকা গালে একটা সপাটে চড় খেলেন তিনি। চড় মেরে হাত থেকে কাঁঠালটা কেড়ে নিয়েই হনুমানটা একলাফে পগারপার। হতভম্ব হয়ে নিরাপদ চারদিকে নজর ঘুরিয়ে দেখে নিলেন, নাহ্, কেউ দেখেনি। 
29th  December, 2024
গুপ্ত রাজধানী: সিরি ফোর্ট
সমৃদ্ধ দত্ত

সাবধানে পা ফেলতে হবে। দেখে তো মনে হচ্ছে মাটি। ঘাস। পাথর। অনায়াসে পা রেখে রেখে এগিয়ে চলা যায়। একটি ধ্বংসস্তূপ থেকে অন্য একটি ধ্বংস চিহ্নে যাওয়ার জন্য যে ব্যাসল্ট পাথরের অমসৃণ টুকরোয় সতর্কভাবে পা রাখতে হয়, সে সতর্কতা নিছক পিছলে পড়ে যাওয়ার জন্য? বিশদ

19th  January, 2025
ডক্টর মিশ্র
নন্দিনী নাগ

সল্টলেকে ঝাঁ-চকচকে চেম্বার, একতলা একটা ফ্ল্যাটের পুরোটা নিয়ে। সাদা পাথরের তিন ধাপ সিঁড়ি ডিঙিয়ে কাঠের জাঁকালো সদর দরজা। সেই দরজা পেরিয়ে ভেতরের হলঘরে সোফার মধ্যে শরীর ছেড়ে দেওয়ার পর মিসেস দত্তের মনে ডাক্তারবাবুর প্রতি বেশ সমীহ জন্মাল। বিশদ

12th  January, 2025
অস্তরাগ
সঞ্জয় রায়

অস্তগামী সূর্যের রক্তিম আভা নদীর জলে গলে গলে যাচ্ছে। বসন্ত বাতাসে চরাচর জুড়ে গোধূলির অদ্ভুত বর্ণচ্ছটায় প্রকৃতি যেন মায়াময়। চিত্রপটে স্যিলুট হয়ে বসে আছে দু’টি নরনারী। জীবনের প্রান্তদেশে পৌঁছে দু’টি মন পরস্পর খুঁজে পেয়েছে তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের অদ্ভুত মিল। বিশদ

05th  January, 2025
অতীতের আয়না: সাহেবি বড়দিন ও নিউ ইয়ার
অমিতাভ পুরকায়স্থ

কাজকর্ম শিকেয় তুলে পাঁচ দিন ধরে বাঙালির দুর্গোৎসব পালন যাঁরা বাঁকা চোখে দেখেন, তাঁদের আঠারো শতকের কলকাতা থেকে ঘুরিয়ে আনতে পারলে বেশ হতো। সে সময় শহরের সাহেব-মেমদের বড়দিন উপলক্ষ্যে খানা-পিনা-নাচ-গান ও কেনাকাটার হুল্লোড়ের মরশুম চলত দিন দশেক। বিশদ

05th  January, 2025
গুপ্ত রাজধানী: ইন্ডিয়া গেট
সমৃদ্ধ দত্ত

গরিব ও মধ্যবিত্তদের কাছে সেই আর্থিক শক্তি কোথায়! রবিবার অথবা ছুটির দিন কিংবা ন্যাশনাল হলিডে হলেই কোনও বৃহৎ শপিং মল অথবা মাল্টিপ্লেক্সে যাবে! অনেকক্ষণ মেনুকার্ড দেখার পর শেষ পর্যন্ত বরাবরের মতোই ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন অর্ডার করার বিলাসিতাও যাদের থাকে না, তারা যাবে কোথায়? বিশদ

05th  January, 2025
গুপ্ত রাজধানী: হোলি ট্রিনিটি চার্চ
সমৃদ্ধ দত্ত

দিল্লি মানেই ইতিহাসের গল্প। এর আনাচকানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থাপত্য। এরমধ্যে বেশ কয়েকটির খোঁজ এখন আর রাখেন না পর্যটকরা। ইতিহাসের সাক্ষ্য হয়ে গোপনেই পড়ে রয়েছে সেইসব স্থাপত্য। তারই খোঁজে গুপ্ত রাজধানী। বিশদ

29th  December, 2024
আজও রহস্য: রেস কোর্সের অশরীরী
সমুদ্র বসু

ভূত মানুন আর না মানুন, ভূত-প্রেত নিয়ে আগ্রহ কিন্তু সবার। আমাদের আশপাশের গ্রাম, শহর, মফস্‌সল থেকে শুরু করে খোদ কলকাতা শহরে এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে ব্যাখ্যার অতীত বিভিন্ন ঘটনা আজও ঘটে। সেই তালিকায় আছে কলকাতা রেস কোর্সেরও নাম। বিশদ

29th  December, 2024
চোর  মিনার

গম্বুজ। সমাধি। শহিদ স্তম্ভ। এসবই তো ইতিহাসের চিহ্ন হিসেবে সর্বত্রই  দেখা যায়।  কখনও মসৃণ বহিরঙ্গ। কখনও চিত্রাঙ্কন। আবার কোনও সময় ভাস্কর্যের নমুনা থাকে বহির্গাত্রে। কিন্তু এই মিনারের স্তম্ভগাত্রে এত গর্ত কেন? মাটি থেকে সোজা উঠে গিয়েছে আকাশের দিকে। বিশদ

22nd  December, 2024
কলকাতা এক পরীর দেশ

আসলে আমরা খেয়াল না করলেও আমাদের চারপাশের হাওয়ায় এখনও দিব্যি নিঃশ্বাস নেয় আঠেরো-উনিশ শতকের কলকাতা। আর সেই পুরনো কলকাতার স্মৃতিকে ধরে রাখার অন্যতম প্রতীক হল— পরী।
  বিশদ

15th  December, 2024
লাল মন্দির

সমৃদ্ধ দত্ত
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লালকেল্লা ও লাল মন্দির। একটি জগৎ বিখ্যাত। অন্যটি স্বল্প খ্যাত। লাল মন্দিরের উচ্চতা তো কম নয়। লালকেল্লার সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাঁদনি চকের দিকে তাকালেই চোখে পড়ার কথা। অথবা সেভাবে পর্যটকদের দৃষ্টিগোচরই হয় না।
বিশদ

15th  December, 2024
ডাক দিয়েছে কোন সকালে
বিজলি চক্রবর্তী

হরি হে তুমি আমার সকল হবে কবে...।’ গলা ছেড়ে গানটা গাইতে গাইতে বিশ্বরূপ রান্নাঘরের দরজায় এসে দাঁড়াল। হাতের কাজ বন্ধ করে নবনীতা বিশ্বরূপের মুখোমুখি হল। বিশ্বরূপ গান বন্ধ করল না। নবনীতার চোখের মুগ্ধতা তাকে উৎসাহিত করে। বিশ্বরূপের গানের ভক্ত নেহাত কম নয়। বিশদ

15th  December, 2024
আদরের পিউ
কৌশানী মিত্র

অনির্বাণের কাল নাইট ছিল। সারারাত দুর্দান্ত পরিশ্রম গিয়েছে। জুনিয়র রেসিডেন্ট হিসেবে এই অদ্ভুত একটা আধা গ্রাম-আধা শহর মতো জায়গাটায় এসে থাকতে শুরু করেছে ও। এখানে আসার পর থেকেই সকাল-দুপুর-রাত কেমন গুলিয়ে যায় অনির্বাণের। বিশদ

08th  December, 2024
প্রতিশোধ
সাবিনা ইয়াসমিন রিঙ্কু

মাত্র ছ’মাসেই যে ফল পেয়ে যাবে ভাবতে পারেনি জয়তী! প্রদীপ্ত কি নিজেও ভাবতে পেরেছিল বাষট্টি থেকে চুরানব্বই হবে! বেশ লম্বা বলে বাইরের লোকরা পার্থক্যটা অতটা ধরতে না পারলেও জয়তী জানে পুরনো প্যান্টগুলো আর কোমর পর্যন্ত উঠতে চাইছে না। বিশদ

01st  December, 2024
বনের মানুষ

—মাস্টার, আজ ডিম বাদ দে, হামাদিগের ছেলে-মেয়েগুলান কেউ খাবেকনি রে!
—কেন?
—হামার সঙতে আসে ওই শর্বরী টুডুটা আছে না? উয়ার ছেলেটোর গায়ে ‘মায়ের দয়া’ বের হইচে। উয়ার লিগে হামাদের পাড়ার সবার মাছ-মাংস-ডিম খাওয়াটো বারণ আছে।
বিশদ

17th  November, 2024
একনজরে
অবশেষে ঘুম ভাঙল মোদি সরকারের। শম্ভু ও খানাউরি সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। ...

ধর্মের জিগির তো ছিলই। এবার অস্ত্রের ঝনঝনানির ইঙ্গিত দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার! হিন্দুদের বাড়িতে ধারালো অস্ত্র রাখার নিদান দিলেন তিনি। ...

আইএসএলে ইস্ট বেঙ্গলের হারের ধারা অব্যাহত। রবিবার অ্যাওয়ে ম্যাচে এফসি গোয়ার কাছে ০-১ গোলে বশ মানল অস্কার ব্রুজোঁর ছেলেরা। সবমিলিয়ে হারের হ্যাটট্রিকে আরও বিপাকে ক্লেটনরা। ...

বালুরঘাট শহরে জোড়া ব্রিজের কাছে আত্রেয়ী সংলগ্ন খাঁড়ি দখল করে নির্মিত হচ্ছে দোকান। যা নিয়ে সরব হন শহরের মানুষ। সেই খবর ‘বর্তমান’-এ প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসল সেচদপ্তর। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থাগমের সম্ভাবনা।  সন্তানের কর্ম প্রাপ্তির সুখবর পেতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে জটিলতা কিছুটা ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১২৬৫:  ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়
১৮১৭: হিন্দু কলেজের (বর্তমান প্রেসিডেন্সি কলেজ) যাত্রা শুরু
১৮৭০:  বেঙ্গল গেজেট প্রথম প্রকাশিত হয়
১৮৭১: শিল্পপতি রতনজি টাটার জন্ম
১৮৯২: আমেরিকার স্প্রিং ফিল্ডে প্রথম বাস্কেটবল খেলা হয়
১৯০৫: দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রান্সভালের প্রিমিয়ার খনিতে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হীরা পাওয়া যায়। যার ওজন ছিল ৩.১০৬ ক্যারেট
১৯৩৪: আলোকচিত্র এবং ইলেকট্রনিকস্ কোম্পানী হিসেবে ফুজিফিল্ম কোম্পানীর যাত্রা শুরু
১৯৭২: নতুন রাজ্য হল অরুণাচল প্রদেশ ও মেঘালয়
১৯৮৪: বিশ্বের সেরা সাঁতারু ও টারজান চরিত্রাভিনেতা জনি ওয়েসমুলারের মৃত্যু
১৯৯৩: মার্কিন অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্নের মৃত্যু
১৯৯৫: তাজমহলকে পরিবেশ দূষণের হাত থেকে রক্ষাকল্পে ৮৪ টি শিল্প কারখানা বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়
২০০৯: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম এবং প্রথম আফ্রো-আমেরিকান রাষ্ট্রপতি হিসেবে বারাক ওবামার শপথ গ্রহণ
২০২১: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৯তম উপ রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস এর শপথ গ্রহণ।



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৫.৭৮ টাকা ৮৭.৫২ টাকা
পাউন্ড ১০৩.৬৮ টাকা ১০৭.৩৮ টাকা
ইউরো ৮৭.৬০ টাকা ৯০.৯৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
19th  January, 2025
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৯,৪৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৯,৮৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭৫,৯০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৯০,৮৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৯০,৯৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
19th  January, 2025

দিন পঞ্জিকা

৬ মাঘ ১৪৩১, সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫। ষষ্ঠী ৯/০, দিবা ৯/৫৯। হস্তা নক্ষত্র ৩৮/১৮ রাত্রি ৮/৩০। সূর্যোদয় ৬/২২/৫৭, সূর্যাস্ত ৫/১২/৩০। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪৯ মধ্যে পুনঃ ১০/৪৩ গতে ১২/৫২ মধ্যে। রাত্রি ৬/৫ গতে ৮/৪৩ মধ্যে পুনঃ ১১/২১ গতে ২/৫২ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/২ গতে ৪/২৮ মধ্যে। বারবেলা ৭/৪৪ গতে ৯/৫ মধ্যে পুনঃ ২/২৯ গতে ৩/৫০ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/৯ গতে ১১/৪৮ মধ্যে। 
৬ মাঘ ১৪৩১, সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫। ষষ্ঠী দিবা ৯/১৭। হস্তা নক্ষত্র ৮/১০। সূর্যোদয় ৬/২৬, সূর্যাস্ত ৫/১১। অমৃতযোগ দিবা ৭/৪৮ মধ্যে ও ১০/৪৪ গতে ১২/৫৭ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/১৪ গতে ৮/৪৯ মধ্যে ও ১১/২৫ গতে ২/৫২ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/৯ গতে ৪/৩৮ মধ্যে। কালবেলা ৭/৪৭ গতে ৯/৭ মধ্যে ও ২/৩০ গতে ৩/৫১ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/৯ গতে ১১/৪৯ মধ্যে। 
১৯ রজব।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

11:47:43 PM

পূর্ণকুম্ভে চলছে লেজার লাইট শো, বিনামূল্যেই দর্শন করতে পারছেন পুণ্যার্থীরা

11:24:28 PM

আমেরিকার স্বর্ণযুগ শুরু হল, শপথ নেওয়ার পরেই দাবি ট্রাম্পের

11:21:00 PM

লটারি এজেন্সির দোকান থেকে কয়েক হাজার টাকা ছিনতাই
পিস্তল দেখিয়ে একটি লটারির এজেন্সির দোকান থেকে কয়েক হাজার টাকা ...বিশদ

09:58:00 PM

ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আসতে শুরু করেছেন অতিথিরা

09:37:00 PM

স্ত্রী মেলানিয়াকে সঙ্গে নিয়ে হোয়াইট হাউসে এলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

09:19:00 PM