Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

বাঙালি ব্যক্তিত্ব
সমৃদ্ধ দত্ত

সাধারণত ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় দিল্লি গেলে প্রথমদিকে উঠতেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদের বাসভবনে।  পরবর্তীকালে ডাঃ জে পি গাঙ্গুলির বাড়িতে। ১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু হঠাৎ জরুরি তলব করলেন। সেবার দেখা গেল প্রয়োজনটা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, বিধানচন্দ্র রায় উঠলেন সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে। একদিন দু’দিন নয়। একটানা তিনদিন। প্রতিদিন সেখানে চলে আসেন বল্লভভাই প্যাটেল। আর তিনজনের মধ্যে কী নিয়ে যেন বৈঠক হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দিল্লি থেকে ফিরে বিধানচন্দ্র রায় ১৩ সেপ্টেম্বর একটা চিঠি লিখে জওহরলালকে জানালেন, তিনি শহিদ সুরাওয়ার্দির সঙ্গে দেখা করেছেন। কথা হয়েছে। সুরাওয়ার্দি জানিয়েছেন, হায়দরাবাদের ব্যাপারে মুসলিম সম্প্রদায় কোনওরকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাবে না। আশ্বাস দিয়েছেন। তবুও বিধানচন্দ্র চিঠিতে জানালেন, রাজ্যগুলিকে সতর্ক রাখাই শ্রেয়। মিটিংয়ে আমাদের যে কথা হয়েছে, সেরকমই প্রস্তুতি রাখা ভালো। এরপরই জানা গেল হায়দরাবাদে ভারতীয় সেনা প্রবেশ করছে। আর নিজামের রাজ্যকে অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। অর্থাৎ স্বাধীন ভারতের একটি অপার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে দেশের প্রধানমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রী কার সঙ্গে আলোচনা করছেন? পশ্চিমবঙ্গ নামক একটি অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে।  এলাহাবাদ হাইকোর্ট ১২ জুন, ১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধীর নির্বাচনকে অবৈধ আখ্যা দেওয়ার পর তাঁকে দলের অভ্যন্তরের অনেকেই বলেছিলেন সেরা পদক্ষেপ হল, ইস্তফা দেওয়া। তারপর আইনি লড়াই করা যাবে সুপ্রিম কোর্টে। আপাতত অবিতর্কিত নেতা স্বর্ণ সিংকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসানো হোক। তারপর আবার ইন্দিরা ফিরে আসবেনই। কিন্তু দু’টি মাত্র মানুষ ইন্দিরাকে বলেছিলেন, ইস্তফার প্রশ্নই নেই। শুধু এই দু’জনের কথায় প্রভাবিত হয়ে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সবথেকে বিতর্কিত যে সিদ্ধান্তটি নিয়ে ইন্দিরা গান্ধী পরবর্তী প্রজন্মের কংগ্রেসকে চরম ব্যাকফুটে রেখে দিয়ে গিয়েছিলেন আজীবনের জন্য, সেটি হল জরুরি অবস্থা। সেই জরুরি অবস্থার সিদ্ধান্তের কারিগর ছিলেন একজন নিজের পুত্র সঞ্জয় গান্ধী, আর অন্যজন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়। সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন যে, তিনিই জরুরি অবস্থার অর্ডিন্যান্সের ড্রাফট রচনা করেন। 
১৯৯৬ সালে ত্রিশঙ্কু লোকসভায় সকলকে ছাড়িয়ে অকংগ্রেসি, অবিজেপি কোন নেতার নাম সর্বাগ্রে চলে এসেছিল প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে? একজন বাঙালি। জ্যোতি বসু। কিন্তু তাঁর দলের পলিটব্যুরো সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হতে না দিয়ে বাঙালির এক চিরস্থায়ী ক্ষতি করে দিয়ে গিয়েছে।
কখনও তিনি রেলমন্ত্রী হয়েছেন। কখনও তাঁকেই বিজেপি বিরোধী মহাজোটের বৈঠকের আহ্বায়ক করা হয়েছে। কখনও তাঁর সমর্থন করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নেতা-নেত্রীরা আসছেন কলকাতায়। কখনও  শুধুই তাঁ঩কে পরাস্ত করতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ২০ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, একঝাঁক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, ৪০ জন স্টার প্রচারকের তালিকা এসেও নাজেহাল হয়ে যাচ্ছে। শুধু আজ মুখ্যমন্ত্রী বলে নয়, জ্যোতি বসুর পর সর্বভারতীয় মানচিত্রে গুরুত্ব, পরিচিতি আর ফ্যাক্টর হিসেবে একমাত্র ব্র্যান্ড বাঙালি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। 
স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে এসে বাঙালির সামনে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট সবথেকে বড় যে প্রশ্নটি নিয়ে হাজির হয়েছে, সেটি হল, স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত এই যে দিল্লির কাছে বিভিন্ন সময়ে বাঙালি নেতানেত্রীর ঝাঁঝালো উপস্থিতি ও সম্মানজনক গুরুত্ব, এটা আগামীদিনে বজায় থাকবে তো? এবারের ভোটের ফলাফলই কি বাঙালির রাজনৈতিক ইমেজের ভবিতব্যকে নির্ধারণ করে দেবে না? কোনও সন্দেহ নেই নির্বাচনী লড়াই হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম নরেন্দ্র মোদির মধ্যে। মোদি জয়ী হলে বাংলার মসনদে যে-ই বসুন, চালিকাশক্তি হবেন মোদিই। অর্থাৎ দিল্লি থেকে চালিত হবে বাংলা। তাহলে কি আগামীদিনে বাংলার মাটি থেকে উঠে আসা, বাংলায় রাজনীতি করে জনপ্রিয় হওয়া, বাংলার মানুষের জননেতা অথবা জননেত্রী হওয়ার রাজনৈতিক প্রবণতা বন্ধ হয়ে যাবে? দিল্লিই যখন ভাগ্যনিয়ন্তা হবে, তখন আর কি কোনও বাঙালি ব্যক্তিত্ব দিল্লির কাছে কোনওদিন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারবে? নাকি সম্পূর্ণ অন্য এক রাজনৈতিক চরিত্র নিয়ে আত্মপ্রকাশ করবে বাংলা? ডাবল ইঞ্জিন সরকারের আকর্ষণে বাঙালি আইডেন্টিটি ক্রমেই কি ম্লান হয়ে যাবে? ২ মে ফলপ্রকাশের পর আভাস পাওয়া যাবে এই প্রশ্নের উত্তরের। তার আগে আমরা দেখে নিতে চেষ্টা করব ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন কেন স্বাধীনতার পর রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ ভিন্ন চরিত্রের। 
তৃণমূলের পক্ষ-বিপক্ষ: 
তৃণমূল সম্পর্কে সাধারণভাবে মনোভাব কেমন? এই প্রথম এমন একটি ভোট হচ্ছে যেখানে একটা অভিনব মনোভাব প্রতিফলিত হতে দেখা যাচ্ছে। সেটি হল, তৃণমূল বিরোধী ভোটারদের অবস্থান হল,  সরকারের প্রতি রাগ কম, দলের প্রতি রাগ বেশি। অর্থাৎ সরকার ভালো, কিন্তু দলের নেতাদের একাংশ খারাপ। তৃণমূল সম্পর্কে এরকম অদ্ভুত দোলাচলই এবারের ভোটকে করে তুলেছে অনেক বেশি চিত্তাকর্ষক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অতি বড় রাজনৈতিক বিরোধীও একবাক্যে বলে না যে,  সরকারটা জঘন্য। কোনও কাজই করেনি। বরং কমবেশি সক঩লে স্বীকার করে হ্যাঁ! কাজ অনেক করেছে। কিন্তু নেতাদের প্রতি অভিযোগ আছে। সেটা সর্বাগ্রে বুঝতে পেরেছেন পোড় খাওয়া ইলেকশন স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর। তিনি তাই প্রচুর ছাঁটাই করেছেন প্রার্থী তালিকায়। কিন্তু সেটা কি যথেষ্ট? মনে হয় না। তাই ওই স্ট্র্যাটেজিতে বেশ কিছুটা চান্স ফ্যাক্টর থেকে যাচ্ছে।
এই ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সবচেয়ে বড় অ্যাডভান্টেজ হল দুটি— ১) তাঁর ১০ বছরের উন্নয়নের তালিকা এবং ২) বাঙালির আইডেন্টিটি ইমোশন। মমতাকে পরাস্ত করতে যত স্টার বক্তা আসছেন সকলেই হিন্দি ভাষায় কথা বলছেন। যাঁরা আবার বাংলায় ভাষণ দেন, অর্থাৎ এ রাজ্যের বিজেপি নেতারা, তাঁরা ওজনে ও গুরুত্বে মমতার সমকক্ষই নন। পাবলিক তাঁদের ফ্যাক্টরই মনে করে না। সুতরাং লড়াইটা কিছুটা হচ্ছে হিন্দি বনাম বাংলার। পাশাপাশি ১০ বছরে অসংখ্য উন্নয়ন প্রকল্প তো বটেই, ঠিক ভোটের আগে একের পর এক সরকারি উদ্যোগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ মাস্টারস্ট্রোক হিসেবে জনমনে ছাপ ফেলতে সফল হয়েছে।  স্বাস্থ্যসাথী থেকে দুয়ারে সরকার। বিজেপি অনেকটাই ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলছে, এই প্রচার যখন তুঙ্গে, তখন সবথেকে বড় ফ্যাক্টর হয়ে যেতে পারে শুধুই এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সবথেকে বড় পুঁজি কী হবে এই ভোটে? গরিব ও মহিলা ভোট! আরবান আর রুরাল সিংহভাগ মহিলা ভোট এবার মমতাই পাচ্ছেন। গরিব মানুষের ভোটে অবশ্যই ভাগ বসাতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি। কারণ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা অন্যতম এক প্রকল্প যা মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। আবার উজ্জ্বলা গ্যাস যোজনা যথেষ্ট প্রচার পেলেও গ্যাসের দাম সেই প্রকল্পকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করেছে। মহিলা, গরিব ও যুব— এই তিন ভোটব্যাঙ্ক এবার জেতাহারার অন্যতম কারিগর। 
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বিতীয় অ্যাডভান্টেজ হল, তাঁর প্রতিপক্ষরা তাঁকে সর্বদাই আন্ডারএস্টিমেট করে। ১৯৮৪ সালে যিনি সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে  পরাস্ত করেছেন, কংগ্রেসের অফিসিয়াল টিমের সঙ্গে লাগাতার যুদ্ধ করে নিজেকেই সিপিএম বিরোধী এপিসেন্টার করে তুলেছেন, একা একটি দল গঠন করার মাত্র ১৩ বছরের মাথায় প্রবল প্রতাপান্বিত সিপিএম-কে হারিয়ে সরকার গঠন করেছেন, মানুষের পালস বোঝার অবিশ্বাস্য ক্ষমতা বারংবার প্রমাণ করেছেন, সেই তাঁকেই বরাবর বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস আজও ব্যক্তিগতভাবে তাচ্ছিল্য করে, ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে, হাসাহাসি করে। আজকের সোশ্যাল মিডিয়ার ভাষায় ট্রোল করে। সেটা বুদ্ধিমানের রাজনীতি হয়নি আগেও। এবারও হচ্ছে না। ২০১১, ২০১৪, ২০১৬, ২০১৯ একের পর এক নির্বাচনে রাজ্যে মমতাকেই প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিয়েছেন  সাধারণ মানুষ। সুতরাং ২০২১ সালে এসে বিরোধীদের উচিত ছিল, এবার মমতার প্রতিপক্ষ হিসেবে তাদের রাজনীতির প্যাটার্ন বদলে দেওয়া। ব্যক্তি আক্রমণের পরিবর্তে দলগত কোনও রাজনৈতিক ত্রুটিকে তুলে ধরা। কিন্তু ভুল করে বিরোধীরা মমতার চালু করা যাবতীয় উন্নয়ন প্রকল্পের প্রবল সমালোচনা করে চলেছে। আর সেটা একটা ফাঁদ। 
কারণ যতই তাঁরা কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, রূপশ্রী, দুয়ারে সরকার, ২ টাকার চালের নিন্দা করছেন, ততই যাঁরা এসবের সুবিধা পাচ্ছে, সেইসব গরিব সাব-অলটার্ন শ্রেণির মধ্যে একটা উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে, তাহলে কি এই সরকার চলে গেলে ওরা এসে এসব বন্ধ করে দেবে? সুতরাং মমতার প্রকল্পকে আক্রমণ করা একপ্রকার কাউন্টার  প্রোডাকটিভ হয়ে যাচ্ছে বিরোধীদের কাছে।  এখনও বিরোধীদের শত অভিযোগ সত্ত্বেও এই প্রতিটি প্রকল্প মমতাকে  ডিভিডেন্ড দিচ্ছে। 
আর তৃণমূলের পক্ষে উদ্বেগজনক কী? দুটি ইস্যু— ১) এবারের ভোটে বহু কেন্দ্রে সরাসরি ধর্মীয় মেরুকরণের ভিত্তিতেই ভোট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করার প্রবল চেষ্টা চলছে এবং ২) দলের নিচুতলার একাংশের প্রতি মানুষের ক্ষোভ, কর্মসংস্থান নিয়ে হতাশা। এই দুই সমস্যার সামনে অবশ্যই পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকছে অসংখ্য জনমুখী কাজ। যেগুলির সরাসরি উপকার মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে। যদি এই ম্যাচটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ী হতে পারেন, তাহলে স্বাধীনতার পর মমতাই হয়ে উঠবেন বাংলার  সবথেকে   প্রভাবশালী ও অবিশ্বাস্য উচ্চতার এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদি বিরোধী মহাজোটের মুখ হিসেবে অবতীর্ণ হবেন তিনিই। বাংলার পর তাঁর অবশ্যম্ভাবী লক্ষ্য হবে দিল্লি!
নরেন্দ্র মোদির মরণপণ চ্যালেঞ্জ
এটাই শেষ চান্স ইতিহাস তৈরি করার। বাংলা দখল করতে না পারলে মোদির কৃতিত্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। আগামী প্রজন্মের পর প্রজন্ম জুড়ে গোটা ভারত বারংবার মনে করবে যে, মোদির অশ্বমেধের ঘোড়াকে আটকে দিয়েছে বাংলা। বিজেপি, আরএসএসের গোপন দুঃখটি হল— ভারতীয় জনসংঘ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যিনি, সেই ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নিজের ভূমি বাংলায় তাঁর দল কোনওদিনই জনসমর্থন পেল না। ব্যক্তিগতভাবে তিনি জনপ্রিয় ছিলেন। ভোটে জয়ীও হয়েছেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর ভারতীয় জনসংঘ বাংলাতেই সম্পূর্ণ গুরুত্বহীন হয়ে যায়। ১৯৮০ সালে ভারতীয় জনসংঘের নতুন রূপ ভারতীয় জনতা পার্টির জন্ম হওয়ার পরও যত দ্রুত উত্তর ভারতে তারা ছড়িয়ে পড়ল, বাংলায় সেই তুলনায় অগ্রগতি শূন্য। সেই মরা গাঙে জোয়ার এসেছে মোদির হাত ধরে। ক্রমেই এ রাজ্যে বিজেপি হয়ে উঠেছে প্রধান বিরোধী দল। মোদি চাইবেনই যে, তাঁর হাত ধরে বাংলা দখল পর্ব হোক। যা হবে তাঁর সেরা সাফল্য। 
কোনও সন্দেহ নেই যে, ইন্দিরা গান্ধীর পর ভারতের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর নাম নরেন্দ্র মোদি। দল নয়, ইন্দিরার নামে ভোট হতো। কংগ্রেস সভাপতি দেবকান্ত বড়ুয়া ১৯৭৫ সালের জুন  মাসের এক জনসভায় স্লোগান দিয়েছিলেন, ইন্দিরা ইজ ইন্ডিয়া। ইন্ডিয়া ইজ ইন্দিরা। আজ ঠিক সেভাবেই মোদির নামে ভোট হয়। বিজেপি নামটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই মোদির একমাত্র কৃতিত্ব তিনি অন্য দলের কাছে লিডারশিপের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর মতো ক্যারিশমা আর কোনও দলের নেতাদের নে‌ই। সেটাই যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেড়ে নেন এবারের ভোটে, তাহলে মোদির একমাত্র পুঁজিটিও হাতছাড়া হয়ে যাবে। অর্থাৎ জনমোহিনী ম্যাজিক। 
ঠিক এই কারণে দেশের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ একটি রাজ্যকে জয় করা মোদির কাছে জীবনের সেরা চ্যালেঞ্জ— পশ্চিমবঙ্গ। বিজেপি দেশভাগের জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করে। পশ্চিমবঙ্গের জন্মের জন্য শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কৃতিত্ব দাবি করে।  অথচ দেশভাগে সবচেয়ে বেশি আঘাত পাওয়া রাজ্যটি তাদের দখলে আসবে না, এটা মেনে নেওয়া যায় না। সুতরাং বাংলা দখল করতে পারলে ২০২৫ সালে ১০০ বছর পূর্ণ করতে চলা রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের কাছে সেটা হবে জন্মশতবর্ষের প্রাক্কালে সেরা উপহার। আর নরেন্দ্র মোদি হবেন হিন্দুত্ব রাজনীতির সর্বকালের সেরা আইকন। 
নরেন্দ্র মোদির শক্তি কী? তিনি উন্নয়নের স্বপ্ন দেখাতে সিদ্ধহস্ত। কেন্দ্র ও রাজ্যে একই সরকার হলে একটি রাজ্যের বিপুল উন্নয়ন হয় এই প্রচার তিনি করে থাকেন সর্বত্র। বাংলাও ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু বিস্ময়করভাবে দেখা যাচ্ছে, নিজের শক্তিকেই মোদি এবার বাংলার প্রচারে ব্যবহার করছেন না। একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি বাংলায় কী কী প্রকল্প আনবেন অথবা কী ধরনের উন্নয়নের প্ল্যান করেছেন, সেরকম হাজারো রূপরেখা দিতে পারতেন। মানুষ হয়তো সেটা জানতেই উৎসুক। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে দেখা যাচ্ছে,  মোদি সেই পথে বেশি হাঁটছেন না। বরং তাঁর দলের রাজ্য নেতাদের সুরেই ভাইপো হটাও, উম-পুন দুর্নীতি, সিন্ডিকেট ইত্যাদি একেবারেই লোকাল ইস্যুকে নিজের বক্তৃতায় নিয়ে এসে সভার পর সভায় সেগুলিই উচ্চারণ করে চলেছেন। অর্থাৎ একটি বিধানসভা কেন্দ্রের সাধারণ বিজেপি প্রার্থীর ভাষণের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার কনটেন্টের বিশেষ ফারাক থাকছে না। মোদির বক্তব্যে পলিটিক্যাল উচ্চতা সেভাবে এবার কেন পাওয়া যাচ্ছে না, সেটা নিয়ে ইতিমধ্যেই সর্বভারতীয় স্তরেও আলোচনা তুঙ্গে। এটা কি স্ট্র্যাটেজিরই অঙ্গ? জয়ী হলে মোদি তাঁর দলে এবং দেশে এক বিপুল উচ্চতায় পৌঁছে যাবেন। বিরোধী রাজনীতি মহাধাক্কা খাবে। কারণ, মোদিকে সমানে টক্কর দেওয়ার মতো নেতানেত্রী আর থাকবে না। মোদির পথ হবে কণ্টকমুক্ত। আর উল্টোদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ২ মে পরাস্ত হলে মোদির ব্যক্তিগত প্রভাব, রাজনৈতিক উচ্চতা এক ধাক্কায় নেমে আসবে অনেকটা মাটিতে। দল সরকারের মধ্যে তাঁর যে অপরিসীম গ্রহণযোগ্যতা, সেটাই সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খাবে। বাংলার একজন ৬৬ বছরের মহিলার কাছে রাষ্ট্রশক্তির তাবৎ অস্ত্র ব্যবহার করেও মহাক্ষমতাধর নরেন্দ্র মোদির পরাজয় ঘটেছে, এই বার্তাটি এমন উচ্চকিত স্বরে দেশবিদেশে ছড়িয়ে পড়বে যে, আগামীদিনের প্রতিটি নির্বাচনে ঩সেই বার্তার অভিঘাত বহন করতে হবে তাঁকে। আর এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বৃহৎ ক্ষতিটি হল—  ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটে মোদি হয়ে পড়বেন একজন দুর্বল জননেতা। 
সংযুক্ত মোর্চা
একে বলা যেতে পারে বেটার লেট দ্যান নেভার! একঝাঁক নতুন মুখের আগমন সিপিএমের আকর্ষণহীন সংগঠনে আবার হয়তো রক্তসঞ্চার করতে সক্ষম হয়েছে। এই উদ্যোগ আরও আগেই নেওয়া যেত। সমর্থন আদায় নয়,  সিপিএমের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল নিজেদের সম্পর্কে বঙ্গবাসীর বিরক্তি, বীতশ্রদ্ধ ভাবটা কীভাবে কমানো যায় সেই প্রয়াস করা। তার অন্যতম অঙ্গই হল পুরনো মুখ সরিয়ে দিয়ে নতুনদের সামনে নিয়ে আসা এবং নতুন কথা বলা। সিপিএম দেরিতে হলেও সেই উদ্যোগটি কিছুটা নিয়েছে এবার। ফলও পেয়েছে। নতুন প্রজন্মের প্রার্থীরা সুবক্তা। লড়াকু। তাঁরা সেনসিবিল মানুষের কাছে কিছুটা অবশ্যই গুরুত্ব পাচ্ছেন। কিন্তু লক্ষ্য করতে হবে, তাঁরা ঠিক কীভাবে প্রচার করছেন। অর্থাৎ তাঁদের পূর্বসূরিদের মতোই একবগ্গা চেনা কথাগুলোই কি তাঁরা বলছেন? নাকি তাঁদের ভাষ্যে উঠে আসছে নতুন কোনও রাজনীতির সুর? সিপিএম একটি কথা মাঝেমধ্যেই বলে। কংগ্রেসও। সেটি হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তো বিজেপি-কে হাত ধরে বাংলায় এনেছেন। এখন সেই ফল তাঁকে ভোগ করতেই হবে। তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেওয়া যায় যে, মমতাই বিজেপি-কে হাত ধরে বাংলায় এনেছেন, তাহলে কি পাল্টা একটি প্রশ্ন আসে না? সেটি হল, মমতা হাত ধরে নিয়ে এলেন, আর বাংলার মানুষ সেই দলটিকেই গ্রহণ করে নিল? তার আগে থেকেই তো সিপিএম, কংগ্রেস ছিল! বিজেপির পরিবর্তে তাদের কেন বাংলার মানুষ বেছে নিল না? 
সিপিএমের কাছে বেশি উদ্বেগ হল, কেন তারা একের পর এক ভোটে আর এককভাবে লড়াই করতে পারছে না? কেন নানারঙের জোট করতে হচ্ছে? এসব শক্তির লক্ষণ? নাকি দুর্বলতার? ঠিক এরকম এক অবস্থায় সিপিএমের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, নিজেদের সমর্থকদের ভোটটা ধরে রাখা। কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের একমাত্র উদ্দেশ্য হারানো ভোটব্যাঙ্ককে ফিরিয়ে আনা। সেটা কি সম্ভব হবে? যদি ২০১৬ সালে তাদের কাছে থাকা নিজস্ব ভোটব্যাঙ্কের কিয়দংশ আবার সিপিএম ফিরে পায়, তাহলে অবশ্যই এবার ভোটে এক চিত্তাকর্ষক ফল হতে চলেছে। কিন্তু সেখানেই সংশয়। কারণ, কোনও সন্দেহ নেই, এখনও বহু কট্টর সিপিএমের কাছে ‘বিজেপি ঠেকাও’-এর তুলনায় অনেক বেশি মধুর স্লোগান হল, ‘মমতা হটাও’! সিপিএম কি নিজেদের সাহায্য করবে? নাকি বিজেপিকে? এটা অন্যতম বৃহৎ ফ্যাক্টর। 
বাঙালির জয় পরাজয়
বাঙালির সংস্কৃতি, বাঙালির ইতিহাস, বাঙালির রাজনীতি চেতনা, বাঙালির ইন্টেলেকচুয়াল ডিসকোর্স, বাঙালির কালচারাল রুচি ইত্যাদি বাকি ভারতের কাছে চিরকাল এক ঈর্ষার বস্তু। বইমেলা থেকে গ্রুপ থিয়েটার। নোবেল থেকে অস্কার। রেনেসাঁ থেকে বাউল। এক অত্যাশ্চর্য কালচারাল ক্যানভাস এই বাংলা। আজ পর্যন্ত কোনওদিনই ভোটের ইস্যু সরাসরি হিন্দু-মুসলমান হয়নি। জাতপাতের মতো আইডেন্টিটি পলিটিক্স নিয়েও কোনও উচ্চকিত প্রচার হয়নি অতীতের নির্বাচনে। অন্য প্রদেশের তুলনায় প্রায় একটি দ্বীপের মতোই এতকাল রাজনীতি করে এসেছে বাংলা। নিজেদের মতো করে। 
কিন্তু ২০২১ সালে সম্পূর্ণ বদলে যাচ্ছে ভোটের আবহ। মতুয়া, রাজবংশী, হিন্দু, মুসলমান, নমঃশূদ্র, উচ্চবর্ণ, উদ্বাস্তু, ভূমিপুত্র, বাঙালি, অবাঙালি ইত্যাদি প্রচার অনেক বেশি করে সামনে এসেছে এবার। এগুলো কি ভোটের ইস্যু? মনে হয় না। এগুলি আসলে এক সূক্ষ্ম এক্সপেরিমেন্ট। যদি এই পরীক্ষা নিরীক্ষাগুলি এবার ভোটে জয়ী হয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই আগামীদিনে বাংলার রাজনীতির চরিত্র বদলে যাবে আমূল। ভারতের অন্য অংশের সঙ্গে পলিটিক্যাল ইস্যুর দিক থেকে বাংলা আর পৃথক থাকবে না। অনেকটাই সর্বভারতীয় রাজনীতির চেনা সিলেবাসের মধ্যেই ঢুকে পড়বে বাংলা। সর্বভারতীয় ভোটার ও রাজনৈতিক দল স্বস্তির শ্বাস ফেলে অবশেষে বলতে পারবে, যাক, বাংলা আর বাঙালি আলাদাভাবে চিন্তা করে না। ওরাও আমাদের মতো করেই ভা঩বে, ভোট দেয়, আলোচনা করে। ধর্ম ও সংস্কৃতি পালন করে। ভোটে জয়টা বড় কথা নয়, একটি বিশেষ জাতিকে বৃহত্তর এক কালচারাল হেজিমনিতে অন্তর্ভুক্ত করে ফেলতে পারাই সবথেকে বড় সাফল্য।
আগামী ২ মে এই এক্সপেরিমেন্টগুলো কি জয়ী হবে? নাকি ব্যর্থ হবে? এটাই পরীক্ষা এবার বাঙালির কাছে! 
11th  April, 2021
তোমারে সেলাম

 

আগামী শুক্রবার তাঁর প্রয়াণ দিবস। আর ২ মে পূর্ণ হচ্ছে তাঁর জন্ম শতবার্ষিকী। তিনি বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়। তাঁর বহুমুখী প্রতিভার হীরকোজ্জ্বল দ্যুতি বাঙালি মননে চির ভাস্বর। প্রিয় ‘মানিকদা’র জন্মদিনের আগে স্মৃতিচারণা করলেন তাঁর অধিকাংশ ছবির সিনেমাটোগ্রাফার সৌমেন্দু রায়।  বিশদ

18th  April, 2021
সাহিত্যের  সত্যজিৎ

সত্যজিৎ রায় শুধু সিনেমার নন, তিনি সাহিত্যেরও। সিনেমার জন্যই তিনি ভুবনজয়ী, চিনেছে গোটা পৃথিবীর মানুষ। সিনেমার নতুন ভাষা আবিষ্কার  করেছেন তিনি। বিশদ

18th  April, 2021
একশোয় ভিক্টোরিয়া
রজত চক্রবর্তী

কলকাতার ভোর হল আজ সমবেত কীর্তন আর খোল-করতালের শব্দে। উঠোন ঝাঁট দিতে দিতে ঘোমটার ফাঁক দিয়ে দেখে নিল বউ-ঝিয়েরা। কে মারা গেল! দু’হাত কপালে ঠেকিয়ে পেন্নাম ঠোকে। ছেলেরা নিমদাঁতন দাঁতে চিবতে চিবতে দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছে। বিশদ

04th  April, 2021
সত্যধর্মের দোলোৎসব
সুখেন বিশ্বাস

ফাগুনের দোলপূর্ণিমা। গাছে গাছে নতুন পাতা। শাখায় শাখায় শিমুল-পলাশের রোশনাই। ফুলে-ফলে ফাগুন যেন এক নতুন পৃথিবী। দোলের আবিরে একদিকে রঙিন বাংলার আকাশ-বাতাস, অন্যদিকে ডালিমতলা, হিমসাগর আর বাউল-ফকিরদের আখড়া। বিশদ

28th  March, 2021
কুম্ভে অমৃতের সন্ধানে
সমৃদ্ধ দত্ত

 

কাটিহারের মণিহারি ব্লকের কমলা পাসোয়ানের প্রিয় শখ হারিয়ে যাওয়া। এই ১৪ বছর বয়সে সে চারবার হারিয়ে গিয়েছে। প্রতিবারই মেলায়। কখনও কুম্ভে। কখনও শোনপুরে। কী আশ্চর্য! চারবারই আবার ফিরে এসেছে বাবা-মায়ের কাছে। ‘এই প্রথম কুম্ভে এলেন?’ নিরঞ্জনী আখড়ার বাইরের রাস্তায় ভাণ্ডারা হবে। বিশদ

21st  March, 2021
তারকার রাজনীতি
রাহুল চক্রবর্তী 

লাইট। সাউন্ড। ক্যামেরা। অ্যাকশন। শব্দগুলো বদলে গিয়ে হয়েছে— জয় বাংলা। জয় শ্রীরাম। ইনক্লাব জিন্দাবাদ। মোদ্দা কথা— সুসজ্জিত চেহারার ছোট কিংবা বড়পর্দার চেনা মুখগুলো আজ অচেনা গণ্ডিতে ধরা দিচ্ছেন। বিশদ

14th  March, 2021
রাস্তায় পাতা হয়েছে
রাখালদাসের ভাঙা বাড়ির ইট 
বিশ্বজিৎ মাইতি

সিন্ধু নদের শুকনো গর্ভের মাটি ও ভাঙা ইট সরিয়ে ইতিহাসের খোঁজ করছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। একের পর এক ইট সরিয়ে ভারতবর্ষের সুপ্রাচীন সভ্যতার চিহ্ন মহেঞ্জোদারো নগরী তিনি পৃথিবীর বুকে তুলে ধরেছিলেন।  
বিশদ

07th  March, 2021
সভ্যতার ঊষাকাল
হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো
কৃষ্ণেন্দু দাস

সালটা ১৯২১। ঠিক একশো বছর আগে অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের হরপ্পা অঞ্চলে শুরু হল প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ। খোঁজ পাওয়া গেল কয়েক হাজার বছর প্রাচীন এক নগর সভ্যতার। পরের বছর খনন কাজ শুরু হয় সিন্ধুপ্রদেশের মহেঞ্জোদারোতে। দেশভাগের পর এ দু’টি অঞ্চল এখন পাকিস্তানের অন্তর্গত।
বিশদ

07th  March, 2021
উপেক্ষিত বিজ্ঞানী 

‘আত্মঘাতী’ বাঙালির ড্রয়িংরুমে তাঁরা কেবলই ছবি। ব্রাত্য। বিস্মৃত। উপেক্ষিত। কেউ নোবেল সিম্পোসিয়ামে বক্তব্য রাখার ডাক পেয়েছেন, আবার কারওর গবেষণার খাতা হাতিয়ে নোবেল পকেটে পুরেছেন অন্য কেউ। গোটা পৃথিবী তাঁদের অবদানে ঋদ্ধ-সমৃদ্ধ, অথচ নিজভূমে তাঁরাই রয়ে গিয়েছেন বিস্মৃতির অন্ধকারে। আজ জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের আত্মভরী প্রত্যুষে তেমনই চার বরেণ্য বাঙালি বিজ্ঞানীর বেদনা-বিধুর কাহিনি শোনাচ্ছেন মৃন্ময় চন্দ। 
বিশদ

28th  February, 2021
বাঙালির বিজয় দিবস 
পবিত্র সরকার

যদি কেউ জিজ্ঞেস করেন, বিংশ শতাব্দীতে এই দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে সবচেয়ে বড় ঘটনা কী ঘটেছিল, তা হলে অনেকেই হয়তো বলবেন, ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা বা দেশভাগ। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের একটা ভালো (!) দিক এই যে, তা সাম্রাজ্যবাদের মৃত্যুঘণ্টা বাজাল, আর তারই ফলে, ভারতীয় উপমহাদেশ তার বহুবাঞ্ছিত ‘স্বাধীনতা’ লাভ করল।  
বিশদ

21st  February, 2021
কচিকাঁচাদের ভ্যালেন্টাইন
শান্তনু দত্তগুপ্ত

প্রেমের প্রকাশ নানা রকম। বাঙালির কৈশোরের প্রথম প্রেম অবশ্যই নন্টে ফন্টে, বাঁটুল দি গ্রেট বা হাঁদা ভোঁদা। এগুলির স্রষ্টা যিনি, তিনিও তো এক অর্থে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনই বটে। বঙ্গের কিশোর-কিশোরীদের প্রথম ভালোবাসাকে আজও তিনি বাঁচিয়ে রেখেছেন নিজের সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে। আজ ভালোবাসার দিবসে পদ্মশ্রী নারায়ণ দেবনাথের অমর সৃষ্টিকে ফিরে দেখার চেষ্টা। বিশদ

14th  February, 2021
নেতাজির গুপ্তবাহিনী
শহিদের অজানা আখ্যান
অমিত মিত্র

উত্তাল বঙ্গোপসাগর। ঢেউয়ের মাথা চিরে এগিয়ে চলেছে টর্পেডোবাহী একটি জাপানি ডুবোজাহাজ।  আচমকা তা ঝাঁপ দিল সমুদ্রের অতলে। জলের নীচে অদৃশ্য হতে না হতেই বন্ধ করা হল ইঞ্জিনও। প্রমাদ গুনলেন ভিতরের কেবিনে বসা আজাদ-হিন্দ-ফৌজের গুপ্তবাহিনীর চার অফিসার— তবে কি কোনও ব্রিটিশ ডেস্ট্রয়ারের নজরে এসেছে সাবমেরিনটি? বিশদ

07th  February, 2021
শতবর্ষে বিশ্বভারতী
সবুজকলি সেন

‘বিশ্বভারতী’ কোনও পূর্বপরিকল্পিত বিশ্ববিদ্যালয় নয়। ‘বিশ্বভারতী’ ব্রহ্মবিদ্যালয় নামের একটি ক্ষুদ্র বীজের বটবৃক্ষে পরিণত রূপ। ১৯০১ সালে (৮ পৌষ) পাঁচজন ছাত্রকে নিয়ে যে আশ্রম বিদ্যালয় যাত্রা করেছিল ভারতবর্ষের প্রাচীন তপোবনের আদর্শে—১৯২১-এ তারই পরিণত রূপ ‘বিশ্বভারতী’। বিশদ

31st  January, 2021
নেতাজি সুভাষের সেবাশ্রম
জয়ন্ত চৌধুরী

নির্জন দুপুর। বঙ্গভূমি থেকে নির্বাসিত কারারুদ্ধ সুভাষ। বার্মার মান্দালয় জেল তাঁর কাছে তখন জীবন উপলব্ধির একান্ত সাধনপীঠ। বহু ত্যাগ ব্রতী দেশপ্রেমিক কারাজীবন অতিবাহিত করেছেন বার্মার কারাগারে। আর এই জেলে বসেই একদিন পেলেন তাঁর রাজনৈতিক সমর্পণের কাণ্ডারী দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের প্রয়াণবার্তা। বিশদ

24th  January, 2021
একনজরে
শনিবার বিকেলে রানিগঞ্জ ব্লকের তিরাট পঞ্চায়েতে প্রচার ছিল সায়নী ঘোষের। পূর্ব কর্মসূচি মতোই তিরাট পঞ্চায়েতের সবচেয়ে বড় বাজার চেলোদে এসে তাঁর গাড়ি থামে। স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে ...

ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের প্রচারের শেষ দিনে আজ, সোমবার উত্তর দিনাজপুর জেলায় তিনটি সভা করছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ...

কাজ পাগল কাজল! শ্যামসুন্দর-নিত্যানন্দের পুণ্যভূমিতে কাজল সিনহাকে চিনতে ‘রাজনৈতিক পরিচয়’ লাগে না। কর্মেই তিনি বেশি পরিচিত। তাঁর অতিবড় নিন্দুকেরাও নাকি এমন কথা বলে থাকেন!  ...

রবিবার সকাল থেকে ভোট-পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে চাকদহ থানার রাউতাড়ী পঞ্চায়েতের উত্তর এনায়েতপুরের মণ্ডলপাড়া। বাড়ির সামনে থেকে দেহ উদ্ধার হয় এক বিজেপি কর্মীর। মৃতের নাম দিলীপ কীর্তনীয়া (৩১)।   ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৮২: বিবর্তনবাদের স্রষ্টা চার্লস ডারউইনের মৃত্যু
১৯৫৫: শিকারি ও লেখক জিম করবেটের মৃত্যু
১৯৫৭: শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির জন্ম
১৯৫৮: সাহিত্যিক অনুরূপা দেবীর মৃত্যু
১৯৮৭: রুশ টেনিস খেলোয়াড় মারিয়া শারাপোভার জন্ম  



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭৩.৬৯ টাকা ৭৫.৪১ টাকা
পাউন্ড ১০১.৩৬ টাকা ১০৪.৯০ টাকা
ইউরো ৮৭.৭৬ টাকা ৯০.৯৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
18th  April, 2021
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮,০৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৫,৬০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬,৩০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৯,২০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৯,৩০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
18th  April, 2021

দিন পঞ্জিকা

৫ বৈশাখ ১৪২৮, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১। সপ্তমী ৪৬/৫২ রাত্রি ১২/২। পুনর্বসু নক্ষত্র অহোরাত্র। সূর্যোদয় ৫/১৭/৭, সূর্যাস্ত ৫/৫৪/৩৫। অমৃতযোগ দিবা ৬/৫৯ মধ্যে পুনঃ ১০/২০ গতে ১২/৫২ মধ্যে। রাত্রি ৬/৪০ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ১১/১২ গতে ২/১৬ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/২৩ গতে ৫/৪ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫১ গতে ৮/২৬ মধ্যে পুনঃ ২/৪৫ গতে ৪/২০ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/১০ গতে ১১/৩৫ মধ্যে।  
৫ বৈশাখ ১৪২৮, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১। সপ্তমী রাত্রি ৬/৫৭। পুনর্বসু নক্ষত্র রাত্রি ২/১৬। সূর্যোদয় ৫/১৭, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৬/৫৮ মধ্যে ও ১০/১৫ গতে ১২/৫১ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/৪৬ গতে ৯/০ মধ্যে ও ১১/১১ গতে ২/৭ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/২৭ গতে ৫/১০ মধ্যে। কালবেলা ৬/৫২ গতে ৮/২৭ মধ্যে ও ২/৪৬ গতে ৪/২১ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/১২ গতে ১১/৩৭ মধ্যে।  
৬ রমজান। 

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: রাজস্থান রয়্যালস-এর বিরুদ্ধে ৪৫ রানে জিতল চেন্নাই সুপার কিংস 

11:29:00 PM

আইপিএল: রাজস্থান ৯৭/৭(১৫ ওভার)

11:00:41 PM

আইপিএল: রাজস্থান ৮১/২(১০ ওভার)

10:32:46 PM

আইপিএল: রাজস্থানকে ১৮৯ রানের টার্গেট দিল চেন্নাই

09:37:20 PM

আইপিএল: চেন্নাই ১৩৩/৫ (১৬ ওভার) 

09:02:32 PM

আইপিএল: চেন্নাই ৯৮/৩ (১১ ওভার) 

08:34:07 PM