Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

কুম্ভে অমৃতের সন্ধানে
সমৃদ্ধ দত্ত

 

কাটিহারের মণিহারি ব্লকের কমলা পাসোয়ানের প্রিয় শখ হারিয়ে যাওয়া। এই ১৪ বছর বয়সে সে চারবার হারিয়ে গিয়েছে। প্রতিবারই মেলায়। কখনও কুম্ভে। কখনও শোনপুরে। কী আশ্চর্য! চারবারই আবার ফিরে এসেছে বাবা-মায়ের কাছে। ‘এই প্রথম কুম্ভে এলেন?’ নিরঞ্জনী আখড়ার বাইরের রাস্তায় ভাণ্ডারা হবে। পাওয়া যাবে দুপুরের প্রসাদ। অপেক্ষায় রয়েছি আমরা সকলে। আর দেরি হলে বড় ভিড় হয়ে যাবে। তাই একটু আগে এসে লাইনে দাঁড়ানোই ভালো। সেই লাইনেই, বিষাণ পাসোয়ান প্রশ্ন শুনে বললেন, ‘না না, প্রথমবার গিয়েছিলাম সেই প্রয়াগে। ১৩ সালে মনে হয় তাই না?’ লাল রঙের পাথর বসানো নতুন কেনা মেটাল হার হাতে নিয়ে এতক্ষণ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মুগ্ধ ছিল কমলা। এবার মুখ তুলে সে বলল, ‘সেবারই তো প্রথম হারিয়ে গেলাম, তাই না বাপু?’ বিষাণের চোখে মায়ার হাসি। বললেন, ‘হ্যাঁ।’

হারিয়ে গেল বোঝা গেল। কিন্তু প্রথম মানে কী? জানতে চাইলাম। মাথায় অনেকটাই ঘোমটা টানা বিষাণের স্ত্রী আর কমলার মায়ের। ওই ঘোমটার আড়ালেও যে হাসছেন তা বেশ বোঝা গেল। বিষাণ বললেন, ‘আমার এই মেয়ের অভ্যাস হল, তীর্থ করতে এসে একবার করে হারিয়ে যাওয়া, বুঝলেন। ওই প্রয়াগে কুম্ভে সেবার হারিয়ে গেল বাচ্চা বয়সে। সঙ্গমের কাছে একটা কেল্লা আছে না! ওখান থেকে হঠাৎ দেখি নেই কমলা। কোথাও পাই না।  ভাগ্যিস আমাদের গ্রামের ডাগদরসাব একটা কথা বলে দিয়েছিলেন সেবার। যেই হারাবে, সে যেন রাস্তায় দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি না করে। সোজা  মেলা অফিসে গিয়ে বলবে। সব জায়গায় মেলা অফিস থাকে। তো সেকথা কমলাকেও আমরা শিখিয়ে দিয়েছিলাম। ওই বাচ্চা মেয়ে। কিন্তু ঠিক মনে রেখে মেলা অফিসে চলে যায়। তবে মেলা অফিস তো অনেক! কোনটায় গিয়েছে বুঝব কেমন করে। টাইম লাগলেও ওদের নিজেদের মধ্যে ফোনে কথা বলে বলে আমাকে মেয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিল ঠিক। আর তারপর নাসিকে আবার সেই এক ঘটনা। তপোবনে গোদাবরীতে স্নান করার পরই শূর্পণখা মাঈয়ের মন্দিরের সামনে সে কী ভিড়। ব্যস! মন্দিরে আমরা গেলাম। আর কমলা গেল পিছনেই রামলীলার প্যান্ডেলে। আর হারিয়ে গেল। উজ্জয়িনীতেও তাই। সেবার শোনপুরের মেলায় ও মামার সঙ্গে গিয়েছিল। আমরা যাইনি। সেখান থেকেও শেষ পর্যন্ত হারাল! তো এ মেয়ের হারিয়ে যাওয়া যে ওর নিজের শখ ছাড়া আর কী! এখন এই তেরো চোদ্দো বছরের মেয়েকে হাত ধরে রাখব নাকি সারাক্ষণ। ভয় হয় এবারও যদি হারায়।’ ফিক ফিক করে হাসতে হাসতে কমলা বলল, ‘আবার ফিরে আসব। কোথায় যাব আর?’ 
দু’দিকে লাইন করে বসে যাও সবাই। ভাণ্ডারা শুরু হয়ে গিয়েছে। চিৎকার কানে এল। ‘এই ভাণ্ডারাই সবথেকে ভালো লাগে। তাই ঘুরে ফিরে কুম্ভে আসি।’ একটু অবাক হয়ে তাকানোয় বিষাণ বললেন, ‘কী ভাবছেন ফ্রি খাওয়ার জন্য? না না। অতটাও গরিব না। কোনওমতে চাষ আর প্লাস্টিকের ব্যাগ কারখানার কাজে চলে যায় আমাদের। এই যে ভাণ্ডারায় যার তার পাশে বসে খাওয়া যায়। এই যে আমার জাত নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই, পাশের লোকটা কোন জাতের তাও জানি না। তাই সংকোচ হয় না। এই যে অন্যকে খাবার খা‌ই঩য়ে মানুষ আনন্দ পাচ্ছে এসব দেখতেই আসা। আর স্নান।’ বলতে বলতে কমলাকে পাশে বসিয়ে বিষাণ বলল, ‘আগে উঠবি না। একসঙ্গে...।’ কমলা এদিক ওদিক চাইছে। তিনদিন হয়ে গেল এসেছে। এখনও হারানো হল না তার! এটাই ভাবছে নাকি! তারপর কুমড়ো আর ফুলকপির গরম সব্জির পাশে মোটা চালের ভাত এসে পড়ল শালপাতায়। চকিতে মাইকে বেজে উঠল মন্ত্র, ওম অঘোরায় নমোঃ...বামদেবায় নমোঃ...ঈশানায় নমোঃ। এবার সকলে প্রণাম করে প্রসাদ গ্রহণ করুন, মাইক বলল। তারপর সারিবদ্ধ হয়ে একটি মিনি ভারত আমরা ডুব দিলাম অন্নতীর্থে। একরাশ বাতাস নিয়ে পাশে এসে বসেছে বসন্ত। 
গতকাল বিকেলেই দেখা হয়েছিল মনসা পাহাড়ের নীচে। অনিমা হালদারদের সঙ্গে। তখন তো বেশ হাসিখুশি ছিলেন। আজ কী হল? আকুল হয়ে কাঁদছেন অনিতা। মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থেকে ৭০ জনের দলটি এসেছে কুম্ভমেলায়। হরিদ্বারে ভিড় বাড়ছে। বাড়ছে কান্নার সংখ্যা। কেউ হারিয়েছে ব্যাগ। কারও খোওয়া গিয়েছে টাকা। অনিমা হালদারের ব্যাগে ১ হাজার ২৬০ টাকা ছিল। কতদিনের শখ হরিদ্বার থেকে ট্রান্সপ্যারেন্ট  প্যাকেটে কম্বল কিনবেন। একটি নিজের জন্য। আর একটি ছেলেবউয়ের জন্য। বাসে করে বেরিয়ে এর আগে আগ্রা, মথুরা বৃন্দাবন সব ঘোরা হয়েছে। এবার কুম্ভে স্নান করা। শাহি স্নান। সেই কম্বল নিতে বিষ্ণুঘাটের এই মার্কেটে সকলে ভিড় করেছেন। আর কম্বল নেওয়ার পর টাকা দিতে গিয়ে হঠাৎ অনিমা দেখলেন টাকা নেই। অতি সূক্ষ্মভাবে তার ব্যাগের মধ্যে থাকা টাকার থলিটা উধাও। তাই কাঁদছেন তিনি। তাঁকে ঘিরে ভিড়। সকলেই সান্ত্বনা দিচ্ছে বটে। কিন্তু এই নিম্নবিত্তের দলটি তো জানে কত কষ্ট করে জমিয়ে জমিয়ে আসতে হয়েছে তাদের এই তীর্থে। হঠাৎ মাধাই চক্রবর্তী বললেন, ‘আমরা সকলে কিছু কিছু করে দিলেই ঩তো হয়ে যায়।’ সকলে যেন হাঁফ ছাড়ে এই সরল সমাধানে। অনিমার কান্নায় হাসির প্রলেপ পড়ছে। তবু তার লজ্জা লাগে। চোখ মুছতে মুছতে বললেন, আমি বাড়ি গিয়েই দিয়ে দেব। সকলকে। আরে না না। আমরা সবাই কম্বল কিনে নিয়ে ফিরব। তুমি কিনবে না, এমন হয় নাকি! তারপর হাতে হাতে কম্বল চলল ধর্মশালায়। হাসিকান্নার সাক্ষী হয়ে। অনিমা হালদার একটু আগেই কাঁদছিলেন। এখন হাসছেন। ওই যে দূরে দাঁড়িয়ে এই সাংসারিক মোহমায়া দেখতে দেখতে হেসে বিষ্ণুঘাটের দিকে এগিয়ে গেলেন চৈত্রসংক্রান্তি। তিনি এসেছেন হরিদ্বারে। তবে ক্যালেন্ডারে এখনও আসেননি। পৌঁছতে হবে হর কী পৌড়ি। সেখানে আপাতত গোপনে কোথাও বিশ্রাম নিয়ে তারপর প্রকট হবেন। আগামী মাসে তো তাঁকে কেন্দ্র করেই শাহি স্নান! আগে এসে জায়গা না নিলে যদি থাকার জায়গা না পাওয়া যায়! তাই চৈত্রসংক্রান্তি লুকিয়ে এসে গিয়েছেন ছদ্মবেশে হরিদ্বারে। তাই কি মধ্য-মার্চেই আচমকা তীব্র সূর্য তাপ মিশে গেল হরিদ্বারের বাতাসে? এতটা গরম তো এখনই পড়ে না! মেলা জমছে। করোনাও বাড়ছে দেশে। ঘামে ভিজছে মাস্ক। অবিরত রাস্তা আর কুম্ভের হাতের তালু ভিজছে স্যানিটাইজারে। এই প্রথম কুম্ভে অমৃত আর বিষ হাঁটছে একই রাস্তায়। কে জিতবে? 
এরকম ঝকঝকে হরিদ্বার স্টেশন শেষ কবে দেখা গিয়েছে? আলোকমালায় ভেসে যাচ্ছে। প্ল্যাটফর্ম মিনিটে মিনিটে ধোয়া হচ্ছে ডিসইনফেকট্যান্ট দিয়ে।  স্টেশন থেকে বাইরে আসার পর ভিড়ে ঠাসা রাস্তায় যানবাহনের ভরসা করার থেকে হাঁটাই শ্রেষ্ঠ পথ। কুম্ভ মানেই হল এক অন্তহীন পদযাত্রা।  হোটেল, ধর্মশালা, গঙ্গা, আশ্রম, চণ্ডীপাহাড়ের পাদদেশ, নীলধারার তীরভূমি যে কোনও গন্তব্যে দেখা যাচ্ছে হাঁটার মিছিল। গঙ্গোত্রী থেকে নেমে এসে হরিদ্বারে প্রবেশ করার পরই মা গঙ্গা দুই ভাগে বিভাজিত। একটি চণ্ডীপাহাড়ের দিকে। অন্যটির গতি সামান্য রুদ্ধ করা হয়েছে স্লুইস গেট দিয়ে। তারপর ভীমগোড়ার কাছে ব্রহ্মকুণ্ড। এই হল ব্রহ্মার তপস্থল। কুণ্ডের দুই তীরেই বাঁধানো ঘাট। পশ্চিমে মা গঙ্গার দু’টি মন্দির। রয়েছে ভগীরথেরও মন্দির। দিনভর পুজোপাঠ চলছে। ঘাটে ঘাটে শিকল লাগানো। পুণ্যার্থীরা সেই শিকল ধরেই তো স্নান করেন।
সচরাচর মকরসংক্রান্তি থেকেই শুরু হয়ে যায় মেলা। সব হিসেব, সব রীতি, সব প্রথাকে একজনই ভেঙে দিয়েছে। তার নাম করোনা। জানুয়ারি তো নয়ই। ঠিক হয়েছিল মার্চ থেকে হবে মেলা। ১১ তারিখের প্রথম শাহি স্নানকে কেন্দ্র করে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তও বদল হয়ে গেল। স্থির হয়েছে, পয়লা এপ্রিল থেকে ২৭ এপ্রিল শেষ শাহি স্নান পর্যন্ত শুধু এই একমাসই মেলা চলবে। কিন্তু তাই বলে কি শিবরাত্রির প্রথম শাহি স্নানকে উপেক্ষা করতে পারে কেউ? অতএব অফিসিয়ালি মেলা শুরু হোক আর না হোক, প্রথম শাহি স্নানের জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষের আগমন শুরু হয়ে গেল মার্চেই। প্রথমে ঠিক হল করোনার পরীক্ষা রিপোর্ট, মেডিক্যাল চেকআপ, পরিচয়পত্র সব ৭২ ঘণ্টা আগে কুম্ভমেলার ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে। তারপর দেওয়া হবে এন্ট্রি পাস। কিন্তু করোনাকে পিছু হটতে হয়েছে। হরিদ্বারে সর্বত্র শোনা যাচ্ছে একটাই জল্পনা। এই অতিরিক্ত কড়াকড়ির জন্যই নাকি সরে যেতে হল খোদ মুখ্যমন্ত্রীকেই। কুম্ভমেলার মধ্যেই তাঁকে সরিয়ে নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে আনা হয়েছে। 
কুম্ভমেলা মানেই হল দশনামী সন্ন্যাসী সম্প্রদায়ের রমরমা। তাঁদের প্রধান প্রতিষ্ঠান তিনটি। সবথেকে প্রভাবশালী আর শক্তিশালী। নির্বাণী, নিরঞ্জনী আর জুনা আখড়া। মায়াদেবী মন্দিরের লাগোয়া জুনা আখড়ার সামনের শামিয়ানার নীচে সুদামা যোশী দীর্ঘক্ষণ জপ করছেন। এখন রাত সাড়ে ১০টা। অবিশ্রান্ত ভজন, মন্ত্র আর আলোয় ভেসে যাচ্ছে চরাচর। যখন চোখ খুললেন তখন বেশ ঘোর লাগা। ‘কোথা থেকে আসছেন?’ জানতে চাইলেন। যেন নিজেকে স্বাভাবিক করতেই। ‘এবার একটু ভিড় কম, তাই না?’ প্রশ্ন শুনে হাসলেন। বললেন, ‘সকলেই তো আসছে আর চলেও যাচ্ছে। এলে তো চ঩লে যেতেই হয় তাই না! ভদোদরার সুদামা যোশীর এই নিয়ে ৬টি কুম্ভ হচ্ছে। ভাবছেন ফিলজফি শোনাচ্ছি আপনাকে পেয়ে?’ হেসে বললাম, ‘না, ঠিকই তো বলেছেন।’ একটু উদাস হয়ে বললেন, ‘লক্ষ করেছেন, এই জীবন শুধু চলে যাওয়ার সমষ্টি। এখানে ভক্ত আসে, ট্যুরিস্ট আসে কিন্তু সবাই চলে যায়। টাকা আসে জীবনে। চলেও যায়। আনন্দ আসে। চলেও যায়। সঙ্গী আসে। চলেও যায়। বন্ধু, স্বজন, সুখ, সম্পদ সবই তো চলে যায় দেখছি। কিন্তু একটা জিনিস যায় না। সে থেকে যায়। কী বলুন তো?’ উৎসুক হয়ে তাকানোয় সুদামা যোশী বললেন, ‘দুঃখ! গরিব অথবা বড়লোক, যুবক অথবা বৃদ্ধ, নারী কিংবা পুরুষ, উঁচু জাত অথবা নিচু জাত, সকলের বুকে অন্তত একটি-দু’টি করে দুঃখ থেকে যায়। একটি দুঃখ চলে গিয়ে আর একটি দুঃখের জায়গা ছেড়ে যায়। আপনার কোনও দুঃখ নেই?’ প্রশ্ন শুনে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য হাসলাম। পাল্টা হেসে বললেন, ‘তার মানে আছে। আমি এই যে এতবার কুম্ভে কুম্ভে ঘুরে বেড়াই, আসলে কিন্তু খুঁজে বেড়াই একজন দুঃখহীন মানুষকে। এই সন্ধানের শেষ আছে? মনে হয় নেই। সুখ নয় বুঝলেন। মানুষের চালিকাশক্তি আসলে দুঃখই।’ সুদামা যোশী চোখ বন্ধ করলেন। ঠোঁট নড়ছে। হয়তো আবার জপে ডুবে গেলেন। একাকী থাকতে দিয়ে উঠে এলাম সন্তর্পণে। তাঁকে ঘিরে রয়েছে আলো আঁধারি ধুলো আর আশা আকাঙ্ক্ষা মেশা বাতাস! 
ভোলাগিরি আশ্রম পেরিয়ে সোজা যে রাস্তাটা এগিয়ে চলেছে মোহন্ত রমতা গিরিরাজ মহারাজের আখড়ায়, তার শেষ প্রান্তে এসে জানতে পারলাম অভিনেতা রজনীকান্তের শক্তি। তামিল জনতাকে মোহিত করে রেখে দেওয়া এই সুপারস্টারের মহিমা যে সত্যিই কতটা লার্জার-দ্যান-লাইফ সেটা জানতে ওই ভিড়ের মধ্যে ঢুকতে হবে। চোস্ত ইংরেজিতে সারা শরীরে ভস্ম আর রুদ্রাক্ষ নিয়ে সন্ন্যাসী সুন্দরম স্বামী এক বিদেশিনীকে বোঝাচ্ছিলেন ভারতীয় যোগের মাহাত্ম্য। কুম্ভে স্নান করলে কী হয়? জানতে চাইছেন বিদেশিনী। সুন্দরম স্বামীর কথায়, ‘একটি করে ডুব একটি করে জন্মের পাপোদ্ধার।’  কুম্ভ মাহাত্ম্য বোঝাতে বলছেন, ‘দুর্বাসার শাপে স্বর্গচ্যুতা দেবী লক্ষ্মীকে আবার স্বস্থানে ফিরিয়ে আনার জন্য ক্ষীরোদসাগর মন্থন করতে প্রয়াসী হলেন...’ ক্ষীরোদসাগরের অর্থ কিছুতেই বুঝতে পারছেন না বিদেশিনী। বলছেন, ‘হোয়াটস দ্যাট?’ অন্য সমুদ্রের সঙ্গে পার্থক্যই বা কী? বিপদ আরও বাড়ছে তিনি নোটবুক বের করায়। সুন্দরম স্বামী যখন বলছেন, ঐরাবত হস্তী, উচ্চৈঃশ্রবা অশ্ব, পারিজাত পুষ্প, অপ্সরা রম্ভা, দেবী মহালক্ষ্মী... এরকম চতুর্দশ দিব্যবস্তু উঠে এল সমুদ্রমন্থনে এবং সবশেষে ধন্বন্তরি অমৃত নিয়ে, সেই নোট নিতে গলদঘর্ম বিদেশিনী বলছেন, ‘উচ্চারণগুলো আর স্পেলিং কী হবে কিছুতেই বুঝতে পারছি না। আমার পিএইচডি থিসিস এই ফিল্ড নোটের সঙ্গে যুক্ত। তাই ভুল নাম হয়ে গেলে বিপদে পড়ব।’ সুন্দরম স্বামী বললেন, ‘কোনও ভয় নেই। নিশ্চিন্তে সব লিখে রাখো। ঩আমার শিষ্য কারা জানো? সব বড় বড় লোক। সকলে আমার সঙ্গে ছবি তোলে? আমার ছবি এইসব বড় মানুষরা মাথার কাছে রাখে।’ সুন্দরম স্বামী প্রমাণ দিতে আবার ঝোলায় হাত দিলেন। একটু খুঁজে নিয়ে এলেন একটি ছবি। রজনীকান্ত দাঁড়িয়ে আছেন সুন্দরম স্বামীর পাশে।  ভক্ত আর শিষ্যরা তাঁদের গুরুদেবের ছবি সঙ্গে নিয়ে ঘোরেন। এ তো দেখা যাচ্ছে স্বয়ং গুরুই ভক্তের ছবি সঙ্গে রাখছেন স্ট্যাটাস বৃদ্ধির জন্য? থালাইভার জয়! 
হর কী পৌড়ি থেকে বেরিয়ে এসে ব্রিজের নীচে বেরিয়ে সরু গলির মধ্যে তুলসীদাসের হাভেলির সামনে এত ভিড় কেন? লাইন পড়েছে। ধুতি ফতুয়া পরা লাইনের শেষতম ব্যক্তিটি বললেন, ‘আমার সঙ্গে দাঁড়িয়ে যান বাবুজি।’ ‘এখানে কী দেওয়া হচ্ছে? এত লাইন?’ বললেন, ‘কুশ নেওয়ার লাইন।’ কুশের কাঠি দিয়ে তৈরি আংটি হাতে নিয়ে স্নান করতে হয় কুম্ভে। একমাত্র কুশই পারে অমৃতকে ধারণ করতে। লাইন বাড়ছে। তবে অপেক্ষার অধীরতা নেই। সকলেই শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে। যারাই হাতে কুশ নিয়ে বেরচ্ছে মুখে স্বর্গীয় সন্তোষ। যেন অমৃতলাভ হয়েই গিয়েছে। সীতারা সাওয়ান্ত লাতুর থেকে এসেছেন কেন? কেন তিনি একটু কুশ পাওয়ার জন্য এতক্ষণ অপেক্ষা করছেন? মেজমেয়ে মাধুর জন্য। তিন সন্তানের মধ্যে এই মেয়েটির ভাগ্য প্রথম থেকেই খারাপ। স্বামী তাকে বাপের বাড়িতে ফেলে রেখেছে। কেন? কারণ, বিয়ের পর থেকেই নাকি স্বামীর একটির পর এক ব্যবসা আর পেশা ধাক্কা খেয়েছে। সংসারে আয় কমেছে। মাধু সন্তানবতী হওয়ার পরই শ্বশুরের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ এই মেয়ে অলক্ষ্মী। এ মেয়ে সর্বনাশ করবে ঘরের। তাই তাঁকে রেখে এলেন বাপের বাড়ি। সীতারা সাওয়ান্ত মাধুর ভাগ্য ফেরাতে লাতুরের ধনদেওয়া গ্রাম থেকে এসেছেন কুম্ভে। মাধুকে নিয়ে। শুধু তো স্নান করলে হবে না। অমৃত সঙ্গে যেন থাকে। তাহলেই তো ভাগ্যদেবী প্রসন্ন হবেন। তাই দরকার কুশের আংটি। প্রতিটি অন্ধবিশ্বাসকে কুসংস্কার আখ্যা দেওয়ার সময় আমরা দেখতে পাই না তার আড়ালে থাকা বেদনা আর আর্তিকে। এই কুম্ভস্নানই তো শেষ ভরসা সীতারা দেবী আর মাধুর। এই বিশ্বাসকে ভাঙার চেষ্টা করাই কি প্রকৃত পাপ নয়? থাকুন না সীতারা দেবীরা এই ভরসাটুকু নিয়ে!
কুম্ভমেলা মানে তো ভিড়। অথচ ভিড় এড়ানোর মন্ত্রোচ্চারণ চলছে সর্বক্ষণ মাইকে মাইকে। যে কুম্ভের স্বাক্ষর হল, ওম জয় জগদীশ্বর, ওম ভূর ভুবঃ স্বহা অথবা গঙ্গা মাঈয়ার নিরন্তর গানের আবহ, সেখানে এবার আকাশ বাতাসে ভেসে বেড়ানো সুরের পেটেন্ট নিয়েছে পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমে অবিরত সতর্কবার্তা। মাস্ক পরুন..,দুই গজ দূরে থাকুন...স্যানিটাইজার রাখুন সঙ্গে...। এসব কুম্ভে কীভাবে সম্ভব? আর এই গরিব গুরবো মানুষগুলো এসব সতর্কতা বোঝে নাকি? এদের জন্যই তো ছড়াচ্ছে করোনা! শহুরে উন্নাসিকতার এই তাচ্ছিল্যকে উদাসীনভাবে উপেক্ষা করছে গ্রামীণ ভারত। কারণ  কুম্ভমেলায় দেখা যাচ্ছে, নিরন্ন, নিরক্ষর, প্রান্তিক মানুষের মুখে কিন্তু যতটা সম্ভব মাস্ক রয়েছে। অথবা মুখে আঁচল চাপা। কিংবা গামছা। সকলেই পরেছে এমন নয়। কিন্তু চেষ্টা করছেন তাঁরা।  কিন্তু স্নান করা কীভাবে আটকানো যাবে? কেন আটকাতে হবে? তাহলে আর কুম্ভের আয়োজন করা কেন? প্রশ্ন আগত ভক্তদের। 
শিবরাত্রির শাহি স্নান থেকে শুরু। তারপরও কিন্তু জনসমাগম কমছে না।  প্রতিদিনই অবগাহন চলছে ঘাটে ঘাটে। সব আতঙ্ককে হারিয়ে। কনখল থেকে গণেশ ঘাট। হর কী পৌড়ি থেকে নীলধারার পবিত্র স্রোত। ওই যে চলেছে মহামণ্ডলেশ্বর, নির্মলা আখড়া। এসেছে নির্মোহী আর দিগম্বর। স্নানের মিছিলে চলেছে কোটিপতির পাশে গরিব কৃষক। এসেছে শ্রীচাঁদ, চলেছে নানকপন্থী, উদাসী। বৈষ্ণব-রামাইয়াৎ সাধু হাত বাড়িয়ে ধরে ফেললেন, সুলতানগঞ্জ থেকে আসা লকমা প্রসাদের পা পিছলে পড়ে যাওয়ার মুহূর্তকে। আভূমি প্রণাম করে লকমা প্রসাদ বুঝে গেল, এই হাতের বরাভয় তার সঙ্গে রয়ে গেল আজীবন। অদৃশ্য রক্ষাকবচ। 
অবশেষে প্রথম শাহি স্নানের তিন রাত্রি পর গনগনে দুপুরে কনখলের রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সাবধানে স্ত্রীকে অটোয় তুলে রঘুবীর দাসানা অটোচালককে বলল, সাবধানে চালিও ভাই! যুবক রঘুবীরের তরুণী স্ত্রীর কোলে সদ্যোজাত শিশু। সদ্য হওয়া পিতামাতার মুখেও তাই স্বর্গীয় মায়া স্পষ্ট। রোদ পড়ছে সন্তানের মুখে। রঘুবীর গামছা দিয়ে আড়াল করল! করোনার বিষ এবং কুম্ভের অমৃতের সন্ধিক্ষণে অবিশ্রান্ত কোলাহলের মধ্যেও রঘুবীর আর তাঁর স্ত্রীর মুখে পরম প্রাপ্তির ছায়া। এই পুরনো পৃথিবীতে আজও হয়তো শ্রেষ্ঠ দৃশ্য একটি শিশুর ঘুমন্ত মুখ! ফ্লাইওভারের নীচে চলন্ত অটোয় কনখলের গঙ্গার দিক থেকে আচমকা একটা জোরালো বাতাস ঢুকে এল।  আর কুম্ভ এসে হাত রাখল শিশুর মাথায়! 
গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
 সহযোগিতায় : উজ্জ্বল দাস
21st  March, 2021
তোমারে সেলাম

 

আগামী শুক্রবার তাঁর প্রয়াণ দিবস। আর ২ মে পূর্ণ হচ্ছে তাঁর জন্ম শতবার্ষিকী। তিনি বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়। তাঁর বহুমুখী প্রতিভার হীরকোজ্জ্বল দ্যুতি বাঙালি মননে চির ভাস্বর। প্রিয় ‘মানিকদা’র জন্মদিনের আগে স্মৃতিচারণা করলেন তাঁর অধিকাংশ ছবির সিনেমাটোগ্রাফার সৌমেন্দু রায়।  বিশদ

18th  April, 2021
সাহিত্যের  সত্যজিৎ

সত্যজিৎ রায় শুধু সিনেমার নন, তিনি সাহিত্যেরও। সিনেমার জন্যই তিনি ভুবনজয়ী, চিনেছে গোটা পৃথিবীর মানুষ। সিনেমার নতুন ভাষা আবিষ্কার  করেছেন তিনি। বিশদ

18th  April, 2021
বাঙালি ব্যক্তিত্ব
সমৃদ্ধ দত্ত

সাধারণত ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় দিল্লি গেলে প্রথমদিকে উঠতেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদের বাসভবনে।  পরবর্তীকালে ডাঃ জে পি গাঙ্গুলির বাড়িতে। ১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু হঠাৎ জরুরি তলব করলেন। সেবার দেখা গেল প্রয়োজনটা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, বিধানচন্দ্র রায় উঠলেন সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে। একদিন দু’দিন নয়। একটানা তিনদিন। বিশদ

11th  April, 2021
একশোয় ভিক্টোরিয়া
রজত চক্রবর্তী

কলকাতার ভোর হল আজ সমবেত কীর্তন আর খোল-করতালের শব্দে। উঠোন ঝাঁট দিতে দিতে ঘোমটার ফাঁক দিয়ে দেখে নিল বউ-ঝিয়েরা। কে মারা গেল! দু’হাত কপালে ঠেকিয়ে পেন্নাম ঠোকে। ছেলেরা নিমদাঁতন দাঁতে চিবতে চিবতে দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছে। বিশদ

04th  April, 2021
সত্যধর্মের দোলোৎসব
সুখেন বিশ্বাস

ফাগুনের দোলপূর্ণিমা। গাছে গাছে নতুন পাতা। শাখায় শাখায় শিমুল-পলাশের রোশনাই। ফুলে-ফলে ফাগুন যেন এক নতুন পৃথিবী। দোলের আবিরে একদিকে রঙিন বাংলার আকাশ-বাতাস, অন্যদিকে ডালিমতলা, হিমসাগর আর বাউল-ফকিরদের আখড়া। বিশদ

28th  March, 2021
তারকার রাজনীতি
রাহুল চক্রবর্তী 

লাইট। সাউন্ড। ক্যামেরা। অ্যাকশন। শব্দগুলো বদলে গিয়ে হয়েছে— জয় বাংলা। জয় শ্রীরাম। ইনক্লাব জিন্দাবাদ। মোদ্দা কথা— সুসজ্জিত চেহারার ছোট কিংবা বড়পর্দার চেনা মুখগুলো আজ অচেনা গণ্ডিতে ধরা দিচ্ছেন। বিশদ

14th  March, 2021
রাস্তায় পাতা হয়েছে
রাখালদাসের ভাঙা বাড়ির ইট 
বিশ্বজিৎ মাইতি

সিন্ধু নদের শুকনো গর্ভের মাটি ও ভাঙা ইট সরিয়ে ইতিহাসের খোঁজ করছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। একের পর এক ইট সরিয়ে ভারতবর্ষের সুপ্রাচীন সভ্যতার চিহ্ন মহেঞ্জোদারো নগরী তিনি পৃথিবীর বুকে তুলে ধরেছিলেন।  
বিশদ

07th  March, 2021
সভ্যতার ঊষাকাল
হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো
কৃষ্ণেন্দু দাস

সালটা ১৯২১। ঠিক একশো বছর আগে অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের হরপ্পা অঞ্চলে শুরু হল প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ। খোঁজ পাওয়া গেল কয়েক হাজার বছর প্রাচীন এক নগর সভ্যতার। পরের বছর খনন কাজ শুরু হয় সিন্ধুপ্রদেশের মহেঞ্জোদারোতে। দেশভাগের পর এ দু’টি অঞ্চল এখন পাকিস্তানের অন্তর্গত।
বিশদ

07th  March, 2021
উপেক্ষিত বিজ্ঞানী 

‘আত্মঘাতী’ বাঙালির ড্রয়িংরুমে তাঁরা কেবলই ছবি। ব্রাত্য। বিস্মৃত। উপেক্ষিত। কেউ নোবেল সিম্পোসিয়ামে বক্তব্য রাখার ডাক পেয়েছেন, আবার কারওর গবেষণার খাতা হাতিয়ে নোবেল পকেটে পুরেছেন অন্য কেউ। গোটা পৃথিবী তাঁদের অবদানে ঋদ্ধ-সমৃদ্ধ, অথচ নিজভূমে তাঁরাই রয়ে গিয়েছেন বিস্মৃতির অন্ধকারে। আজ জাতীয় বিজ্ঞান দিবসের আত্মভরী প্রত্যুষে তেমনই চার বরেণ্য বাঙালি বিজ্ঞানীর বেদনা-বিধুর কাহিনি শোনাচ্ছেন মৃন্ময় চন্দ। 
বিশদ

28th  February, 2021
বাঙালির বিজয় দিবস 
পবিত্র সরকার

যদি কেউ জিজ্ঞেস করেন, বিংশ শতাব্দীতে এই দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে সবচেয়ে বড় ঘটনা কী ঘটেছিল, তা হলে অনেকেই হয়তো বলবেন, ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা বা দেশভাগ। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের একটা ভালো (!) দিক এই যে, তা সাম্রাজ্যবাদের মৃত্যুঘণ্টা বাজাল, আর তারই ফলে, ভারতীয় উপমহাদেশ তার বহুবাঞ্ছিত ‘স্বাধীনতা’ লাভ করল।  
বিশদ

21st  February, 2021
কচিকাঁচাদের ভ্যালেন্টাইন
শান্তনু দত্তগুপ্ত

প্রেমের প্রকাশ নানা রকম। বাঙালির কৈশোরের প্রথম প্রেম অবশ্যই নন্টে ফন্টে, বাঁটুল দি গ্রেট বা হাঁদা ভোঁদা। এগুলির স্রষ্টা যিনি, তিনিও তো এক অর্থে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনই বটে। বঙ্গের কিশোর-কিশোরীদের প্রথম ভালোবাসাকে আজও তিনি বাঁচিয়ে রেখেছেন নিজের সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে। আজ ভালোবাসার দিবসে পদ্মশ্রী নারায়ণ দেবনাথের অমর সৃষ্টিকে ফিরে দেখার চেষ্টা। বিশদ

14th  February, 2021
নেতাজির গুপ্তবাহিনী
শহিদের অজানা আখ্যান
অমিত মিত্র

উত্তাল বঙ্গোপসাগর। ঢেউয়ের মাথা চিরে এগিয়ে চলেছে টর্পেডোবাহী একটি জাপানি ডুবোজাহাজ।  আচমকা তা ঝাঁপ দিল সমুদ্রের অতলে। জলের নীচে অদৃশ্য হতে না হতেই বন্ধ করা হল ইঞ্জিনও। প্রমাদ গুনলেন ভিতরের কেবিনে বসা আজাদ-হিন্দ-ফৌজের গুপ্তবাহিনীর চার অফিসার— তবে কি কোনও ব্রিটিশ ডেস্ট্রয়ারের নজরে এসেছে সাবমেরিনটি? বিশদ

07th  February, 2021
শতবর্ষে বিশ্বভারতী
সবুজকলি সেন

‘বিশ্বভারতী’ কোনও পূর্বপরিকল্পিত বিশ্ববিদ্যালয় নয়। ‘বিশ্বভারতী’ ব্রহ্মবিদ্যালয় নামের একটি ক্ষুদ্র বীজের বটবৃক্ষে পরিণত রূপ। ১৯০১ সালে (৮ পৌষ) পাঁচজন ছাত্রকে নিয়ে যে আশ্রম বিদ্যালয় যাত্রা করেছিল ভারতবর্ষের প্রাচীন তপোবনের আদর্শে—১৯২১-এ তারই পরিণত রূপ ‘বিশ্বভারতী’। বিশদ

31st  January, 2021
নেতাজি সুভাষের সেবাশ্রম
জয়ন্ত চৌধুরী

নির্জন দুপুর। বঙ্গভূমি থেকে নির্বাসিত কারারুদ্ধ সুভাষ। বার্মার মান্দালয় জেল তাঁর কাছে তখন জীবন উপলব্ধির একান্ত সাধনপীঠ। বহু ত্যাগ ব্রতী দেশপ্রেমিক কারাজীবন অতিবাহিত করেছেন বার্মার কারাগারে। আর এই জেলে বসেই একদিন পেলেন তাঁর রাজনৈতিক সমর্পণের কাণ্ডারী দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের প্রয়াণবার্তা। বিশদ

24th  January, 2021
একনজরে
সেঞ্চুরি পাননি ঠিকই। তবে শিখর ধাওয়ানের আক্রমণাত্মক ইনিংসই পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে ৬ উইকেটে জেতাল দিল্লি  ক্যাপিটালসকে। রবিবার জয়ের লক্ষ্যে ১৯৬ রান তাড়া করতে নেমে ১০ ...

ষষ্ঠ দফার নির্বাচনের প্রচারের শেষ দিনে আজ, সোমবার উত্তর দিনাজপুর জেলায় তিনটি সভা করছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ...

বারবার প্রস্তাব ছিল স্বয়ং পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে লড়ার। কিন্তু জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মঞ্চে এক সঙ্গে কাঁধে কাঁধ দিয়ে চলার কারণে সেই প্রস্তাবে ...

রবিবার সকাল থেকে ভোট-পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে চাকদহ থানার রাউতাড়ী পঞ্চায়েতের উত্তর এনায়েতপুরের মণ্ডলপাড়া। বাড়ির সামনে থেকে দেহ উদ্ধার হয় এক বিজেপি কর্মীর। মৃতের নাম দিলীপ কীর্তনীয়া (৩১)।   ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

অত্যধিক পরিশ্রমে শারীরিক দুর্বলতা। বাহন বিষয়ে সতর্কতা প্রয়োজন। সন্তানের বিদ্যা-শিক্ষায় অগ্রগতি বিষয়ে সংশয় বৃদ্ধি। আধ্যাত্মিক ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮৮২: বিবর্তনবাদের স্রষ্টা চার্লস ডারউইনের মৃত্যু
১৯৫৫: শিকারি ও লেখক জিম করবেটের মৃত্যু
১৯৫৭: শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির জন্ম
১৯৫৮: সাহিত্যিক অনুরূপা দেবীর মৃত্যু
১৯৮৭: রুশ টেনিস খেলোয়াড় মারিয়া শারাপোভার জন্ম  



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭৩.৬৯ টাকা ৭৫.৪১ টাকা
পাউন্ড ১০১.৩৬ টাকা ১০৪.৯০ টাকা
ইউরো ৮৭.৭৬ টাকা ৯০.৯৪ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
18th  April, 2021
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮,০৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৫,৬০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬,৩০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬৯,২০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬৯,৩০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
18th  April, 2021

দিন পঞ্জিকা

৫ বৈশাখ ১৪২৮, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১। সপ্তমী ৪৬/৫২ রাত্রি ১২/২। পুনর্বসু নক্ষত্র অহোরাত্র। সূর্যোদয় ৫/১৭/৭, সূর্যাস্ত ৫/৫৪/৩৫। অমৃতযোগ দিবা ৬/৫৯ মধ্যে পুনঃ ১০/২০ গতে ১২/৫২ মধ্যে। রাত্রি ৬/৪০ গতে ৮/৫৬ মধ্যে পুনঃ ১১/১২ গতে ২/১৬ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/২৩ গতে ৫/৪ মধ্যে। বারবেলা ৬/৫১ গতে ৮/২৬ মধ্যে পুনঃ ২/৪৫ গতে ৪/২০ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/১০ গতে ১১/৩৫ মধ্যে।  
৫ বৈশাখ ১৪২৮, সোমবার, ১৯ এপ্রিল ২০২১। সপ্তমী রাত্রি ৬/৫৭। পুনর্বসু নক্ষত্র রাত্রি ২/১৬। সূর্যোদয় ৫/১৭, সূর্যাস্ত ৫/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৬/৫৮ মধ্যে ও ১০/১৫ গতে ১২/৫১ মধ্যে এবং রাত্রি ৬/৪৬ গতে ৯/০ মধ্যে ও ১১/১১ গতে ২/৭ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/২৭ গতে ৫/১০ মধ্যে। কালবেলা ৬/৫২ গতে ৮/২৭ মধ্যে ও ২/৪৬ গতে ৪/২১ মধ্যে। কালরাত্রি ১০/১২ গতে ১১/৩৭ মধ্যে।  
৬ রমজান। 

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আইপিএল: রাজস্থান রয়্যালস-এর বিরুদ্ধে ৪৫ রানে জিতল চেন্নাই সুপার কিংস 

11:29:00 PM

আইপিএল: রাজস্থান ৯৭/৭(১৫ ওভার)

11:00:41 PM

আইপিএল: রাজস্থান ৮১/২(১০ ওভার)

10:32:46 PM

আইপিএল: রাজস্থানকে ১৮৯ রানের টার্গেট দিল চেন্নাই

09:37:20 PM

আইপিএল: চেন্নাই ১৩৩/৫ (১৬ ওভার) 

09:02:32 PM

আইপিএল: চেন্নাই ৯৮/৩ (১১ ওভার) 

08:34:07 PM