গৃহসুখ বৃদ্ধি ও সপরিবারে আনন্দ উপভোগ। অন্যের দোষের দায়বহন করতে হতে পারে। ... বিশদ
হঠাৎ গরম, আবার হঠাৎই বৃষ্টি। এই রকম আবহাওয়ায় খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ছে বাচ্চারা। কিছু নিয়ম মেনে চললে তাদের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। সেই নিয়ম পালনের ক্ষেত্রে যত্নবান হতে হবে বাবা-মাকেই। এক্ষেত্রে দরকার স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাত্রার মধ্যে থাকা। যেমন ধরুন, ঘুমাতে যাওয়ার সময় দেরি না করা। আবার সকালে ওঠার ক্ষেত্রেও তাই। সকাল সকাল উঠে পড়া। অনেক বাচ্চা স্কুল সেরে আসার পরে সঙ্গে সঙ্গে স্নান করতে যায়। বা এসি ঘরে চলে যায়। কেউ হয়তো ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা জল খেয়ে নিল। এর ফলে তাপমাত্রার যে পরিবর্তন হল কম সময়ের মধ্যে, তাতে অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। কারণ সেই সময় শরীরের স্বাভাবিক ইমিউনিটি কাজ করতে পারে না। এতে সর্দি কাশি দ্রুত শুরু হয়। যদি মা-বাবাই খেয়াল রেখে বলে দেন বাচ্চাকে যে খেলতে গেলে বা বাইরে থেকে এলে সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা জল খাওয়া বা ঠান্ডা ঘরে ঢোকা উচিত নয়, তাহলে বিপদ অনেকটা এড়ানো যায়। বাচ্চাকে বলুন, বাইরে থেকে এসে একটা জায়গায় একটু বসো। বিশ্রাম নাও। শরীর একটু ঠান্ডা হলে তারপরে স্নান করো, বা ঠান্ডা
ঘরে যাও।
এর সঙ্গে দরকার ব্যালান্সড ডায়েট। বাচ্চাদের এমনিতে একটু বাইরের খাবারের প্রতি ঝোঁক বেশি থাকে। মনে রাখবেন, বাইরের খাবারে রিফাইনড জিনিস বেশি থাকে। যেমন রিফাইনড সুগার, রিফাইনড হুইট— এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। আমরা বাড়ির যেসব জিনিস নিয়মিত খাই, যেমন টাটকা মাছের ঝোল যাতে নানারকম মশলা থাকে অর্থাৎ হলুদ জিরে ইত্যাদি শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। এগুলোয় অ্যান্টি অক্সিড্যান্টও থাকে। সুষম আহারে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ও প্রোটিন সবই থাকবে। এর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসব্জিও খেতে হবে। গাজর, ক্যাপসিকাম ও বেলপেপারের মতো রঙিন সব্জিতে নানা ভিটামিন থাকে। এগুলো অনেক রকম ইনফেকশন ঠেকাতে পারে।
এছাড়া বাইরে থেকে এসে হাত ঠিকমতো পরিষ্কার করে তবেই খেতে বসা, এই ধরনের নিয়ম কোনও অবস্থাতেই ভুললে চলবে না। কোভিডের পর এই সচেতনতা বেড়েছে। তবু সেটা যেন বাচ্চারা ভুলে না যায়, সেটা দেখতে হবে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা, ফ্লু এসবের বিপদ এড়াতে সময় মেনে ভ্যাকসিন নিতে হবে। বর্ষা ও শীতের আগে এগুলো নিয়ম করে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে নিতে হবে। এছাড়া, অ্যালার্জি অথবা অ্যাজমা রয়েছে এমন বাচ্চার জন্য বাড়িতে কিছু নিয়ম মেনে চলুন। যেমন এমন সমস্যা থাকলে বাড়িতে কার্পেট না পাতাই ভালো। সফট টয়েজ বেশি না দেওয়া ভালো। কম্বল ব্যবহার করলে তাতে কভার অবশ্যই দিন। অসুস্থ হলে স্কুলে পাঠাবেন না, এটা মা-বাবা এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ দু’জনকেই দেখতে হবে। অসুস্থ অবস্থায় বাচ্চার যেন কোনওভাবেই ডিহাইড্রেশন না হয়, সেটা দেখতে হবে। পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীরে যে পরিমাণ জল থাকে, তার এক তৃতীয়াংশ থাকে বাচ্চাদের শরীরে। ফলে বাচ্চাদের ডিহাইড্রেশন হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ওআরএস, ডাবের জল, স্যুপ, ডালের জল যথেষ্ট পরিমাণে দিতে হবে।
কাশি হয়েছে, অতএব কাফ সিরাপ খাওয়াই বাচ্চাকে। এই ভুল কখনও করবেন না। এগুলো অযথা বিপদ ডেকে আনতে পারে। শিশু-চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে বাচ্চার কোনও চিকিৎসা নয়।
বাচ্চাদের পোশাক বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সুতির জামাকাপড়ে প্রাধান্য দিন। এই সব পোশাকে অতি সহজেই বাতাস খেলতে পারে। বাচ্চাদের পোশাক ধোওয়ার সময় কড়া ডিটারজেন্ট ব্যবহার করবেন না। কারণ ওই ধরনের ডিটারজেন্ট দিয়ে ধোওয়া পোশাক বাচ্চাদের ত্বকে সমস্যা তৈরি করতে পারে। এক্ষেত্রে ভরসা রাখুন লিক্যুইড ডিটারজেন্টে।