বিদ্যার্থীরা মাঝে মধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
ওয়াল্ট ডিজনির রূপকথা মানেই শুধু ফর্সা মুখ, সোনালি চুল আর নীল চোখের রাজত্ব, এই ধারণা ক্রমশ বদলে যাচ্ছে। আফ্রিকান, আমেরিকান, মেক্সিকান, এশিয়ান সহ পৃথিবীর সর্বস্তরের মানুষের ছবিই এখন ডিজনির রূপকথায় উঠে আসছে। গুটি গুটি পায়ে সেই রূপকথার রাজত্বে প্রবেশ করেছে পলিনেশিয়া দ্বীপের কালো ডাগর চোখের কন্যা মোয়ানা। মেক্সিকোর কোকো, ব্ল্যাক আমেরিকান জো গার্ডেনার সহ আরও অনেকেই। এবার কিন্তু আরও বড় একটা ব্যতিক্রম ঘটাতে চলেছে ডিজনি মুভিজ। স্নোহোয়াইটকে নিয়ে তাদের নবতম রূপকথার গল্পে স্নোহোয়াইটের ভূমিকায় দেখা যাবে আফ্রো-আমেরিকান র্যাশেল জেগলারকে। এর আগেই ওয়েস্ট সাইড স্টোরির রিমেকে তাঁকে নায়িকা করেছিলেন স্টিভেন স্পিলবার্গ। এবার ডিজনি মুভিজের রূপকথার রাজ্যেও প্রবেশ করতে চলেছেন র্যাশেল। এই বিষয়ে স্নোহোয়াইটের পরিচালক মার্ক ওয়েব বলেন, ‘র্যাশেলের গলার স্বরে এক অদ্ভুত মডিউলেশন আছে। বিভিন্ন রকমভাবে কথা বলতে পারে। ফলে আনন্দ, বিষাদ, আতঙ্ক সবই ও অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবে সংলাপের মধ্য দিয়ে। আর সেই কারণেই ওকে স্নোহোয়াইটের চরিত্রে নির্বাচন করি।’ শুধু র্যাশেলই নয়, এর পরে আরও অনেক রূপকথার গল্পেই কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের মূল চরিত্রে অভিনয় করানো হবে বলে ওয়াল্ট ডিজনির তরফে জানানো হয়েছে। যেমন লিটল মারমেডে এরিয়ালের ভূমিকায় হ্যাল বেলিকে ভাবা হয়েছে। এমনকী সিন্ডেরেলার চরিত্রেও কিউবান গায়িকা ক্যামিলা ক্যাবেলোকে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। স্নোহোয়াইটের ভূমিকায় অভিনয় করার অভিজ্ঞতা এককথায় অনবদ্য বলে জানিয়েছেন র্যাশেল। তাছাড়া সাদা চামড়ার স্টিরিওটাইপ যে ক্রমশ ভাঙছে এটা খুবই আশার দিক বলে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তিনি।
বৈষ্ণবীর সাফল্য
এখনও আমাদের দেশে রাস্তাঘাটে এমনকী স্কুলে বা কলেজেও বাথরুম নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় মেয়েদের। সঠিক স্যানিটেশনের অভাবে অনেক মেয়ে দিনের মধ্যে অনেকটা সময় বাথরুমে না গিয়েই কাটিয়ে দেন। অল্পবয়সে তা খুব একটা কঠিন মনে না হলেও বয়সকালে এর থেকেই শরীরে বিভিন্ন রোগ বাসা বাধে। তবু স্যানিটেশন, বাথরুম ইত্যাদি বিষয়ে আমাদের সচেতনতা ততটা তৈরি হয়নি। আর সেই অসচেতন মনোভাবের প্রভাব শহুরে জীবনে যতটা না পড়ে, গ্রামে পড়ে তার চেয়ে ঢের বেশি। যেমনটা পড়েছিল অন্ধ্রপ্রদেশের একটি ছোট গ্রামের মেয়ে বৈষ্ণবী কাঞ্চারলার জীবনে। মাত্র ১৫ বছরের মেয়েটি প্রতি মাসে দিন সাতেক স্কুল কামাই করতে বাধ্য হতো। কেননা, তার স্কুলে মেয়েদের জন্য কোনও শৌচালয় ছিল না। তাই ঋতুকালীন সময় তার স্কুল যাওয়া বন্ধ। শুধু বৈষ্ণবীই নয়, এই সমস্যায় তার বহু সহপাঠীকেও পড়তে হয়। তবু স্কুল কর্তৃপক্ষ, হেডমাস্টার, শিক্ষক সকলেই নির্বিকার। এমন পরিস্থিতির বিরুদ্ধে তাই রুখে দাঁড়াল বৈষ্ণবী। তার বক্তব্য, ছেলেদের থেকে তারা আলাদা নয়, তবু কেন এই বৈষম্য? অতি সাধারণ এবং জরুরি প্রয়োজন থেকে কেন মেয়েরা বঞ্চিত? ক্রমশ এই পরিস্থিতির বদল আনার জন্য ভাবনা চিন্তা শুরু করে পনেরো বছরের বৈষ্ণবী। এবং শেষ পর্যন্ত পেপসি কো ওয়াটার ফাউন্ডেশনের সাহায্যে তার লড়াই সফল হয়। পেপসি কো বৈষ্ণবীর স্কুলে ডিপ টিউবওয়েল খুঁড়ে জলের সঠিক ব্যবস্থা করেছে এবং মেয়েদের জন্য আলাদা শৌচালয় তৈরি করে দিয়েছে। এখন আর স্কুল কামাই হয় না বৈষ্ণবীর। শুধু স্কুলেই নয়, গ্রামের অন্যত্রও মেয়েদের জন্য বাথরুমের ব্যবস্থা করা হয়েছে ওয়াটার ফাউন্ডেশনের তরফে। ফলে বৈষ্ণবীর সৌজন্যে গ্রামের মহিলারা এখন স্বস্তিতে। এ বিষয়ে বৈষ্ণবীকে প্রশ্ন করা হলে সে বলেছে, ‘এখন পড়াশোনায় কোনও ঘাটতি হয় না। তাছাড়া স্কুলে গিয়ে যে একটা টেনশন থাকত তাও থাকে না। রোজ স্কুলে যেতে পারার আনন্দই আলাদা।’ এই কাজের জন্য স্কুলের তরফে তাকে স্কুল হাইজিন অ্যান্ড হেল্থ ওয়েলফেয়ার কমিটির প্রধান করা হয়েছে। একজন শিক্ষক নন, ১৫ বছরের বৈষ্ণবীকে তার সচেতনতা দেখে এই দায়িত্বে বহাল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
কোভিডে কমিক্স
কোভিড ১৯-এর প্রভাবে গোটা পৃথিবী যখন বিপর্যস্ত তখন এক অভিনব উদ্যোগ নিল ইউএন উইমেন’স এমপাওয়ারমেন্ট সেল ও হু। মহামারীকে বিষয় করে একটি কমিক ইলাসট্রেশনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল এই দু’টি সংস্থা। প্রতিযোগিতার বিষয় মহামারীতে মেয়েদের জীবন। ইন্দোনেশিয়ায় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। আয়োজনে জাপান সরকারের অংশগ্রহণও উল্লেখযোগ্য। ইউএন উইমেন’স সেলের তরফে জানানো হয়েছে, মহিলাদের জীবনে মহামারীর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে। মেয়েদের চাকরি গিয়েছে, মাইনে কমেছে, ঘরে বাইরে প্রচুর কাজ করতে তারা বাধ্য হয়েছে, এমনকী পারিবারিক হিংসার শিকারও মেয়েরা হয়েছে এই কঠিন সময়। ফলে তাদের নিয়ে একটা কমিক ইলাসট্রেশন প্রতিযোগিতা খুবই সঙ্গত। মোট ৩৭২টি আঁকা জমা পড়েছিল ইন্দোনেশিয়া উইমেন’স কাউন্সিলের দপ্তরে। তার থেকে বাছাই করে যেটি সেরার তকমা পেয়েছে সেটি লিডিয়া পারমাটা সারির ইলাস্ট্রেশন। ইন্দোনেশিয়া আর্ট কলেজের গ্র্যাজুয়েট লিডিয়া এই মুহূর্তে চাকরির খোঁজ করছেন। কিন্তু এই মহামারীর প্রভাবে তেমন কোনও চাকরি তাঁর এখনও জোটেনি। ইতিমধ্যে এমন একটি প্রতিযোগিতার সুযোগ পেয়ে নিজের ভাগ্য যাচাই করতে চেয়েছিলেন লিডিয়া। প্রতিযোগিতায় যে আদৌ কোনও স্থান পাবেন, তা তিনি ভাবেননি। তবে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘সাধারণত কমিক্স বা কার্টুনধর্মী ছবিতে বাস্তবের অপভ্রংশ করার একটা প্রবণতা থাকে। কিন্তু আমি তা করিনি। মহামারীতে বাস্তব যে জীবনচিত্র আমার চোখে পড়েছে তা-ই আমি আঁকার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছি। শুধু স্কেচের ধরনটা কার্টুনের মতো । বাকি সবই বাস্তব চিত্র।’ হু-এর তরফে বলা হয়েছ, মহামারীর সময়ে যখন অবসাদ ও বিষণ্ণতা আমাদের জীবনযাত্রাকে ঘিরে ধরেছে তখন এই কমিক ইলাসট্রেশনের প্রতিযোগিতা একরাশ খোলা হাওয়ার মতো। সারাক্ষণ হতাশার মধ্যে থাকলে শরীর ও মন দুই-ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই এমন অবস্থায় আনন্দের খোরাক খোঁজা দরকার। এই কমিক ইলাসট্রেশন সেই আনন্দেরই রসদ জোগাবে বলে মনে করছে হু। এই প্রতিযোগিতা থেকে অনেক প্রতিভা বেরিয়ে এসেছে, যাদের নানা ধরনের কাজে লাগানোর কথাও ভাবা হচ্ছে।