কোনও কিছুতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাববেন। শত্রুতার অবসান হবে। গুরুজনদের কথা মানা দরকার। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সুফল ... বিশদ
আশ্রমিক জীবনে ব্রহ্মচর্য ছিল অবশ্য পালনীয় কর্তব্য। এ ব্যাপারে গান্ধীর সচিব প্যারেলালের বোন সুশীলা নায়ার এবং সম্পর্কে তাঁর নাতনি মনু গান্ধী ছিলেন সর্বাগ্রে। তাঁদের অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ও ব্রহ্মচর্য পালনের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নিয়ে জাড অ্যাডামস ‘গান্ধী, নেকেড অ্যামবিশন’ নামে একটি বিতর্কিত বইও লেখেন। বিভিন্ন সময়ে মনু আর সুশীলার ওপর গান্ধী এতটাই নির্ভর করতেন যে তাঁদের ত্রিকোণ সম্পর্ক দৃষ্টিকটু বলে মনে হতো। সম্পর্কে নাতি কানু গান্ধীর স্ত্রী আভা গান্ধীকেও মাঝে মাঝে মোহনদাস কাছে টেনে নিতেন। ব্রহ্মচর্য চর্চায় নারী-পুরুষের সম্পর্কের পাশ ফেল নিয়ে তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতেন। কঠোর আশ্রমিক জীবন যাতে মেয়েদের বিপথগামী না করে— তাও তাঁর পর্যবেক্ষণের বিষয় ছিল।
স্বাধীনতা আন্দোলনকেন্দ্রিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিন বঙ্গললনা— সুচেতা মজুমদার, সরোজিনী চট্টোপাধ্যায় ও অরুণা গাঙ্গুলির ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এঁরা প্রত্যেকেই গান্ধীর খুব কাছে এসেছেন, তাঁর বিভিন্ন আন্দোলন— অসহযোগ, সত্যাগ্রহ, ভারত ছাড়ো প্রভৃতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন, প্রয়োজনে কারারুদ্ধও হয়েছেন। তবে বৈবাহিক সূত্রেই এই তিন বঙ্গললনা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে আজও স্মরণীয় হয়ে আছেন, পরিচিতি লাভ করেছেন। এঁরা যথাক্রমে হলেন— সুচেতা কৃপালনী (১৯০৮-৭৪), সরোজিনী নাইডু (১৮৭৯-১৯৪৯), অরুণা আসফ আলি (১৯০৯-১৯৯৬)। এছাড়া জওহরলাল নেহরুর বোন বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিতও (১৯০০-১৯৯০) গান্ধীর সংস্পর্শে আসেন এবং পরাধীনতা থেকে ভারত মুক্তির শপথে দীক্ষিত হন। গান্ধীর জীবনে দুই বিদেশিনীর প্রভাব ও আত্মনিবেদনও এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য। ইংরেজ মহিলা ম্যাডেলেইন স্লেড গান্ধীর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ভারতে আসেন এবং সেবাগ্রাম আশ্রমে মীরা বেন (১৮৯২-১৯৮২) নামে গান্ধীর সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। তিনি এতটাই অন্তরঙ্গ ছিলেন যে গান্ধীকে ‘Beloved Bapu’ বলে সম্বোধন করতেও কুণ্ঠিত ছিলেন না। তাঁর একাধিক ব্যক্তিগত চিঠি নিয়ে ত্রিদিপ সুহরুদ ও টমাস ওয়েবার ‘বিলাভেড বাপু: গান্ধী-মীরা বেন করেসপন্ডেন্স’ নামে এক সংকলন গ্রন্থও প্রকাশ করেন। সরলা বেনও (১৯০১-৮২) তাঁর প্রকৃত নাম ক্যাথেরিন মেরি হেইলম্যান ত্যাগ করে গান্ধীর সেবাধর্মে আত্মোৎসর্গ করেন।