উকিল ও ডাক্তারদের কর্মব্যস্ততা বাড়বে। পত্নী/পতির স্বাস্থ্য আকস্মিক ভোগাতে পারে। মানসিক অস্থিরভাব। ... বিশদ
ভগবান্ বাসুদেবের প্রতি ভক্তিভাব স্থাপন করিলে ঐ ভক্তিভাব শীঘ্রই বিষয়ে বৈরাগ্য এবং অভিসন্ধিহীন জ্ঞান জন্মাইয়া থাকে।
হে দেবি! সমস্ত ভাব মনের দ্বারা পরস্পর সমাবেশ করা সম্ভব হয় না; অতএব আমার প্রতি স্বভাবত ভক্তি স্থাপন করিবে; আমার প্রতি ভক্তির তুল্য এ জগতে আর কিছু নাই। সংসাররূপ সমুদ্রে পতিত, মান-অপমান, সুখ-দুঃখ প্রভৃতিরূপ বায়ুর দ্বারা আহত অর্থাৎ বিক্ষুব্ধ, পুত্র, কন্যা, স্ত্রী প্রভৃতির ভরণ-পোষণ ইত্যাদির জন্য ক্লান্ত, বিষয়রূপ সমতাবিহীন জলে পড়িয়া ডুবু ডুবু অবস্থায় অবস্থানকারী মনুষ্যগণের বিষ্ণুরূপ তরীই একমাত্র আশ্রয় হইয়া থাকে। অন্তহীন, অনিন্দনীয়, প্রাচীনপুরুষ, দেবতাদিগের গুরু, কল্যাণদায়ক, পূজনীয়, পবিত্র, গরুড়বাহন, লক্ষ্মীপতি জনার্দ্দনকে যাঁহারা আশ্রয় করেন, তাঁহারা যমালয়ে কখনও প্রবেশ করেন না।
যাঁহারা শঙ্খ ও পদ্ম হস্তে ধারণকারী, গরুড়বাহন, বরদায়ক লক্ষ্মীপতি হরিকে আশ্রয় করেন, তাঁহারা কখনও দুঃখভোগ করেন না বা সংসারগর্ভে পুনরায় পতিত হন না। যাঁহাদের মনে সর্ব্বদা গোবিন্দ বাস করেন, তাঁহারা কখনও পরাজিত হন না বা মৃত্যু হইতেও উদ্বিগ্ন হন না। আদ্য, অন্তবিহীন, জরারহিত, অব্যয়, সর্ব্বত্র অবস্থিত, পরমব্রহ্মপদরূপ পুরাতন পুরুষ শ্রীহরিকে যাঁহারা ভজনা করেন এবং বিষয়াসক্তিরহিত হন, তাঁহারা শাশ্বত এবং অবিনশ্বর বিষ্ণুপদে গমন করিয়া থাকেন।
অনন্তর যোগী বাহ্য অন্তঃকরণের দ্বারা এবং কালোৎপন্ন পত্রপুষ্পাদির দ্বারা ঈশ্বর কেশবকে পূজা করিবেন এবং তাহার ফলে নিশ্চয়ই তিনি বিধিপূর্ব্বক মনুষ্যকর্ত্তৃক পূজিত হইবেন।
হে ভীষ্ম! বিষ্ণুর প্রতি প্রেমযুক্ত একাগ্র মমতাই ‘ভক্তি’ বলিয়া প্রহ্লাদ, উদ্ধব, নারদ প্রভৃতি কর্ত্তৃক কথিত হইয়া থাকে।
হে সখি! যাঁহার শরীরের একস্থানেই মধুরত্ব অর্থাৎ সৌন্দর্য্য দেখিতে পাই এবং সেখানেই আমার নেত্রপতঙ্গ পড়িবার মত লগ্ন হয়; আর যদি তিনি সর্ব্বাঙ্গমনোহর হন, তবে আমার চক্ষুর দ্বারা আমি তাঁহাকে কেমন করিয়া দেখিব? সুন্দর নন্দনন্দনের যে যে অঙ্গে আমার নেত্র পতিত হয়, সেই সেই অঙ্গ হইতে তাঁহার নামগ্রহণের ন্যায় আমার নেত্র আনন্দ লাভ করে এবং আনন্দ-সমুদ্রে মজ্জিত হওয়ার ন্যায় আমার চিত্ত তাঁহাতে লগ্ন হয়। আমার গুণাবলী শ্রবণমাত্রেই সকলের অন্তর্যামী আমার প্রতি অবিচ্ছিন্ন মনোগতি হয়; যেমন, গঙ্গাজলের সমুদ্রের প্রতি অবিচ্ছিন্ন গতি হইয়া থাকে। ফলকামনাবিরহিত মনোগতিরূপ যে ভক্তি, তাহাই নির্গুণ ভক্তিযোগের লক্ষণ বলিয়া কথিত হইয়া থাকে। সমুদ্রে যেমন গঙ্গার ধারা নিরবচ্ছিন্ন (অবিরত) ভাবে গমন করে, ঠিক সেইভাবে অবিচ্ছিন্ন মনের গতিকে নির্গুণ ভক্তিযোগ বলা হইয়া থাকে। একবারও যদি কেহ শরণাগতপালক আমার নিকটে “আমি তোমার” এইপ্রকার প্রার্থনা করে, তবে আমি তাহাকে সমস্ত প্রাণিগণ হইতে অভয় প্রদান করিয়া থাকি।