ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়। ... বিশদ
যিনি অখণ্ডমণ্ডলাকারে অবস্থিত এই স্থাবর-জঙ্গমাত্মক বিশ্বকে ব্যাপিয়া রাহিয়াছেন, সেই ব্রহ্মপদকে যিনি দেখাইয়া দেন, সেই শ্রীগুরুদেবকে নমস্কার। যিনি জ্ঞানরূপ অঞ্জন-শলাকার দ্বারা অজ্ঞানান্ধকারে অন্ধজীবের চক্ষুঃ উন্মীলিত করেন, অর্থাৎ জ্ঞাননেত্র খুলিয়া দেন, সেই শ্রীগুরুদেবকে নমস্কার। যিনি স্থাবর, জঙ্গম এবং অপরাপর যত কিছু চরাচর, অর্থাৎ বিশ্বসংসার পরিব্যাপ্ত করিয়া রহিয়াছেন, সেই ব্রহ্মপদ যিনি দেখাইয়া দেন, সেই শ্রীগুরুদেবকে নমস্কার। যিনি চরাচর ত্রিলোককে চিন্ময়রূপে ব্যাপিয়া আছেন, সেই ব্রহ্মপদ যিনি দেখাইয়া দেন, সেই শ্রীগুরুদেবকে নমস্কার।
যাঁহার চরণকমল সমস্ত শ্রুতির শিরোমণিরূপে বিরাজিত রহিয়াছে, যিনি বেদান্তরূপ কমলের সূর্য্যস্বরূপ, অর্থাৎ বেদের প্রকাশক, সেই শ্রীগুরুদেবকে নমস্কার। যিনি চেতন, সনাতন, শান্ত, জ্ঞানাতীত, নিরঞ্জন এবং যিনি বিন্দুনাদকলা প্রভৃতির অতীত, সেই শ্রীগুরুদেবকে নমস্কার। যিনি জ্ঞানশক্তিসম্পন্ন, তত্ত্বমালারূপ অলঙ্কার যাঁহাকে সুশোভিত করিয়াছে এবং যিনি ভোগ ও মোক্ষের প্রদাতা, সেই শ্রীগুরুদেবকে নমস্কার। যিনি আত্মজ্ঞানের উপদেশ দিয়া বহুজন্মপ্রবাহিত কর্ম্ম-বন্ধনের ছেদন করেন, সেই শ্রীগুরুদেবকে নমস্কার। যাঁহার চরণোদক পান করিলে সংসার-সাগর সম্যক্ শুষ্ক হইয়া যায়, অর্থাৎ বিলয় প্রাপ্ত হয় এবং তত্বজ্ঞানরূপ সারসম্পত্তি উপস্থিত হয়, সেই শ্রীগুরুদেবকে নমস্কার। যে গুরুর অতিরিক্ত কোন তত্ত্ব নাই, যে গুরুর অধিক কোন তপস্যা নাই, যে গুরুতত্ত্বজ্ঞানের অতিরিক্ত কিছু নাই, সেই শ্রীগুরুদেবকে নমস্কার। যিনি আমার নাথ বা ত্রাতা, তিনি বিশ্বসংসারের নাথ বা ত্রাণকর্ত্তা, যিনি আমার গুরু, তিনি বিশ্বের গুরু, যিনি আমার আত্মা, তিনি সর্ব্বভূতের আত্মা, অতএব সেই সর্ব্বব্যাপক শ্রীগুরুদেবকে নমস্কার।
গুরু সকলের আদি হইয়াও সকলের অনাদি, গুরু পরম দেবতা পরমেশ্বর, গুরু হইতে শ্রেষ্ঠ কিছুই নাই, সেই শ্রীগুরুদেবকে নমস্কার। গুরুদেবের মূর্ত্তি ধ্যানই সকল ধ্যানের মূল, গুরুদেবের শ্রীচরণ পূজাই সকল পূজার মূল, গুরুদেবের বাক্যই সকল মন্ত্রের মূল এবং গুরুদেবের কৃপাই মুক্তির মূল, অর্থাৎ প্রধান উপায়। আমার গুরুই পরব্রহ্ম, ইহা আমি বলি, আমার গুরু পরব্রহ্ম, তাঁহাকে আমি ভজনা করি, আমার গুরু পরব্রহ্ম, তাঁহাকে আমি স্মরণ করি এবং আমার পরব্রহ্ম গুরুকে আমি প্রণাম করি।
গুরুই পরম ব্রহ্ম, গুরুই সর্ব্বশ্রেষ্ঠ ধন, গুরুই সর্ব্ববিধ কাম্যবস্তুগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ, গুরুই পরম আশ্রয়। গুরুই ব্রহ্মবিদ্যাস্বরূপ, গুরুই শ্রেষ্ঠা গতি, তিনিই সংসার-সাগরে তোমার কর্ণধারস্বরূপ বলিয়া তদপেক্ষা গুরুতর আর কেহই নাই। ভগবান লাভের উপায়ও তিনি এবং স্বয়ং ভগবানও তিনি।