জলপথ পরিবহণ কর্মে বিশেষ শুভ। হস্তশিল্পী, হিসাব-শাস্ত্রবিদ প্রমুখের কর্মে উন্নতি ও সুনাম। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
আমি একটী, তুমি একটী—এ ভেদ বোধ তিনিই করাচ্ছেন। যতক্ষণ এই ভেদবোধ, ততক্ষণ শক্তি মানতে হবে। যতক্ষণ ‘আমি’ আছে, ভেদ বুদ্ধি আছে,—ব্রহ্ম নির্গুণ বলবার যো নাই। ততক্ষণ সগুণ ব্রহ্ম মানতে হবে। বেদ পুরাণ, তন্ত্রে এই সগুণ ব্রহ্মকে কালী বা আদ্যাশক্তি বলে গেছে।
শ্রীকৃষ্ণ পুরুষ, রাধা প্রকৃতি, চিচ্ছক্তি আদ্যাশক্তি। রাধা প্রকৃতি ত্রিগুণময়ী। এর ভেতরে সত্ত্ব, রজঃ, তমঃ তিনগুণ। বৈষ্ণব শাস্ত্র মতে কামরাধা চন্দ্রাবলী, প্রেমরাধা শ্রীমতী, নিত্যরাধা গোপাল কোলে যাহা নন্দ দেখেছিলেন। সীতা হনুমানকে বলেছিলেন, “বৎস আমি, একরূপে রাম, আর একরূপে সীতা, একরূপে ইন্দ্র, একরূপে ইন্দ্রাণী।
চিদাত্মা আর চিৎশক্তি। চিদাত্মা পুরুষ, চিৎশক্তি প্রকৃতি। চিদাত্মা শ্রীকৃষ্ণ, চিৎশক্তি শ্রীরাধা। ভক্ত ঐ চিৎশক্তির এক একটী রূপ।
এক বই আর কিছুই নাই। সেই পরব্রহ্ম ‘আমি’ যতক্ষণ রেখে দেন, ততক্ষণ দেখান যে আদ্যাশক্তিরূপে সৃষ্টি, স্থিতি, প্রলয় করছেন। যিনিই ব্রহ্ম তিনিই আদ্যাশক্তি। কিন্তু ব্রহ্মজ্ঞান হলে আর দুটো থাকে না। অভেদ। এক। সে একের দুই নাই। অদ্বৈতম্।
আমি আর কি বলবো বাবু—সচ্চিদানন্দ যে কি, তা কেউ বলতে পারে না। তাই তিনি প্রথম হলেন—অর্দ্ধনারীশ্বর! কেন?—না, দেখাবেন বলে যে পুরুষ প্রকৃতি দুইই আমি। তারপর তা থেকে আরও একথাক নেবে আলাদা আলাদা পুরুষ ও আলাদা আলাদা প্রকৃতি হলেন।
সাংখ্যদর্শনে বলে, ‘পুরুষ অকর্ত্তা’, কিছু করেন না; প্রকৃতিই সকল কাজ করেন। পুরুষ প্রকৃতির ঐ সকল কাজ সাক্ষী-স্বরূপ হয়ে দেখেন; প্রকৃতিও আবার পুরুষকে ছেড়ে আপনিও কোনও কাজ করতে পারেন না। সাধনের সময় নেতি নেতি করে ত্যাগ করতে হয়। তাঁকে লাভের পর বুঝা যায় তিনিই সব হয়েছেন। রামচন্দ্রের যখন বৈরাগ্য হল, দশরথ তখন বিশেষ চিন্তিত হয়ে বশিষ্ঠদেবের শরণাগত হলেন—রাম যাতে সংসার ত্যাগ না করেন।
কুমারকৃষ্ণ নন্দী সংকলিত ‘শ্রীরামকৃষ্ণ বাণী ও শাস্ত্রপ্রমাণ’ থেকে