জলপথ পরিবহণ কর্মে বিশেষ শুভ। হস্তশিল্পী, হিসাব-শাস্ত্রবিদ প্রমুখের কর্মে উন্নতি ও সুনাম। মানসিক অস্থিরতা থাকবে। ... বিশদ
এসব দেখেশুনে দিল্লির ভোটাররা আড়ালে মুচকি হাসলেও তাঁদের দোষ দেওয়া যাবে না। কারণ, পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের জন্য ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের সাফল্যের পর নরেন্দ্র মোদি এই ‘খয়রাতি’ বা ‘রেউড়ি’ বিলির তীব্র নিন্দা করে অনেক লম্বা-চওড়া কথা বলেছিলেন। দিল্লির আপ সরকার বিদ্যুতের বিলে ভর্তুকি দেওয়ায় তারও বিরোধিতা করেছিল বিজেপি। সে সব বেমালুম ভুলে মোদির দলই মহারাষ্ট্রে বিদ্যুতের বিলে ৩০ শতাংশ ভর্তুকির কথা জানিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষার্থীদের পঠনপাঠনের সুবিধার্থে ‘ট্যাব’ দেওয়ার নীতি কিংবা কন্যাশ্রীর তীব্র বিরোধী হলেও মহারাষ্ট্রে তারাই দশ লক্ষ শিক্ষার্থীকে মাসে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দিল্লিতেও দেখা যাচ্ছে, আপ এবং কংগ্রেসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে, কোথাও বা তাদের ছাপিয়ে গিয়ে সেই ‘রেউড়ি’ বিলির পথেই হেঁটেছে মোদি-অমিত শাহের দল। প্রায় নিলাম ডাকার ভঙ্গিতে দর চড়িয়েছে তারা। এমন ‘দ্বিচারিতা’র একটাই মানে দাঁড়ায়, যে রাজ্যে অন্য দল ক্ষমতায় সেখানে বুনিয়াদি অর্থনীতির কথা বলে ‘খয়রাতি’ বিলির বিরোধী পদ্মশিবির। কিন্তু ক্ষমতা দখল করতে প্রয়োজনে সেই ‘রেউড়ি’ রাজনীতিকে আঁকড়ে ধরতে তাদের আপত্তি নেই! তাই বোধহয় প্রধানমন্ত্রীকেও এখন আর রেউড়ি রাজনীতি নিয়ে মুখ খুলতে বিশেষ দেখা যায় না।
তবে একটা স্বস্তির কথা হল, এবার দিল্লির ভোটে অন্তত জাতপাত, ধর্ম, বিভাজনের কথা তেমন জোরালো ভাবে শোনা যাচ্ছে না। দুর্ভাগ্যের হলেও সত্যি যে, এই ভোটের প্রচারে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দূষণ, পরিকাঠামো, বেকারি দূরীকরণ, রুটি-রুজি— এককথায় মানুষের মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন এবং তার সমাধান কোন পথে— তা নিয়েও বিশেষ উচ্চবাচ্য নেই। কিন্তু প্রতিশ্রুতির মতো খয়রাতির নগদ বা পরোক্ষ সুবিধাগুলি গরিব-মধ্যবিত্তের কাছে পৌঁছলে তার ইতিবাচক দিকটিকে অস্বীকার করা যাবে না। কারণ, ‘খয়রাতির’ সেই অর্থ তো মানুষ ভোগ ও প্রয়োজনেই ব্যয় করবে। তাতে বাজারে বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা বাড়বে। চাহিদা বাড়লে উৎপাদন ও কর্মসংস্থান বাড়বে। অর্থনীতির চাকা গড়াবে। এতে স্থায়ী সমাধান না হলেও কিছু সুরাহা তো মিলবে। তাই বিভিন্ন রাজ্যে মূলত আঞ্চলিক দলগুলির সেই ‘পাইয়ে’ দেওয়ার রাজনীতিই এখন সব দলের ভোটে জেতার অন্যতম টোটকা হয়ে উঠেছে। শুধুমাত্র নীতি আদর্শের কথায় আর ভোটবাক্স ভরছে না। অতএব ভোটের ময়দানে খেলতে নেমে প্রায় সব ভারতীয় রাজনৈতিক দলই সেই একই পথ অনুসরণ করছে। তাই দিল্লির ভোটে শেষমেশ কার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।