সৎসঙ্গ ও আধ্যাত্মিক ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠে মানসিক তৃপ্তি। কাজকর্মের ক্ষেত্রে নতুন কোনও যোগাযোগ থেকে উপকৃত ... বিশদ
সাংসদদের একাংশের আচরণ নিয়ে তার চেয়েও অনেক বড় প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে আম জনতার মনে। সংবিধানে হাত ছুঁইয়ে শপথ নিয়ে, সংসদকে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় মন্দির বলে অহরহ নীতিকথা শুনিয়েও কেন এই জনপ্রতিনিধিদের একাংশ আম জনতার কথা ভুলে স্রেফ নিজেদের দলীয় স্বার্থ চরিতার্থ করতে সংসদকে কুস্তির আখড়ায় পরিণত করছেন—সেই প্রশ্ন উঠেছে। কেন এমন আচরণকারীদের নির্বাচিত করে সংসদে পাঠানো হয়েছে সেই প্রশ্ন করার বোধহয় সময় এসেছে। এমনিতে কান পাতলে শোনা যায়, সংসদে ‘বিতর্কের মান’ ক্রমশ কমছে। এদেশে জনপ্রতিনিধি হতে গেলে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতারও প্রয়োজন হয় না। তথ্য বলছে, এই সংসদে এমন অনেকে রয়েছেন যাঁদের বিরুদ্ধে ‘খুন ধর্ষণের’ মতো মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে বেআইনি সম্পদ তৈরি করার অভিযোগও রয়েছে। আর ‘বাহুবলী’ বলে পরিচিত সাংসদের সংখ্যা করগুণে বলা যাবে না। এসবের নিট ফল হল, এলাকার সমস্যা নিয়ে এঁদের অনেককেই বিশেষ মুখ খুলতে দেখা যায় না! যেটুকু যা বক্তৃতা করেন তাতে যুক্তি-তথ্যের জায়গা নেয় ব্যক্তিগত আক্রমণ। দলীয় অনুশাসন কার্যকর করতে এঁদেরই বেশি দর! অভব্য আচরণও করেন কেউ কেউ। ফলে একদিকে সরকারপক্ষের তরফে বিরোধীদের গ্রাহ্যের মধ্যে না আনা, অন্যদিকে গা-জোয়ারি অবস্থানের কারণে শেষ কবে সংসদের অধিবেশন টানা সাত দিন বিরামহীনভাবে চলতে পেরেছে তা বলা মুশকিল।চলতি শীতকালীন অধিবেশনের অবস্থা আরও করুণ। প্রতিদিন নিয়ম করে দুই কক্ষের অধিবেশন বসেছে। তাতে জনগণের করের কোটি কোটি টাকা জলে গিয়েছে। কিন্তু প্রতিদিনই সামান্য সময়ের পর সভা মুলতুবি হয়ে গিয়েছে। এবার অধিবেশনের শুরু থেকেই দেখা গিয়েছে, কখনও কংগ্রেস একা, কখনও বিরোধী মঞ্চ একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। প্রথমে একটি শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ তুলে আসরে নামে কংগ্রেস। তারপর ‘এক দেশ এক ভোট’ নিয়ে সরকারপক্ষের উদ্যোগের বিরুদ্ধে সরব হয় গোটা বিরোধীপক্ষ। এই নিয়ে চাপান উতোর মিটতে না মিটতেই সংবিধানপ্রণেতা বাবাসাহেব আম্বেদকরকে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বেফাঁস মন্তব্যকে ঘিরে বিরোধী আগুনে ঘি পড়ে। বৃহস্পতিবারের ঘটনা এর প্রেক্ষিতে। আম্বেদকর ইস্যুতে শাসক-বিরোধী সম্মুখ সমরে ঘটে যায় বেনজির ধাক্কাধাক্কি। ‘জনগণের কথা’-কে পিছনে ফেলে সাংসদদের এই আচরণে নাগরিক সমাজে ঝড় উঠেছে। কিন্তু এর পরেও তাঁদের সংবিৎ ফিরবে, সাংসদ পদের মর্যাদা ও সংসদের গরিমা রক্ষায় তাঁরা সচেষ্ট হবেন কি? এমন সম্ভাবনা অবশ্য কম।