সৎসঙ্গ ও আধ্যাত্মিক ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠে মানসিক তৃপ্তি। কাজকর্মের ক্ষেত্রে নতুন কোনও যোগাযোগ থেকে উপকৃত ... বিশদ
অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। বাবরি-বিতর্কের আবহে ১৯৯১ সালে উপাসনাস্থল (বিশেষ ব্যবস্থা) আইনে পরিষ্কার বলা ছিল, ১৯৪৭-এ স্বাধীনতার সময়ে যেখানে যেমনটা ছিল তেমনই রাখতে হবে। কোনও উপাসনাস্থলের চরিত্র বদল করা যাবে না। একমাত্র রাম জন্মভূমি বাবরি মসজিদ ছিল এই আইনের বাইরে। যদিও জ্ঞানবাপী মসজিদে সমীক্ষার অনুমতি দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত। মহামান্য আদালতের যুক্তি ছিল, এই রায়ে চরিত্র বদলের অনুমতি দেওয়া হয়নি। হয়েছে চরিত্র সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া। কিন্তু এই সমীক্ষা চালানোর অনুমতি পাওয়ার পরই অতি উৎসাহী হয়ে উঠল গেরুয়াবাহিনী! তার প্রমাণ সম্ভল। সেখানে বিতর্কের কারণ দেখিয়ে, সমীক্ষার রাস্তা খুলে দেয় নিম্ন আদালত। দেখা গেল, হিন্দুত্ববাদীদের উস্কানি, অবিশ্বাস্য দ্রুততায় সমীক্ষার কাজ শুরু করা এবং পুলিসের ভূমিকায় গণ্ডগোলের জেরে প্রাণ হারান চার জন। ওই রায়কে হাতিয়ার করেই আজমির শরিফসহ নতুন নতুন জায়গায় সমীক্ষার দাবি উঠতে শুরু করেছে। আইনজীবীদের একটি বড় অংশের দাবি, জ্ঞানবাপী সমীক্ষার অনুমতির পরই যেন প্যান্ডোরার বাক্স খুলে গেল। প্রশ্ন হল, এর শেষ কোথায়? কারণ মসজিদের চরিত্র বদলে মন্দিরের দাবি দিন দিন বেড়েই চলেছে। আজমির শরিফ যার নবতম উদাহরণ। অথচ আজমিরের দরগায় মানত করে বহু হিন্দুও চাদর চড়িয়ে আসেন। লোকসভা ভোটের আগে এই দরগায় চাদর চড়াতে দেখা গিয়েছে হিন্দুত্বের অন্যতম প্রধান উপাসক নরেন্দ্র মোদিকেও। অথচ সেই আজমির শরিফ আজ বিতর্কের মুখে!
ঘটনা হল, আরএসএসের অধীন বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন এবং তাদের হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটি ইতিমধ্যে গোটা দেশের ৩০ হাজার মুসলিম উপাসনা স্থলকে চিহ্নিত করে সেখানে সমীক্ষা চালানোর জোরালো সওয়াল শুরু করেছে। এই নজির বিশ্বের কোথাও আছে কি? যেখানে ধর্মান্ধতা কয়েকশো বছরের পুরনো স্থাপত্য ঐতিহ্যকে টেনে নামাতে চাইছে। এই মধ্যযুগীয় ভাবনাই নাকি ‘সনাতনী হিন্দুত্বের’ পরম্পরা! কোনও সভ্য দেশে (বাংলাদেশে অবশ্য নানা ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটছে) এমনটা হতে পারে কি না তা ভেবে দেখার সময় এসেছে। এই ভারতকে কি আর আধুনিক বলা যাবে?