পুজোপাঠে ও সাধুসঙ্গে মানসিক শান্তিলাভ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কর্মোন্নতি ও উপার্জন বৃদ্ধি। ... বিশদ
এই সংশয়, প্রশ্নের সুযোগ করে দিয়েছে সিবিআই নিজেই। একটা সময় বলা হতো, এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিধানে ‘ব্যর্থতা’ শব্দটির কোনও জায়গা নেই। কিন্তু গত এক দশকে, মোদি জমানায় বারবার দেখা গিয়েছে, কোনও ঘটনার তদন্তে সেই তৎপরতার লেশমাত্র নেই। কখনও বা আদালতে ভর্ৎসিত হয়েছে সিবিআই। এ রাজ্যের কথাই ধরা যাক, সাল ২০০৪। এক দুপুরে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ল খবরটি, বিশ্বভারতীর কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই ‘রবি-কোষ’ থেকে উধাও কবিগুরুর নোবেল পদক। তারপর কুড়ি বছর কেটে গেলেও নোবেল চুরির কিনারা করতে পারেনি সিবিআই। বাম আমলে নন্দীগ্রাম, ছোট আঙারিয়া, তাপসী মালিকের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাতেও সিবিআই তদন্তে সেভাবে কোনও বিচার হয়নি বলে অভিযোগ করেছে এ রাজ্যের শাসকদল। ২০১১-তে পালাবদলের পর সারদা, নারদ, শিক্ষা, পুরসভায় দুর্নীতি সহ অন্তত ৩০টি বড় ঘটনায় আদালতের নির্দেশে তদন্তভার গিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে। ফলাফল, প্রায় শূন্য। সর্বোচ্চ আদালতে সিবিআই নিজেই জানিয়েছে, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে তাদের জমে থাকা মামলার সংখ্যা ৯০৫টি। ওই সময়ে গোটা দেশে সিবিআইয়ের হাতে ছিল ৯ হাজার ৭৫৭টি মামলা। এর এক তৃতীয়াংশ চলছে দশ বছর ধরে, শ-পাঁচেক মামলার নিষ্পত্তি হয়নি বিশ বছরে। এই যাদের অতীত ‘রেকর্ড’ তারা কত দ্রুত আর জি কর কাণ্ডের তদন্ত শেষ করে রহস্যের কিনারা করবে, ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পিছনে থাকা কুশীলবদের প্রকাশ্যে আনবে, তা নিয়ে সংশয় থাকা অপ্রত্যাশিত নয়। তবে আশার কথা, সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই মামলা হাতে নিয়েছে। আজ, মঙ্গলবার সর্বোচ্চ আদালতে তার শুনানি হওয়ার কথা। আদালত হস্তক্ষেপ করলে তদন্তে গতি আসবে, দ্রুত কিনারায় পৌঁছনো যাবে— এই আশা ভরসা জোগাচ্ছে।
আর জি কর ঘটনা নিয়ে যে তোলপাড় আন্দোলন শুরু হয়েছে, বিশেষত মহিলারা যেভাবে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে পথে নেমেছেন তার জন্য কোনও তারিফই যথেষ্ট নয়। এর ‘শেষ দেখে ছাড়ার’ যে বজ্রনির্ঘোষ ঘোষিত হয়েছে, শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সব মানুষের তাতে অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে। কিন্তু পাশাপাশি হাসপাতাল জুড়ে অচল অবস্থা কাটিয়ে তোলার প্রয়োজনীয়তাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে স্বাভাবিক পরিষেবা চালু নেই। ভিন রাজ্যেও প্রায় একই হাল। এর শিকার হচ্ছেন লক্ষ লক্ষ অসুস্থ মানুষ। হাসপাতালে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরানোর কথা আদালত বলেছে, মুখ্যমন্ত্রীও আবেদন করেছেন। সকলেই চান সুবিচারের দাবি বুকে নিয়ে কাজে ফিরুন চিকিৎসকেরা। প্রাণ ফিরুক হাসপাতালগুলিতে।