পুজোপাঠে ও সাধুসঙ্গে মানসিক শান্তিলাভ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কর্মোন্নতি ও উপার্জন বৃদ্ধি। ... বিশদ
কোনও স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি, যা সেবার উদ্দেশ্যে দান করা হয় তাকে ওয়াকফ সম্পত্তি বলে। এই সম্পত্তি হস্তান্তর করা যায় না। সাধারণত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কবরস্থান, মসজিদ, গরিব মানুষের আশ্রয়ের জন্য ওয়াকফের জমি ব্যবহার করা হয়। ওয়াকফ সম্পত্তি যাদের দায়িত্বে থাকে আইনি ভাষায় তাদের ওয়াকফ বোর্ড বলে। দেশে ১৯৫৪ সালে প্রথম ওয়াকফ আইন তৈরি হয়। ১৯৬৪ সালে তৈরি হয় ওয়াকফ কাউন্সিল। এই কাউন্সিলের অধীনেই রয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে ওয়াকফ বোর্ড। ১৯৯৫ সালে ওয়াকফ আইন সংশোধন করে ওয়াকফের যাবতীয় ক্ষমতা কার্যত এই বোর্ডের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আর তারপর থেকেই ওয়াকফ বোর্ডের একচ্ছত্র অধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অনেক অভিযোগের মধ্যে অন্যতম হল, গরিব মুসলমান এমনকী অন্য ধর্মের মানুষের সম্পত্তিও জোরজবরদস্তি নাকি দখল করে রেখেছে ওয়াকফ বোর্ড। কারণ ওয়াকফ আইনের ৪০ নম্বর ধারায় বলা আছে, কোনও সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসেবে ঘোষণা করার অধিকার একমাত্র এই বোর্ডের। মোদি নেতৃত্বাধীন সরকারের আপত্তি এখানেই। সরকার ৪৪টি সংশোধনী সহ নতুন বিলে কার্যত ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতায় রাশ টেনে বলেছে, কোন সম্পত্তি ওয়াকফের সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন জেলাশাসক বা কালেকটরেট। ওয়াকফ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হবেন সংখ্যালঘু মন্ত্রী। কাউন্সিলে দু’জন মুসলিম মহিলা সদস্যের পাশাপাশি থাকবেন দু’জন অমুসলিম সদস্যও। বিলে আরও বলা হয়েছে, যাঁরা মুসলিম এবং ন্যূনতম পাঁচ বছর ধরে ইসলাম ধর্ম পালন করছেন তাঁরাই সম্পত্তি দান করতে পারবেন। ওয়াকফ সম্পত্তি অডিট করতে পারবে ‘ক্যাগ’।
এইসব সংশোধনীই আসলে সরকারি হস্তক্ষেপ বলে মনে করেন বিরোধীরা। দেশে এখন ওয়াকফের হাতে ৯.৪ লক্ষ হেক্টর জমি রয়েছে। যা আত্মসাৎ বা নজরদারি করাই সরকারের লক্ষ্য বলে অভিযোগ বিরোধীদের। তাই শাসক বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের পাল্টা প্রশ্ন, ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিম প্রতিনিধি থাকলে অযোধ্যায় রামমন্দির কমিটিতে কি মুসলিম প্রতিনিধি থাকবে? তাছাড়া ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা জেলাশাসকের হাতে যাওয়া মানে সরাসরি সরকারের হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া। এই বিল পাশ হলে কার্যত ওয়াকফ বোর্ডের কোনও গুরুত্বই থাকবে না। বিরোধীরা এই সঙ্গত প্রশ্নও তুলে বলেছে, একজন সদ্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে কেন সম্পত্তি দান করার জন্য তাঁকে পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে? সন্দেহ নেই বিরোধীদের প্রশ্নগুলি প্রাসঙ্গিক এবং গুরুতর। একইরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ওয়াকফের বিরুদ্ধে ওঠা কিছু অভিযোগ। তাই ওয়াকফ বোর্ডকে সঠিকভাবে কীভাবে পরিচালনা করা যায় তা ভেবে দেখা দরকার সব পক্ষের। কিন্তু সংস্কার, সংশোধনের নামে হস্তক্ষেপ, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত কোনওভাবেই কাম্য নয়। এটা আশা করি মনে রাখবে মোদি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার।