সামাজিক কর্মে সম্মান লাভ। স্ত্রী’র শরীর-স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। দেরীতে অর্থপ্রাপ্তি। ... বিশদ
প্রধানমন্ত্রীর নামে এই দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পের সূচনাকালে গণ্যমান্য অতিথি ও পারিষদবর্গকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত ছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গতিশক্তি মানে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিকাঠামোর উন্নয়ন, দেশের অগ্রগতির স্বার্থে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিটা সত্যিই ভীষণ জরুরি। এই চমকপ্রদ প্রকল্পের হাত ধরে দেশের কর্মসংস্থান ও অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আসবে—এমনটাই ছিল সেদিনের প্রতিশ্রুতি। প্রকল্পের গুণাগুণ তুলে ধরতে কেন্দ্রের এক মন্ত্রী আরও একধাপ এগিয়ে জানিয়ে দেন, ২০২৪ সালের মধ্যে এ দেশের সড়ক পরিকাঠামো আমেরিকাকে ছাপিয়ে যাবে। প্রতিদিন তৈরি হবে ৫০ কিলোমিটার নতুন হাইওয়ে। উদ্দেশ্য নিঃসন্দেহে মহৎ। প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি প্রকল্পের লক্ষ্যই হল ২৫ হাজার কিলোমিটার হাইওয়ে নির্মাণ। সঙ্গে ১০০টি নতুন কার্গো টার্মিনাল, রোপওয়ে প্রকল্প ও ৪০০ বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালু করা। প্রকল্পের ঘোষণাকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেটেও তার উল্লেখ করা হয়। কিন্তু বাস্তব সত্যটি হল, এক্ষেত্রেও সেই স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার উপক্রম! কেন গতিশক্তি প্রকল্প গতি পাচ্ছে না তার কারণ অজানা। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম চার মাস শেষের ফলাফল বলছে, গতিশক্তি প্রকল্পের কাজ এখনও নাকি শুরুই হয়নি।
ইচ্ছে থাকলে যে উপায় হয় তা দেখিয়ে দিয়েছিলেন মোদির পূর্বসূরি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ি। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নতির জন্য এখনও দেশের মানুষ তাঁকে স্মরণ করেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদি তো শুধু স্বপ্ন দেখাতেই ভালোবাসেন। প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য সরকারি তরফে যে ধরনের তৎপরতার প্রয়োজন তা নেওয়া হয় না। ফলে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের রেকর্ড বাড়ে। মোদি জমানায় সরকারি কাজে গতির বড়ই অভাব। গতিশক্তি প্রকল্পই তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। দেখা গিয়েছে, চলতি আর্থিক বছরের প্রথম চার মাসে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত হাইওয়ে নির্মাণের গতি ক্রমান্বয়ে কমেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ঘোষণাই সার, পরিকল্পনার ধারে কাছে নেই হাইওয়ে নির্মাণ প্রকল্প। কেন্দ্রীয় সরকারের পুরনো হাইওয়ে প্রকল্পের কাজই চলছে ধীরগতিতে। সড়ক মন্ত্রকের রিপোর্টেই বলছে, এই প্রথমবার চার মাসে হাইওয়ে নির্মাণের কাজ ১৫ শতাংশ কমেছে। মন্ত্রীর ঘোষণা মতো ৫০ কিলোমিটার নয়, দেশে এখন প্রতিদিন গড়ে হাইওয়ে তৈরি হচ্ছে ১৮ কিলোমিটার। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাইওয়ে নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা যে পূরণ হবে না সেটা নিশ্চিত। গতিশক্তি প্রকল্পের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে। বার বার প্রমাণ হচ্ছে মোদি জমানায় কাজের চেয়ে বাগাড়ম্বরই বেশি। নির্ধারিত সময়সীমায় কাজ শেষ না হওয়াটাই মোদি জমানার রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।