সামাজিক কর্মে সম্মান লাভ। স্ত্রী’র শরীর-স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। দেরীতে অর্থপ্রাপ্তি। ... বিশদ
মুখ্যমন্ত্রী একনাথ সিন্ধের পাশে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে উপমুখ্যমন্ত্রী মেনে নিয়েছে ১০৬ বিধায়কের দল বিজেপি। সেও একমাস হয়ে গিয়েছে। ৩০ জুন মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রী শপথ নিয়েছেন। কিন্তু এখনও রাজ্য মন্ত্রিসভা গঠন করা যায়নি। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, উদ্ধবের সঙ্গ ছেড়ে আসা শিবসেনার বাকি ৩৮ জনই যথেষ্ট উচ্চাকাঙ্ক্ষী। ‘পুরস্কার’ হিসেবে প্রত্যেকেই শাঁসালো দপ্তরের দাবিতে নাকি অনড়। অন্যদিকে, দেবেন্দ্র ফড়নবিশের দলীয় সতীর্থরাও কম যান না। বিজেপিরও বেশিরভাগ বিধায়ক এই মন্ত্রিসভায় ও সরকারে ‘প্রাপ্য’ গুরুত্ব পাওয়ার দাবিদার। সব মিলিয়ে হয়তো একনাথ ও ফড়নবিশের ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা! ব্যাপারটা এখনও কত জটিল তা বেশ বোঝা যায়, এই সরকারের দিল্লিওয়ালা অভিভাবকদের দিশাহারা অবস্থা দেখে। মন্ত্রিসভা গঠনের ফর্মুলা জেনে নিতে মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রী সম্প্রতি মোটে ছ’বার দিল্লি সফর করেছেন! সাক্ষাৎ করেছেন মোদি, শাহ এবং নাড্ডার সঙ্গেও। কিন্তু মন্ত্রিসভার জট জটই রয়ে গিয়েছে। সেখানে আরও পেকে উঠেছে প্রতিহিংসার রাজনীতি। আর্থিক দুর্নীতি মামলায় রবিবার ইডি গ্রেপ্তার করেছে সঞ্জয় রাউতকে। তিনি শিবসেনার সাংসদ ও মুখপাত্র। সঞ্জয় রাউতের আরও বড় পরিচয়—তিনি একনাথের কট্টর সমালোচক এবং উদ্ধবের ডানহাত। সব মিলিয়ে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র মুম্বই তথা মহারাষ্ট্র এক গভীর সঙ্কটে পড়ে গিয়েছে। সাংবিধানিক সঙ্কটসহ যেকোনও বিরূপ পরিস্থিতিতে রাজ্যের পাশে থাকার কথা সংশ্লিষ্ট রাজ্যপালের। পরিতাপের বিষয়, শুক্রবার ভগৎ সিং কোশিয়ারি এমন এক বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেছেন যে তাতে অধিকাংশ দল এবং সব ধরনের মানুষ তাতে ভয়ানক রুষ্ট। রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধির মুখে এই অবাঞ্ছিত বক্তব্যকে অনেকে মারাঠি অস্মিতার অপমান হিসেবেই দেখছেন।
সব মিলিয়ে গত কয়েক মাস যাবৎ মুম্বই ও মহারাষ্ট্রের অত্যন্ত খারাপ সময় যাচ্ছে। দীর্ঘ অস্থিরতার পর মুম্বইতে এমন একটি সরকার তৈরি হল যেটি বাস্তবে স্থবির। গোটা সরকারই একটানা এতকাল নিষ্ক্রিয় এবং শাসকদল ধান্দাবাজিতে ব্যস্ত থাকলে উন্নয়ন দূর অস্ত দৈনন্দিন কাজকর্মও সুষ্ঠুভাবে চলা অসম্ভব। এই অনভিপ্রেত পরিস্থিতির দায় ক্ষমতালিপ্সু বিজেপির উপরেই বর্তায়। এই যাদের রেকর্ড তারাই কি এবার ঝাড়খণ্ডের দিকে তাদের কালো হাত বাড়াচ্ছে? শনিবার বিপুল পরিমাণ নগদ টাকাসমেত হাওড়ায় রাজ্য পুলিসের হাতে পাকড়াও হয়েছেন ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়ক। প্রাথমিক তদন্তে প্রকাশ, তাঁরা ফিরছিলেন বিজেপির অসম ডেরা ছুঁয়েই। কোন ডেরা? যে ডেরা সদ্য মহারাষ্ট্রে অপারেশ লোটাস সফল করে নিন্দা ও বিতর্কের কেন্দ্রে। রবিবার রাঁচির একটি থানায় এক কংগ্রেস বিধায়ক লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন যে, অসমের চক্রটি তাঁকেও বিপুল অর্থ এবং শাঁসালো মন্ত্রিত্বের টোপ দিয়েছিল। সব মিলিয়ে যে খবর রাজনৈতিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে, তা ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য নতুন এক দুঃসংবাদ। কিন্তু এখানে ইডি, সিবিআই প্রভৃতি কেন্দ্রীয় এজেন্সির কোনও ইতিবাচক ভূমিকা নজরে পড়ে না। এই ‘সিলেকটিভ’ তৎপরতায় তাদের ভূমিকা নিরপেক্ষতা ফের একবার প্রশ্নের মুখে পড়ল। ভারতীয় গণতন্ত্রের গর্ব, স্বশাসিত সংস্থাগুলির পবিত্রতা ঐতিহ্য মোদি-যুগ একাই ভূলুণ্ঠিত করে ছাড়ছে। কেন্দ্রীয় শাসক যদি এখনও সংযত না-হয় তবে এর রাজনৈতিক মূল্য গুনতে হবে তাকেও।