সামাজিক কর্মে সম্মান লাভ। স্ত্রী’র শরীর-স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। দেরীতে অর্থপ্রাপ্তি। ... বিশদ
কিন্তু তাতেও কি ক্ষান্ত দিতে জানে ভারতের রাজনীতি? নিয়মমতো তৈরি সরকারকে কি মেনে নেয় মানুষ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত সব দল? না। কোনও কোনও নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়ারই ষড়যন্ত্র পাকতে থাকে ভিতরে ভিতরে। অতীতে একাধিক পার্টির সরকার এমন চক্রান্তের শিকার হয়েছে। অনেকগুলি রাজ্যে সেই দৃষ্টান্তের স্মৃতি এখনও দগদগে। টাটকা উদাহরণ মহারাষ্ট্র। সেখানে ফেলে দেওয়া হয়েছে উদ্ধব থ্যাকারের সরকার। রাজনৈতিক মহলের অভিযোগ, দিল্লির ইন্ধনে সিন্ধে-ফড়নবিশ সরকার সেখানে গদিয়ান হয়েছে স্রেফ কালো টাকার জোরে। বিরোধীদের আশঙ্কা, একই কায়দায় ঝাড়খণ্ডের জেএমএম-কংগ্রেসের জোট সরকারও ফেলার চক্রান্ত জারি রয়েছে। এই সন্দেহ গভীর হয়েছে সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়কের গোলমেলে গতিবিধি চিহ্নিত হওয়ায়। অসমের এক বিতর্কিত রাজনৈতিক ডেরা ছুঁয়ে ফেরার পথে তাঁরা বিপুল পরিমাণ নগদ টাকাসমেত পুলিসের হাতে ধরা পড়েন কলকাতার উপকণ্ঠে হাওড়ায়। পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি এই ঘটনার তদন্তে নেমে আবার অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। বুধবারের ঘটনা। হাতে কোর্টের সার্চ ওয়ারেন্ট থাকা সত্ত্বেও সিআইডি অফিসারদের কাজে বাধা দিয়েছে গুয়াহাটিতে হিমন্ত বিশ্বশর্মার পুলিস এবং দিল্লিতে অমিত শাহের পুলিস। বাংলার সিআইডি টিমকে গুয়াহাটি এয়ারপোর্ট থেকে বস্তুত অপরাধীর মতোই জোর করে তুলে নিয়ে যায় অসম পুলিস! অন্যদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পুলিস দিল্লিতে পৌঁছনো সিআইডি টিমকে আটকে রাখে দিনভর! স্বভাবতই সিআইডির তদন্ত এগয়নি। তাদের তদন্তের ক্ষতি হওয়ারও আশঙ্কা থাকছে। সব জেনেও অসম পুলিস এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পুলিস দায় এড়ানোর অধিক সহযোগিতা কিছু করেনি। অভিযোগ করেছে সিআইডি। অন্যদিকে, অভিযুক্ত তিন কংগ্রেস বিধায়ক সিআইডি তদন্তের হাত থেকে বাঁচতে মরিয়া। এই ঘটনার তদন্ত সিবিআইকে হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
একদিকে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি, অন্যদিকে অসম ও দিল্লি পুলিস। প্রতিটি সংস্থাই সংবিধান স্বীকৃত এবং দেশীয় আইন মেনে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে ন্যস্ত। তা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে সমন্বয়ের এই অভাব দুর্ভাগ্যজনক। আরও দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে—অসম ও দিল্লি পুলিস কর্তৃক বাংলার আইনি প্রতিষ্ঠানের প্রত্যক্ষ বিরোধিতার দৃষ্টান্ত। এই ঘটনায় দুর্বৃত্ত ছাড়া আর কারও উৎসাহিত হওয়ার কথা নয়। বিষয়টি নিয়ে সংসদে হট্টগোল হলেও মোদি সরকার নির্বিকার। অন্যদিকে, এমন একটি ইস্যুতে বঙ্গ বিজেপি দিল্লির পাশে দাঁড়িয়ে এটাই বুঝিয়ে দিল না কি—বাংলার স্বার্থ এখনও তাদের সিলেবাসের বাইরে? সব মিলিয়ে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে, ভারতীয় রাজনীতির ভরকেন্দ্র এখনও টাকার পুতুল। পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র জনগণের হয়ে ওঠার মতো পরিণতি লাভ করার থেকে বহু দূরেই অবস্থান করছে।