সামাজিক কর্মে সম্মান লাভ। স্ত্রী’র শরীর-স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। দেরীতে অর্থপ্রাপ্তি। ... বিশদ
কারণ গত দু’দশক ধরে ভারতও ছিল জাওয়াহিরির নিশানায়। শুধু হুমকি নয়, ২০১৪ সালে ভারতে আল কায়েদার আঞ্চলিক বিকাশের পরিকল্পনা করেন তিনি। কাশ্মীরকে প্যালেস্তাইনের সঙ্গে তুলনাও করেছিলেন। সর্বশেষ বিজেপির সাসপেন্ড হওয়া নেত্রী নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের পর জাওয়াহিরি হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, গুজরাত, মুম্বই, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশে আত্মঘাতী হামলা চালাবে আল কায়েদা। ভারতে নতুন করে ক্যাডার নিয়োগেরও হুঁশিয়ারি ছিল। এমনকী কর্ণাটকে হিজাব বিতর্ক নিয়েও তাঁকে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে। ভারতীয় সেনা ও সাধারণ মানুষের উপর তীব্র ঘৃণা ছড়িয়ে আক্রমণ করতে বার বার বার্তা দিয়েছেন আল কায়েদা প্রধান। তাই মার্কিন বাহিনীর এই নিখুঁত খতম অভিযান ভারতের কাছেও খুশির খবর হলেও এখনই নিশ্চিন্ত হতে পারছে না ভারত। একথা ঠিক, লাদেনের পর বিশ্বের সবচেয়ে বড় জঙ্গির মৃত্যুর সাক্ষী থাকল বিশ্ব। তাই বিশ্বের শান্তিকামী মানুষ ও বহু রাষ্ট্রই এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে।
তবু এত বড় ঘটনা একটি প্রশ্নকে সামনে এনে দিল। এই শত্রুকে শেষ করতে কাদের সাহায্য নিয়েছিল আমেরিকা? এটা জানা ভারতের জন্য জরুরি। যদি নিজস্ব স্বার্থপূরণের তাগিদে সন্ত্রাসবাদের আঁতুড়ঘর পাকিস্তানের এক্ষেত্রে অবদান থাকে তাহলে ভারতের পক্ষে তা কতটা স্বস্তিদায়ক হবে? প্রশ্নটা উঠছেই। কারণ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে খাদের কিনার থেকে ভেসে উঠতে বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে বিশাল পরিমাণ ঋণ পাওয়ার চেষ্টা করছে পাকিস্তান। এর জন্য তাদের প্রয়োজন আমেরিকার সাহায্য। তাই ইসলামাবাদ যদি নিজেদের স্বার্থপূরণের উদ্দেশ্যে আমেরিকার শত্রুকে শেষ করতে সাহায্য করে থাকে তাহলে তারা এর চড়া মূল্য আদায় করবেই। বিশেষজ্ঞদের একাংশের এই ধারণা একেবারেই অমূলক নয়। আর ভারতের প্রতি পাকিস্তানের বৈরী মনোভাব ও ভারত-বিরোধিতার কথা কারও অজানা নয়। তাই জাওয়াহিরি খতম অভিযানে আমেরিকাকে কারা সহযোগিতা করেছে তা ভারতকে জানতে হবে। এই জঙ্গিনিধনের ঘটনার পর ভারত তাই নীরব থেকে যে কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে তার যৌক্তিকতাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। কারণ অতীত অভিজ্ঞতাও বলছে, পাকিস্তানের ভারত-বিরোধিতা জলের মতো স্পষ্ট হলেও আমেরিকা তার নিজের স্বার্থে সেই পাকিস্তানেরই হাত ধরতে দ্বিধা করে না। সর্বোপরি আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক যোগসূত্র আছে। আর কাবুল এও আশ্বাস দিয়েছে, আফগানিস্তানের মাটিকে ভারত-বিরোধী কোনও গোষ্ঠীকেই তারা ব্যবহার করতে দেবে না। এই সম্পর্ক নষ্ট করতেই কি পাক তালিবানের মদতে পাকিস্তান থেকে কাবুলে খাঁটি গেড়েছিলেন জাওয়াহিরি? বিষয়টা ভারতকে ভাবাচ্ছে। তাই, আল কায়েদার শীর্ষনেতা নিহত হওয়ার পর উচ্ছ্বাসে গা না ভাসিয়ে নীরব থেকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে চাইছে সাউথ ব্লক। ভারতের এই কৌশলগত অবস্থানে বুদ্ধিমত্তার ছাপ স্পষ্ট।