সামাজিক কর্মে সম্মান লাভ। স্ত্রী’র শরীর-স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। দেরীতে অর্থপ্রাপ্তি। ... বিশদ
কিন্তু বাস্তব অন্যকথা বলে। বিজেপির কট্টর সমর্থকরাও আত্মজিজ্ঞাসায় উত্তর পাবেন যে, কথার খেলাপে নরন্দ্রে মোদির জুড়ি নেই। তাঁর জমানায় আম জনতার আর্থিক উন্নতি হয়নি। ধনী আরও ধনাঢ্য হয়েছে। ধন ও লিঙ্গ বৈষম্যও বেড়েছে। বেড়েছে ধর্ম এবং জাতপাতের মধ্যে বিভেদ ও বিরোধ। জাতীয় শিক্ষানীতির নামে যে সঙ্কীর্ণ রাজনীতি দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে সম্পৃক্ত করতে চাইছে তাতে জ্ঞানবিজ্ঞানের জয়যাত্রা কতটা অক্ষুণ্ণ থাকবে, তা নিয়ে বিরাট প্রশ্নচিহ্ন মাথা তুলেছে। ‘স্বদেশি’র বুলি আওড়ানো বিজেপি জমানাতেই দেশীয় শিল্প-বাণিজ্যের নাভিশ্বাস উঠেছে সবচেয়ে বেশি। রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পক্ষেত্র কর্পোরেটের লোলুপদৃষ্টির সামনে অসহায় বোধ করছে। চারদশকের মধ্যে সর্বাধিক বেকারত্ব উপহার দিয়েছে মোদি জমানা, অথচ এই জমানার আটবছরে ১৬ কোটি নতুন চাকরি হওয়ার কথা ছিল। পেট্রল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস, ভোজ্য তেলসহ বহু দরকারি জিনিস অগ্নিমূল্য। গরিবের ব্যবহার্য সামান্য ভোগ্যপণ্যেও বাড়ানো হয়েছে জিএসটি। সব মিলিয়ে গরিব ও মধ্যবিত্তের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে মোদির সরকার। তিনটি কৃষি আইন বাতিল করতে বাধ্য হলেও কৃষকের ক্ষোভের নানা বিষয় অমীমাংসিত রেখে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশের এমন কোনও শ্রেণির নাম করা যাবে না যে তারা খুশি বা ভালো আছে। দেশজুড়ে নানা ক্ষেত্রে প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে।
সাধারণ মানুষ প্রধানমন্ত্রীর জবাব চায়। কিন্তু তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে, থুড়ি, ভোটের মরশুম ছাড়া! জনপ্রতিনিধি (এমপি) এবং সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি জবাব দিতেই পারেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদি কখনও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন না। সংসদেও তিনি ‘মৌনী বাবা’! অতএব, দেশবাসী প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জানতেই পারে না। রেডিও মারফত মোদি কিছুদিন অন্তর ‘মন কি বাত’ শোনান বটে, কিন্তু ওই চর্বিতচর্বণে জনগণের প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলে না। এটাই কি অন্য দল এবং অন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যথাক্রমে বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদির পার্থক্যের চেহারা! তাই ডেরেকের কণ্ঠে যে আক্ষেপ শোনা গিয়েছে তা যথার্থ, দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান বেঙ্কাইয়াও সংসদে প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছ থেকে একটিও প্রশ্নের উত্তর আদায়ের চেষ্টা করেননি! অথচ তাঁর গোটা মেয়াদকাল এই নিষ্ক্রিয়তার ভিতর দিয়েই অতিবাহিত হয়ে গেল! কিন্তু কেন বেঙ্কাইয়ার এই নীরবতা? সত্যি, এখনই তা জানার সুযোগ আমাদের নেই। ডেরেকের অনুমান সত্যি হলে, হয়তো একদিন বেঙ্কাইয়ার আত্মজীবনীতেই তা আমরা জানব। অতএব, আমরা আম জনতা প্রতীক্ষায় থাকি আপাতত।