সামাজিক কর্মে সম্মান লাভ। স্ত্রী’র শরীর-স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। দেরীতে অর্থপ্রাপ্তি। ... বিশদ
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, দুধ, লস্যি, মুড়ি, চাল, ডালের উপর যেভাবে জিএসটি চাপিয়েছে কেন্দ্র তাতে সরকারের উদ্দেশ্য বোঝা যাচ্ছে। এবার কি তাহলে মৃত মানুষের থেকেও জিএসটি আদায়ের জন্য শ্মশানের চুল্লিতেও জিএসটি চাপাবে কেন্দ্র? সরকার পক্ষের নির্লজ্জ সওয়াল ছিল, শ্মশানে বা কবরখানায় অন্তিম সৎকারে কোনও জিএসটি লাগে না। অর্থমন্ত্রী হাস্যকর দাবি করে বলেছেন, জ্বালানি থেকে আদায় করা শুল্ক উন্নয়নের কাজে খরচ করা হচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দেশের অর্থমন্ত্রীর এই ‘অল ইজ ওয়েল’ বক্তব্য দেশের মানুষের সঙ্গে যেন বড় ধরনের প্রতারণারই শামিল। কারণ শুধু বিরোধী নয়, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে বাস্তব অবস্থা ও ভবিষ্যৎ আশঙ্কার কথাই শুনিয়েছে খোদ দেশের সর্বোচ্চ ব্যাঙ্ক। তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট, খাদ্য ও জ্বালানি ছাড়াও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম এখনও কমেনি। মূল্যবৃদ্ধি ও আর্থিক মন্দার জোড়া ফলায় দিশাহারা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তাই শুক্রবার আবারও রেপো রেট বাড়িয়েছে। অর্থমন্ত্রীর উল্টো বক্তব্য রেখে আরবিআই মেনে নিয়েছে, নিত্যপণ্যের দাম এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তাই মনে হয় মূল্যবৃদ্ধি কমানোর লক্ষ্যেই রেপো রেট বাড়ানোর চিরাচরিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল শীর্ষ ব্যাঙ্ক। বলাবাহুল্য, এই উদ্দেশ্যেই মে মাস থেকে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে রেপো রেট। তবু তারা এই মুহূর্তে মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরার কোনও সম্ভাবনাই দেখছে না!
এই কঠিন পরিস্থিতিতে একেবারে খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে আম জনতা। কারণ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্তের জেরে ব্যাঙ্কের ঋণের উপর সুদের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা প্রবল। একদিকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, অন্যদিকে মাঝেমধ্যেই বেড়ে চলেছে বাড়ি গাড়ির জন্য ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণের উপর সুদের হার। গত তিন মাসে সুদ বৃদ্ধি অর্থাৎ রেপো বেড়েছে ১৪০ বেসিস পয়েন্ট। দেশের আর্থিক পরিস্থিতি কতটা সঙ্গিন হলে এমনটা ঘটে! অবশ্য শীর্ষ ব্যাঙ্কের সাফাই, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখতেই নাকি এই পদক্ষেপ। কিন্তু রেপো রেট বাড়লে গরিব মধ্যবিত্তের সমস্যা যে বাড়ে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ বেড়ে যায় তাদের ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণের সুদের হারও। মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে এই বাড়তি সুদের হার গুনতে হয় তাঁদের। এর ফলে যাঁদের ইএমআই গুনতে হয় তাঁরাই বেশি সমস্যায় পড়বেন। তাই উদ্বেগ বাড়ছে ঋণগ্রহীতাদের। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এখন মূল্যবৃদ্ধিকে শ্লথ করতে চাহিদা কমিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। জোগান বৃদ্ধি হলে তবেই কিন্তু এই পথে হেঁটে সুফল মিলবে। না হলে চাহিদা কমায় আর্থিক বৃদ্ধিও মার খেতে পারে। তাই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রকেই সবার আগে সচেষ্ট হতে হবে, বাড়াতে হবে জোগান। না হলে সাধারণ মানুষের কোনও সুরাহা মিলবে না। এই দিশাহীন সরকারের ভ্রান্ত আর্থিক নীতির জেরে গরিব, মধ্যবিত্ত যে তিমিরে সেই তিমিরেই থেকে যাবে।