সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন। অর্থপ্রাপ্তির যোগ ... বিশদ
পাঁশকুড়া শহরের চাঁপাডালি, মধুসূদনবাড়, বাহারগ্রাম, সুড়ানানকার প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দারা অতীতে এরকম ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হননি। নদীবাঁধ ভাঙার পর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এভাবে দুর্ভোগ ঘনিয়ে আসবে তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি। বিদ্যুৎ না থাকায় পানীয় জলের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। জলের পাউচ কিংবা রান্না করা খাবার শহরের ভিতরে যাওয়ার আগেই শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এদিন সকালে ত্রিপলভর্তি একটি গাড়ি বাহারগ্রামে আসে। মুহূর্তের মধ্যে তা বিলি হয়ে যায়। শহর এলাকায় এমন দুর্ভোগ নেমে আসবে বাসিন্দারা কল্পনা করতে পারছেন না। পাঁশকুড়া স্টেশন যাওয়া রাস্তায় বুকসমান জল। সারি সারি দোকান, ব্যাঙ্ক, অফিস সব প্রতিষ্ঠানে শাটার নামানো। সেই শাটারের বেশিরভাগটাই জলের তলায়।
১৬ নম্বর জাতীয় সড়কে মঙ্গলদ্বারি থেকে ক্ষীরাই যাওয়ার রাস্তার দু’ধারে সারি সারি ত্রিপল খাটিয়ে দুর্গতরা আশ্রয় নিয়েছেন। গবাদি পশু আর মানুষ তাঁবুর নীচে সহাবস্থান করছেন। গোটপোতার মইনুদ্দিন খান, লালচকের মায়া ডাং ও খোকা ডাং সহ শয়ে শয়ে বন্যার্তদের ঠিকানা এই রাস্তা। মায়াদেবী বলেন, আমাদের ছোট তিন ছেলেমেয়ে। রাতেরবেলা বন্যার জল বাড়িতে ঢোকে। বাচ্চাদের কাঁধে, বুকে জড়িয়ে এক কাপড়ে বাড়ি ছেড়ে এখানে এসেছি।
বৃহস্পতিবারও গোবিন্দনগর পঞ্চায়েতের মঙ্গলদ্বারি, মানুর সহ বিভিন্ন জায়গায় দুর্গতদের উদ্ধার করে এনডিআরএফ। আবার, অনেকে বাড়ি ছেড়ে ত্রাণশিবিরে আসতে চাইছেন না। জলমগ্ন বাড়ির ফাঁকা ছাদে জিনিসপত্র তুলে সেখানেই আশ্রয় নিয়েছেন। আলু, পেঁয়াজ, মুড়ি প্রভৃতি খাদ্যসামগ্রীর আকাল। বুধবার থেকেই পাঁশকুড়া সব্জি মার্কেট বন্ধ। যেকারণে সব্জির সরবরাহ নেই। আনাজপাতি মহার্ঘ্য হয়ে উঠেছে। এতে আরও বিপদে পড়েছেন দুর্গতরা।
পাঁশকুড়ায় সড়ক যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বুধবারই তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। জেলা সদরের সঙ্গে পাঁশকুড়ার যোগাযোগের মাধ্যম ছিল কলকাতা-মুম্বই ১৬নম্বর জাতীয় সড়ক। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সেই জাতীয় সড়কে বিভিন্ন জায়গায় জল ওঠে। বেলা যত গড়িয়েছে জাতীয় সড়ক তত বেশি জলমগ্ন হয়েছে। এজন্য মুম্বই রোডে একাধিক জায়গায় কলকাতামুখী একটি লেন বন্ধ করে দিতে হয়েছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁশকুড়া ছাড়ার পর জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী এবং পুলিস সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য দীর্ঘক্ষণ অন্যান্য অফিসারদের নিয়ে মিটিং সারেন। কীভাবে ত্রাণসামগ্রী দুর্গত এলাকায় পৌঁছে দেওয়া যায় তা নিয়ে পরিকল্পনা করেন। এদিন দুপুরে বিভিন্ন ত্রাণশিবিরে ভাত, সব্জি, ডিমের তরকারি হয়। রাতে রান্না করা খিচুড়ি নৌকায় চাপিয়ে দুর্গত এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রশাসন সর্বতোভাবে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।