সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন। অর্থপ্রাপ্তির যোগ ... বিশদ
বেশ কিছুদিন ধরে আরসিদা খাতুন (১৪) নামে ওই ছাত্রীটিকে প্রেমের প্রস্তাব দিচ্ছিল বাবু। পথে-ঘাটে পিছু নিয়ে জ্বালাতনও করত। কিন্তু কিছুতেই তার প্রস্তাবে সায় দিচ্ছিল না ছাত্রীটি। সেই কারণেই তাকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিসের প্রাথমিক ধারণা। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে চলে আসেন কাটোয়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রী, আইসি সহ বিশাল পুলিস বাহিনী। তাঁরা বাস সহ দেহটি থানায় নিয়ে যান। পরে দেহটি কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠায় ময়নাতদন্তের জন্য। বাসটিকে আটক করা হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিস সুপার আমনদীপ বলেন, ‘আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। অভিযুক্ত যুবককে বিকেলে কোমরপুরের একটি জঙ্গল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বাড়ি হরিপুর গ্রামে।’ আরসিদার বাড়িও ওই হরিপুরে। সে কাটোয়া শহরের দুর্গাদাসী চৌধুরানী বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত।
ছাত্রীটির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন তিনেক আগে আরসিদা তার মাসির সঙ্গে কেতুগ্রামের আরনা গ্রামে গিয়েছিল। ওই গ্রামে তার মামাবাড়ি। এদিন, আরসিদা তার মাসি শম্পা বিবির সঙ্গে সকাল দশটা নাগাদ আরনা গ্রাম থেকে কান্দরা যায়। সঙ্গে শম্পা বিবির সন্তানও ছিল। কেতুগ্রাম ১ ব্লক অফিসে কিছু কাজের জন্য তারা যায়। কিন্তু অফিস ছুটি থাকায় তারা ফিরে আসে। এরপর তারা প্রথমে কান্দরা থেকে টোটোয় চেপে প্রায় পাঁচ কিমি দূরে কোমরপুর মোড়ে আসে। সেখান থেকে তারা সাড়ে বারোটা নাগাদ কুচুটিয়া-কাটোয়া বাসে চাপে। আরসিদা ও তার মাসিকে অনুসরণ করে বাবু শেখও কোমরপুরেই বাসে ওঠে। বাসের প্রথম দরজার প্রথম সিটেই জানালার ধারে বসেছিল আরসিদা। তার পাশেই বসেছিলেন মাসি শম্পা বিবি। কাঁদতে কাঁদতে মাসি বলছিলেন, ‘আচমকা ওই যুবক আরসিদার গলায় ধারালো ছুরি বসিয়ে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে কেটে দেয়। আমি বাধা দিতে গেলে ছিটকে ফেলে দেয়। আমি তখন তার জামার কলার ধরি। কিন্তু আমাকে ছিটকে ফেলে দিয়ে কোমরপুর রেলগেট থেকে কিছুটা দূরেই নেমে পালিয়ে যায়।’ বাসযাত্রীরা আতঙ্কে চিৎকার জুড়ে দিয়েছেন। আরসিদার রক্তে ভেসে যাচ্ছে বাসের প্রথম দরজার পা-দানি। কিছুক্ষণ ছটফট করার পর নিথর হয়ে যায় সে। তড়িঘড়ি বাস থামিয়ে দেয় চালক। খালাসি রবীন্দ্রনাথ পালের কথায়, ‘আমি প্রথমে ভেবেছিলাম কোনও বাচ্চা পড়ে গিয়েছে। গেট থেকে উঠে দেখি মেয়েটির সারা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। বাসের মেঝেতে শুয়ে গোঙাচ্ছে আর লাফাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর সে থেমে গেল! সে এক বিভীৎস দৃশ্য! চোখে দেখা যায় না! বাসে তখন মেরেকেটে ১০ থেকে ১২ জন যাত্রী ছিল। ছেলেটা পিছনের দিক দিয়ে নেমে পালিয়ে গেল।’
হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা পেশায় মুটিয়া আরশেদ শেখ ও ঝর্না বিবির দুই মেয়ে। বড় মেয়ে আরসিদা। ছোট মেয়ে প্রিয়াঙ্কা ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। মেয়ের খুনের খবর পেয়েই বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন বাবা ও মা। আরসিদার কাকা মন্টু শেখ বলেন, ‘ওই ছেলেটি কেরলে থাকত। ছ’মাস আগে বাড়ি আসে। আমার ভাইজিকে উত্যক্ত করত। আমাদের সন্দেহ এর পিছনে আরও কেউ যুক্ত রয়েছে। আমরা পুলিসকে সব জানিয়েছি। ওই যুবকের কঠোর শাস্তি চাই।’