সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন। অর্থপ্রাপ্তির যোগ ... বিশদ
সম্প্রতি, রাজদীপের এই উত্তর দেওয়ার পুরো ভিডিওটি স্কুলের তরফেই পোস্ট করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ক্রমেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। তারপরই রাজদীপ যেন এলাকায় ‘সেলিব্রিটি’! রাজদীপের বাড়িতে একটাই স্মার্ট ফোন। সেটি এখন খারাপ। প্রতিবেশীদের কাছে সে শুনেছে, ক্লাস রুমে তোলা তার ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। বলল, ‘অনেকেই আমার সঙ্গে সেলফি তুলেছেন। কী এমন করেছি জানি না।’ পরিচিতরা বাড়িতে ফোন করেও রাজদীপকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন।
রাজদীপের স্কুলেও হইহই ব্যাপার। শুক্রবার স্কুলে গিয়ে জানা গেল, রাজদীপের মতোই তার সহপাঠী সায়ন সিং, অর্জুন রায়, শিবম দাস, মেঘনা ধাওড়ে, সারদা মল্লিক, তোয়াস মন্ডলরা একইভাবে জেনেছে মহাবিশ্বের খবর। তাদের অনেকেরই মহাকাশ নিয়ে অগাধ কৌতূহল। নবাসন প্রাথমিকের শিক্ষক মৃগাঙ্ক পান বলেন, ‘ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষামূলক নানা বিষয় আলোচনা করা হয়। তারা নিজেদের ঠিকানা যাতে ঠিকমতো লিখতে পারে, সেই নিয়ে ক্লাস নেওয়া হয়। সেই সময় বোঝানো হয়, কীভাবে আমরা মহাবিশ্বে রয়েছি। সেটিই রাজদীপ ভালোভাবে রপ্ত করতে পেরেছে। রাজদীপের মতোই বাকি ছাত্রছাত্রীরাও তা জানে।’
রাজদীপের বাবা বিজয় দে পেশায় চাষি। মাঝেমাঝে ক্যাটারিংয়ের কাজও করেন। মা সোমাদেবী গৃহবধূ। তিনি বলেন, ‘অনেকের ফেসবুক থেকে দেখেছি ছেলের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ও ভালো পড়াশোনা করে। স্কুলের শিক্ষকরাও যত্ন নিয়ে পড়ান। ভবিষ্যতে সামর্থ্যমতো পড়াবো।’
নবাসন বোর্ড প্রাইমারি স্কুলে শুধু রাজদীপই নয়, নানাভাবে ভাইরাল হয়ে রয়েছে আরও কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী। কেউ গান গেয়ে নেটিজেনদের মন কেড়েছে। কেউ আবার আবৃত্তি করেও সোশ্যাল মিডিয়ায় জায়গা করে নিয়েছে। প্রিয়শ্রী কর্মকার, সৌহাদ্রি পাল ও মধুমিতা মান্ডিরা সেই তালিকায় রয়েছে। তাদের ভিডিও নেট দুনিয়ায় লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখেছেন। প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন তাদের। শিশুমন জানে না ভাইরালের গুরুত্ব। কিন্তু শিক্ষকরা বলছেন, ছাত্রছাত্রীরা ভাইরালের পর আরও মনোযোগী হয়ে গিয়েছে তারা। স্কুলে ক্লাসের ফাঁকেই নিয়মিত শেখানো হয় গান। সেই জন্য প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মাপুই এনে দিয়েছেন হারমোনিয়াম। তবে, স্কুলের পরিকাঠামো নিয়ে শিক্ষকদের গলায় আক্ষেপের সুর। শিক্ষক বিকাশ কুমার বাগ, সামসের আলি বলছিলেন, ‘ক্লাস রুমের অভাব। তারসঙ্গে জায়গারও অভাব। তারমধ্যেই প্রাক প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৬০ জন পড়ুয়াকে পড়ানো হয়। তাই পরিকাঠামোর দিকে প্রশাসন নজর দিলে ভালো হয়।’ শিক্ষকরা জানিয়েছেন, মিড-ডে মিল বারান্দায় বসে খায় পড়ুয়ারা। ঝড় বৃষ্টির সময় অসুবিধায় পড়তে হয় সকলকেই। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘এখানে সব ছাত্রছাত্রীকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। বড় হয়ে সবাই যেন মানুষ হয়। সেই চেষ্টাই করছি আমরা সকলে মিলে।’ • গোঘাটের নবাসন বোর্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। -নিজস্ব চিত্র