সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন। অর্থপ্রাপ্তির যোগ ... বিশদ
এদিন পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ও হাওড়ার আমতা-উদয়নারায়ণপুরের বন্যা কবলিত জায়গাগুলি পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনবসতি এলাকায় কীভাবে জল ঢুকছে, তা প্রত্যক্ষ করেন। ‘ম্যান মেড’ এই বন্যার জন্য এদিনও তিনি কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন ডিভিসি-র। দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ভাবছি। ডিভিসি-র বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার কথা শোনা গিয়েছে তাঁর গলায়। মমতা আবারও জানিয়েছেন, এটা ম্যান মেড বন্যা। বৃষ্টির জলে এই বন্যা হয়নি। ঝাড়খণ্ডকে বাঁচাতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সেখানকার জল বাংলায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। জল ছাড়া জনিত পরিস্থিতির জন্য ঝাড়খণ্ডের সীমান্ত তিনদিন বন্ধ করার কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, পাঁচ লক্ষ কিউসেকের বেশি জল ছাড়া হয়েছে। এমনটা আগে কখনও হয়নি।
গোটা পরিস্থিতির জন্য মোদি সরকারের দিকেও আঙুল তুলেছেন মমতা। তাঁর প্রশ্ন, ডিভিসি-র বাঁধগুলিতে জলাধারের ধারণ ক্ষমতা ড্রেজিং করে বাড়ানোর উদ্যোগ কেন নেয়নি কেন্দ্র? তাই ডিভিসি এখন মাত্র ৩৬ শতাংশ জল ধরে রাখতে পারছে। সেই কারণে প্রতি বছর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। মুখ্যমন্ত্রীর আরও নির্দেশ, বন্যা দুর্গতদের সবাই যাতে ত্রাণ সামগ্রী পান সেটা নিশ্চিত করতে হবে। রাজ্য সরকারের শস্য বিমা প্রকল্পে ক্ষতিপূরণ পাবেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা। আর যেহেতু জল এখনও বাড়ছে, তাই বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষকে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এদিন নবান্নে ফিরে এসে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকও করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে পাঁশকুড়ার গোবিন্দপুরে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। সেখানে ত্রাণসামগ্রী না পাওয়া নিয়ে বন্যা দুর্গতদের ক্ষোভের মুখেও তাঁকে পড়তে হয়।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগকে অবশ্য এদিন নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছে ডিভিসি। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা এদিন একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, অতি বৃষ্টির জন্যই জল ছাড়তে হয়েছে। বাঁধ থেকে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত যে কমিটি নেয়, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিও থাকেন। এদিন সকালে ডিভিসি-র মাইথন ও পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়ার হার কমে দাঁড়ায় ৮০ হাজার কিউসেক। সন্ধ্যার পর তা আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার কিউসেকে। তবে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে এদিন সকালেও ১ লক্ষ ৩৩ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে। মাইথন-পাঞ্চেত গত রবিবার থেকে প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়ায়, তার প্রভাব এখন দুর্গাপুর ব্যারেজের উপর পড়ছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই কারণে হুগলি ও হাওড়া জেলার দামোদর অববাহিকা এলাকায় এখনও প্রচুর পরিমাণে বন্যার জল ঢুকছে। দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ছাড়া জল দুই মেদিনীপুরে কংসাবতী, কেলেঘাই, রূপনারায়ণ প্রভৃতি নদীগুলিতে চলে আসায় সেখানেও বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে।