উচ্চতর বিদ্যায় সফলতা আসবে। সরকারি ক্ষেত্রে কর্মলাভের সম্ভাবনা। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্য আসবে। প্রেম-প্রণয়ে মানসিক অস্থিরতা ... বিশদ
সাইবার অপরাধের দুনিয়ায় ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া পীঠস্থান হিসেবেই পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে কল সেন্টার খুলে অনলাইনে প্রতারণ চক্র চালানো হচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, একদা জামতাড়ার প্রতারকরা ব্যাঙ্কের অফিসার পরিচয় দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দাদের ফোন করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব করতো। কখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্ব পাতানো, মহিলা এসকর্ট সার্ভিস দেওয়া, জিনিস বিক্রির নাম করে প্রতারণা করছে। এখন তারা কোভিডের ওষুধ বিক্রির টোপ দিয়ে টাকা আদায় করছে।
ঠিক সেই কায়দাতেই শিলিগুড়ি শহরে অনলাইন প্রতারণা চক্রের ঘাঁটি গড়ে উঠছে। ইতিমধ্যে শিলিগুড়ি পুলিসের সহযোগিতায় ভক্তিনগর থানা এলাকায় একটি কল সেন্টারে হানা দিয়ে তিন প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে তেলেঙ্গানা পুলিস। ধৃতদের নাম মহম্মদ নুর আলম, বিনোদকুমার শা ও অজয়কুমার শা ওরফে বিজয়ভাইয়া। প্রথমজন গান্ধীনগর, দ্বিতীয়জন ভানুনগর ও তৃতীয়জন দার্জিলিং মোড়ের বাসিন্দা। রবিবার ধৃতদের শিলিগুড়ি এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। বিচারক ধৃতদেরকে চারদিনের জন্য তেলেঙ্গানা পুলিসের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার পিপি সুশান্ত নিয়োগী বলেন, ১৮ সেপ্টেম্বর তেলেঙ্গানার সাইবারাবাদ পুলিস কমিশনারেটের সাইবার ক্রাইম পুলিস স্টেশনে দু’জন প্রতারণার অভিযোগ করেন। অভিযোগ, একটি কোম্পানিতে ম্যানেজারের চাকরি দেওয়ার টোপ দিয়ে যুগল কিশোর নামে একজনের কাছ থেকে কয়েক ধাপে আদায় করা হয় ১৩ লক্ষ ৮২ হাজার ৬৪৩ টাকা। একইভাবে এম রাজু নামে আর একজনের কাছ থেকে আদায় করা হয় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। মোবাইল টাওয়ারের সূত্রধরে তেলেঙ্গানা পুলিস অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে। তারা সন্দেহভাজন আরও চারজনকে আটক করেছে। সেই তালিকায় দু’জন মহিলা রয়েছে। সন্দেহভাজনদের নোটিস দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মামলার তদন্তে প্রয়োজন পড়লে তাদেরকে ডাকা হতে পারে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট কল সেন্টার থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দাদের ফোন করে মহিলা ও পুরুষ এসকর্ট সার্ভিস, সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রেন্ডশিপ, ডেটিং ও চাকরি দেওয়ার টোপ দিত ধৃতরা। টোপ গিললেই কেল্লাফতে। রেজিস্ট্রেশন ফি, রুম বুকিং চার্জ, ওয়েবসাইট মেনটেনেন্স চার্জ, ট্যাক্স প্রভৃতির নামে ধাপে ধাপে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা নিত। এ জন্য তারা একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। তারা একটি ওয়েবসাইট চালু করেছিল। দু’জন মহিলা সহ কয়েকজনকে সেন্টারে নিয়োগও করেছিল। ধৃতদের মধ্যে বিজয়ভাইয়া ও নুর আলম মাস্টার মাইন্ড।
তেলেঙ্গানার সাইবারাবাদ পুলিস কমিশনারেটের সাইবার ক্রইম থানার ইন্সপেক্টার রবীন্দ্র রেড্ডি বলেন, শিলিগুড়ি পুলিসের সহযোগিতায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছি। ধৃতদের কাছ থেকে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, চিপস, ব্যাঙ্কের পাসবই প্রভৃতি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। এমন আরও ৫০টি প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তেলেঙ্গানায়। শহরের আরও কয়েক জায়গায় ধৃতদের কল সেন্টার রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এবার সেইসব সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে স্থানীয় পুলিস।