নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, নকশালবাড়ি: প্রায় দু’মাস পর বৃহস্পতিবার বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে উড়ান পরিষেবা চালু হল। দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু ও গুয়াহাটির মধ্যে বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। তবে এদিন কলকাতাগামী বিমান চলেনি। এদিকে বিমান চলাচল শুরু হতেই দিল্লি থেকে বাগডোগরায় এসে নামেন দার্জিলিংয়ের সংসদ সদস্য বিজেপির রাজু বিস্তা। অন্যান্য যাত্রীদের মতো বিমানবন্দরেই তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়। তাঁকেও ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। সেই মতো এমপি শিলিগুড়ির বাড়িতে ওঠেন। তিনি জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশ সেখানেই আপাতত থাকবেন। এদিকে জিটিএ কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দর থেকে দু’টি বাসে পাহাড়গামী যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়।
এমপি বলেন, ইচ্ছে না থাকলেও লকডাউনের কারণে দু’মাস দিল্লিতে আটকে ছিলাম। বিমান চালু হতেই নিজের সংসদ এলাকায় এলাম। আমি আপাতত শিলিগুড়িতে থাকছি। বিমানবন্দরে নামার পর স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশিকা মেনে আপাতত ১৪ দিন বাড়িতেই থাকব। করোনা পরিস্থিতিতে প্রত্যেকে যেভাবে লড়াই করে চলেছেন তারজন্য সকলকে আমার শুভেচ্ছা।
অন্যদিকে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে এদিন তিনি নিশানা করেন। একইসঙ্গে উম-পুন পরিস্থিতি মোকাবিলা রাজ্যের ভূমিকা নিয়েও সরব হন তিনি। তাঁর দাবি, কেন্দ্র সরকার হাজার কোটি টাকার সাহায্য করেছে। আগামী দিনেও কেন্দ্র সবধরনের সাহায্য করবে। কিন্তু এরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পারছে না।
অন্যদিকে, দীর্ঘদিন পর এমপি নিজের সংসদ এলাকায় আসায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, আমাদের এমপি গরম সহ্য করতে পারেন না। তাই দিল্লি থেকে এখানে এসেছেন। উনি এসেছেন ভালো। নিয়ম মেনে কোয়ারেন্টাইনে থাকুন। কটাক্ষ করেছেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির কংগ্রেসি বিধায়ক শঙ্কর মালাকারও। তিনি বলেন, বিপদের সময় ওঁর দেখা পাওয়া যায়নি। বাইরে থেকে প্রার্থী করা হলে এমনই হয়। পাঁচবছরে এক-দু’বার দেখা মেলে। এর আগেও বিজেপি দু’জনকে বাইরে থেকে এনে প্রার্থী করে জিতিয়ে ছিল। ওঁরাও এঁর মতো পরিযায়ী ছিলেন।
বাগডোগরা বিমানবন্দরের ডিরেক্টর সুব্রমণী পি বলেন, এদিন দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু ও গুয়াহাটির মধ্যে বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। দিল্লি থেকে প্রথম বিমানে ১৮০ জন যাত্রী আসেন। বিমান পরিষেবা চালু হওয়ায় উপর মহলের নির্দেশে আমরা সবরকম প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করি। যাত্রীদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার উপরে জোর দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিমান থেকে নামা সমস্ত যাত্রীর থার্মাল স্ক্রিনিং করা হয়েছে। তাঁদের সকলের হাতে স্যানিটাইজার দেওয়া হয়েছে। ভাইরাস মোকাবিলায় টাচ ফ্রি স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা আমরা করেছি। জুতো ও লাগেজও জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে পরবর্তীতে নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এমনভাবেই যাত্রীদের পরিষেবা দেওয়া হবে।
দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক এস পুন্নবালম বলেন, বিমানবন্দরে যাত্রীদের স্ক্রিনিং করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাইরে থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। দু’মাস বাদে বিমান পরিষেবা চালু হল।