সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা, আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
পুলিস সুপার সুমিত কুমার বলেন, বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে কোথাও কোনও বেআইনি অস্ত্র, বোমা মজুত রয়েছে কি না সে নিয়ে তল্লাশি চলছে। শনিবার ১১টি সকেট বোমা বাজেয়াপ্ত করে তা নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। ওই ঘটনায় একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
বোমা উদ্ধারের খবর চাউর হতে শনিবার সকাল থেকে রাড়িয়া গ্রামে বহু মানুষ ভিড় করেন। র্যা ফ সহ বিশাল পুলিস বাহিনী মোতায়েন করা হয়। দুটি বাজারের ব্যাগে দুলাল সরকারের গোয়ালঘর থেকে বোমাগুলি পুলিস বাজেয়াপ্ত করে। শনিবার দুপুরে বোমাগুলি নিষ্ক্রিয় করা হয়। বম্ব স্কোয়াডের সদস্য ছাড়াও দমকলের ইঞ্জিন, চিকিৎসকদের একটি টিম গ্রামে যায়। পাঁচটি বোমা ফাটলেও বাকিগুলি সক্রিয় ছিল না। কেন কী উদ্দেশ্যে সকেট বোমাগুলি সেখানে মজুত করা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। তদন্তকারীদের দাবি বেশকিছু বোমা তৈরির মশলাও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বিধানসভা উপনির্বাচনে গোলমাল পাকাতেই কী রাড়িয়াতে বোমা তৈরির কাজ চলছিল? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা।
গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, দুলাল সরকার সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী নন। গ্রামের বাসিন্দারা কেউ অসুস্থ হলে তাঁর পাশে দাঁড়ানো থেকে বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ার মতো উপকারী মানুষ বলেই এলাকায় তাঁর পরিচিতি রয়েছে। কীভাবে তাঁর বাড়ি থেকে বোমা উদ্ধার হল সেটা ভাবতেই পারছেন না প্রতিবেশী রণজিৎ মণ্ডল, অপর্ণা মণ্ডল, অনাদি সরকাররা। স্থানীয় বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা সুচিত্রা বর্মন সরকারের স্বামী বিজেপি কর্মী হরিপদ সরকার বলেন, দুলাল সরকারের বাড়িতে বোমা বাজেয়াপ্ত হয়েছে বলে শুনেছি। তাঁর খারাপ কোনও কাজকর্ম আগে কোনওদিন নজরে আসেনি। কী হয়েছে পুলিস তদন্ত করে দেখুক। শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিস দুলাল সরকারের বাড়িতে হানা দিলেও দুপুর থেকে দুলালবাবু বাড়ির বাইরেই ছিলেন। তিনি ঘরে ফেরেনি। তাঁর স্ত্রী তাপসী সরকার, বৃদ্ধা মা বিনাপাণি সরকার বলেন, কোনও খারাপ লোকের সঙ্গে ওর ওঠাবসা ছিল না। এধরনের কাজকর্ম অতীতে কোনওদিন আমাদের চোখে পড়েনি। নিজেদের একবিঘা ও লোকের প্রায় তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে চাষ আবাদ করে আমাদের সংসার চলে। কী করে কী হল বুঝতে পারছি না। পুলিস বেরিয়ে যাওয়ার পর প্রতিবেশী মহিলারা অনেকেই ওই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক তাদের অনেকেই বলেন, গরিব এই পরিবারকে ফাঁসানো হয়েছে। গ্রামবাসীরা অনেকেই বোমা উদ্ধারের ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তারা কেউ কেউ বলছেন, ২৫ নভেম্বর উপনির্বাচনে নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়া যাবে তো? কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন ওই গ্রাম হলেও গ্রামটি রায়গঞ্জ থানার অধীনে রয়েছে। রায়গঞ্জ থানার পুলিস শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত রাড়িয়ার ওই বাড়িটি ঘিরে রেখে দফায় দফায় তল্লাশি চালিয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, বোমাকাণ্ডে যোগ সন্দেহে বড়ুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক বাসিন্দাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দুলাল সরকারের খোঁজেও তল্লাশি চলছে। রাড়িয়া গ্রামে বিধানসভা উপনির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক প্রচার এখনও জমে না উঠলেও বোমা উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।