সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা, আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
রূপকবাবু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দলটা করে এসেছি। দলের খারাপ সময়ে হাল ছাড়িনি। গত পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে বিধানসভা এলাকায় দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে গিয়েছি। এক প্রভাবশালী ঠিকাদার এখন দলে এসে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাঁর ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য একটা অযোগ্য লোককে প্রার্থী করা হয়েছে। রূপক রায়ের অভিযোগ, ওই ঠিকাদার নেতাই ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য কমল চন্দ্র সরকারকে প্রার্থী করতে সবরকম চেষ্টা চালিয়েছেন। যদিও কমলবাবু বলেন, রূপক আমার দূর সম্পর্কের ভাগ্নে। ওকে ছেলের মতো স্নেহ করি। ওর কথায় আমি গুরুত্ব দিচ্ছি না।
আগামী ২৫ নভেম্বর কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মূলত বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেস প্রার্থীর মধ্যে ওই নির্বাচনে মূল লড়াই হচ্ছে। বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদ সদস্য কমল চন্দ্র সরকার। কমলবাবু এক সময় পুতুল নাচ দেখাতেন। সচ্ছ্বল চাষি পরিবারের সাদামাটা মাটির মানুষ বলে তিনি পরিচিত। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন রূপক রায়। গত লোকসভা নির্বাচনে কমলবাবু রূপকবাবুরা কাঁধে কাধ মিলিয়ে লড়াই করেছেন। প্রায় ৫৭ হাজার ভোট লিড পেয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী। কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় কয়েকমাস আগে লোকসভা ভোটের সাফল্য আসতেই স্বভাবতই গত বিধানসভা ভোটের প্রার্থী রূপক রায় এবারে উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার দাবিদার ছিলেন। কিন্তু দল তাঁকে প্রার্থী না করায় রূপক রায় নিজে হতাশ হয়ে দলের সমালোচনায় সরব হয়েছেন। তাঁর অনুগামীরা বলছেন, উপনির্বাচনে দল যোগ্য জবাব পেয়ে যাবে।
দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ লাহিড়ি বলেন, রূপকবাবু গত বিধানসভা নির্বাচনে দলের প্রার্থী হয়েছিলেন। মাত্র ২৮ হাজারের মতো ভোট তিনি পেয়েছিলেন। তাঁর কথায় আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। দলে এরকম দু-একজন থাকে। তাতে নির্বাচনে কোনও প্রভাব পড়বে না।
রাজনৈতিক মহলের খবর, উপনির্বাচনের মুখে গতবারের প্রার্থী রূপকবাবু নিজে এবারের প্রার্থী নিয়ে সমালোচনায় সরব হওয়ায় খানিকটা হলেও দলে অস্বস্তি বেড়েছে। রূপকবাবুর অনুগামীরা অনেকেই এই উপনির্বাচনের প্রচারে নামেননি। তাঁরা নির্বাচনে অন্তর্ঘাত চালায় কি না সে নিয়েও রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। এমনিতেই গত লোকসভা নির্বাচনের মতো এবারের উপনির্বাচনে পদ্মশিবির নিয়ে কালিয়াগঞ্জর ভোটারদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে না। এনআরসি ইস্যুতে গ্রামগঞ্জের মানুষের মধ্যে চাপা আতঙ্ক রয়েছে। বিজেপির বিরদ্ধে এনআরসি নিয়ে প্রচার করছে বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে ঘরে-বাইরের বিরুদ্ধ প্রচারকে খণ্ডন করে বিজেপি নিজেদের পালে হাওয়া টানতে আদৌ সফল হতে পারে কি না সেদিকে নজর রাখছে সকলে। যদিও বিজেপির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতারা সকলেই কালিয়াগঞ্জ আসন জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বলেই জানিয়েছেন।