সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা, আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
অশোকবাবু বলেন, এদিন আমি ফুলবাড়ির গ্রামে গিয়ে মৃত ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। মেয়েটির মা বলেছেন, তাঁর মেয়ে একমাস ধরে নিখোঁজ ছিল। বারবার এনজেপি থানার পুলিসের কাছে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু পুলিস বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দেয়নি। তারা বলেছে, প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে নিয়ে এত দুশ্চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। সময়মতো পুলিস এই ঘটনাটির গুরুত্ব দিলে আজ পরিবারটিকে এই দিনটির সামনাসামনি হতে হতো না। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছি, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকাটি অপরাধ জগতের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। জমি মাফিয়ারা এখানে রাজত্ব করছে। মেয়েটির মা চেয়েছেন, মেয়েকে যারা খুন করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। সেটা আমি মুখ্যমন্ত্রীকে লিখেছি। একইসঙ্গে যে পুলিসের অবহেলায় এটা হল সেই পুলিস কর্মীর শাস্তি হোক, এটাও চেয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিতে এটাও লিখেছি যে, আপনি শিলিগুড়িতে আসছেন। আমরা আপনার সঙ্গে দেখা করে এই বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জানাতে চাই। পরিবারটির পাশে আমরা আছি। ফুলবাড়ি, শিলিগুড়িতে আন্দোলন ছড়িয়ে দেব। আমরা চাই রাজ্যুজড়ে আন্দোলন হোক।
শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিস কমিশনারেটের ডিসিপি ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে। দোষী শীঘ্রই ধরা পড়বে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদ্ধার করা যাবে।
এদিকে ফুলবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের এই ঘটনায় পুলিসের ভূমিকা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। শুক্রবার ওই ছাত্রীর বাড়ির থেকে কিছুটা দূরে একটি ডোবা থেকে তাঁর পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ডোবার পাশেই ছাত্রীর ব্যবহৃত পিঠের ব্যাগটি পড়েছিল। স্থানীয় কয়েকজন যুবক ডোবায় মাছ ধরতে গিয়ে ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করেন। নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিসের বিরুদ্ধে তদন্তের গাফিলতির অভিযোগ তুলে শুক্রবার রাতে থানায় সামনে মৃতদেহ রেখে স্থানীয় লোকজন দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভও দেখান। মৃতের পরিবারের দাবি, প্রায় একমাস আগে ওই ছাত্রী নিখোঁজ হয়ে যায়। সেসময় পুলিসকে জানানো হয়েছিল। সন্দেহভাজনের নামও সেসময়ে বলা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তে গড়িমসি করাতেই ছাত্রীকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা গেল না।
শিলিগুড়ির অদূরে ফুলবাড়ির ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী গ্রাম কালিঙ্গিনিতে ছাত্রীর বাড়ি। তিনি সূর্য সেন কলেজে পড়তেন। সংসারের হাল ধরতে তিনি দাগাপুরের একটি বিনোদন পার্কে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। ১০ অক্টোবর কাজ সেরে বাড়ি ফেরার সময়ে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। পরিবারের লোকেরা থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত ডায়েরি করেছিল।
পুলিস সঠিকভাবে তদন্ত করেনি বলে অভিযোগ ফুলবাড়ি-২ মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদিকা কণিকা রায়েরও। তিনিও বলেন, পুলিসকে আমরা একাধিকবার বলেছি। কিন্তু পুলিস বিষয়টিকে সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি। তাই মেয়েটিকে আমরা হারালাম।
এদিন অশোকবাবুর সঙ্গে কাউন্সিলার তাপস চট্টোপাধ্যায়, স্নিগ্ধা হাজরা প্রমূখ ছিলেন। দুপুরে গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির পক্ষ থেকে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আর্জি জানিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি থানায় ডেপুটেশন দেওয়া হয়। পুলিসের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এনজেপি থানার যে অফিসারের বিরুদ্ধে মৃত ছাত্রীর পরিবার অভিযোগ তুলেছেন, তাঁর ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।