মাঝেমধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। গবেষণায় আগ্রহ বাড়বে। কর্মপ্রার্থীদের নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
এই প্রথম নয়। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, প্রতিটি ইস্যুতে সরব হয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের একাধিক সদস্যরা। বুধবার সিএএ ইস্যুতে যৌথ অধিবেশন বসে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে। অধিবেশনের শুরুতেই ভোটাভুটির দিন মার্চ পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা হয়। মার্চে ১৫তম ভারত-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্মেলনে যোগ দিতে ব্রাসেলস যাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিনের বিতর্কে সেই প্রসঙ্গ তোলেন ইউরোপীয় কমিশন এবং ইউনিয়নের বিদেশ বিষয়ক এবং নিরাপত্তা নীতির উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি হেলেনা ডালি। তিনি ভারতের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সুসম্পর্কের উল্লেখ করে বক্তব্য শুরু করেন। হেলেনা ডালি বলেন, ‘আমাদের আশা, ভারতের শীর্ষ আদালত সংবিধানের চৌহদ্দির মধ্যে থেকেই সিদ্ধান্ত নেবে। আর সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত ভারতের উত্তেজনা এবং হিংসার পরিবেশ প্রশমিত করতে পারবে।’ তাঁর মতে, আগামী মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরে আলোচনার মাধ্যমে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব হবে। ভারতের সংবিধানের সম্মান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অক্ষুন্ন থাকবে।
ডালির বক্তব্য শেষ হতেই ভোট পিছনো নিয়ে তীব্র বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা। পাক বংশোদ্ভূত শাফাক মহম্মদ এবং ডন হোয়ার্থ, স্কট আইন্সলির মতো সদস্যদের বক্তব্য, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ ‘প্রবলভাবে পক্ষপাতদুষ্ট এবং অমানবিক’ । তাঁদের দাবি, এই আইন নিয়ে ভোট পিছিয়ে ভারতীয় কূটনৈতিক লবির কাছে মুখ লুকলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন। শুধু তাই নয়, বাণিজ্য এবং লেনদেনকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে মানবাধিকারকে উপেক্ষা করল ইইউ। সমালোচকদের বক্তব্যের বিরোধিতা করে ভারতের পক্ষে বক্তব্য রাখেন পোল্যান্ড থেকে ইইউ সদস্য রয়সজার্ড জারনেস্কি। তাঁর বক্তব্য,‘আজ সাধারণ জ্ঞান এবং সম্মানের লবি জয়ী হয়েছে।’ তাঁর বক্তব্য সমর্থন করেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত দীনেশ ধামিজা এবং নীনা গিল। দু’জনই দাবি করেন, সিএএ নিয়ে ভুল তথ্য রটানো হচ্ছে। আর তাছাড়া, সিএএ সম্পূর্ণভাবে ভারতের অভ্যন্তরীণ ইস্যু। নয়াদিল্লির তরফে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবিশ কুমার বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মাথা ঘামানো উচিত নয়। এতে একটি দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং কর্তৃত্ব প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে।
ভারত নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে প্রস্তাবনার তালিকা:
২০১২: ভারতে জাতি বিদ্বেষ নিয়ে প্রস্তাবনা পাশ করে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে। হরিয়ানার গণধর্ষণ মামলা এবং তামিলনাড়ুর ধর্মপুরীর ঘটনার উল্লেখ করে বলা হয়, খুবই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। বর্ণবিদ্বেষ এবং জাতিবিদ্বেষের ঘটনা রোজই বাড়ছে। প্রয়োজন পড়লে তফসিলি জাতি এবং উপজাতি প্রতিরোধ আইনে সংশোধন আনতে প্রস্তাবনায় পরামর্শ দেওয়া হয়।
২০১৩: দিল্লির চলন্ত বাসে গণধর্ষণের ঘটনায় প্যারামেডিকেল ছাত্রীর মৃত্যু নিয়েও প্রস্তাবনা পাশ করে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে। মানবাধিকার, বিশেষ করে মহিলাদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। ওই বছরই আফজল গুরুর ফাঁসির নিন্দা করে প্রস্তাবনা পাশ করে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।
২০১৬: ভারত সীমান্তে ঢুকে সাগরের জেলে অস্ত্র ফেলার অভিযোগে ২০১৩ সালে গ্রেপ্তার হয় ছয় ব্রিটেন, ১৪ ইস্টোনিয়ান, ১২ ভারতীয় এবং তিন ইউক্রেনের বাসিন্দা। ২০১৬ সালে তুতিকোরিন আদালত তাদের পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। এর বিরুদ্ধে প্রস্তাবনা পাশ করে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট।