অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি, প্রিয়জনের বিপথগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা, সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
একদিকে ১০ বছরের শাসনের প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া, অন্যদিকে দুর্নীতির অভিযোগে যখন জেরবার তৃণমূল শিবির, তখনই দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলার দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সাফল্যকে পুঁজি করে গেরুয়া শিবির যখন ঘুঁটি সাজাচ্ছে, তখন একের পর এক স্লোগান, সরকারি প্রকল্পের পরামর্শ দিয়ে তিনি দাবার পাল্টা চাল দেন। দিদিকে বলো, দুয়ারে সরকার, পাড়ায় সমাধান, বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়...। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা এবং স্ট্র্যাটেজিতে ভর করে দলনেত্রীকে কাঙ্ক্ষিত দু’শো আসন এনে দেন অভিজ্ঞ ‘ম্যানেজমেন্ট গুরু’। আর তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী মেনে ‘ডবল ডিজিটে’ই আটকে গেল মোদি-শাহের অশ্বমেধের ঘোড়া।
এই জয়ের স্বাদের পরেও তিনি অবিচল। প্রশান্ত কিশোরের মতে, এই ফল তৃণমূলের পক্ষে হলেও, লড়াই কঠিন ছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদির জনপ্রিয়তার অর্থ এই নয় যে, বিজেপি সব জায়গায় জিতবে। এরপরেই কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্টের অভিযোগ আনেন ভোট-গুরু। প্রশান্তের কথায়, কমিশন আমাদের প্রচার অভিযানকে কঠিন লড়াইয়ের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল। পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনকে বিজেপির ‘বর্ধিত সংস্করণ’ বলেও তোপ দেগেছেন তিনি। তবে, বিজেপি যে রাজ্যে মেরুকরণ করতে সক্ষম হয়েছে, তা প্রশান্ত মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গোটা বাংলাজুড়ে ব্যাপক মেরুকরণ হয়েছে। কমিশনের উচিত ছিল মেরুকরণ যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করা। কিন্তু, ওরা মুখ বন্ধ রেখে কিছু করেনি। ভোট কুশলী বলেন, ছ’বছরে আমি কোনও রাজ্যে এ ধরনের মেরুকরণ দেখিনি। গোটা প্রচার পর্বজুড়ে জয় শ্রীরামের যে স্লোগান উঠেছিল, তা একথায় অভাবনীয়।’
পেশাদার প্রশান্ত কিশোরের কাজ সফল। তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য পাঞ্জাবের অমরিন্দর সিং। এই পরিস্থিতিতে আর ভোটকুশলী হিসেবে কাজ না করার কথা জানিয়ে দিলেন প্রশান্ত। তাঁর কথায়, ‘আমি যে কাজ করি, তা আর করব না। ঢের হয়েছে। এখন আমার বিশ্রাম নেওয়ার পালা। এবার জীবনে নতুন কিছু করব। এই কাজ আমি ছেড়ে দিতে চাই।’ তাহলে কি ফের রাজনীতিতে যোগ দেবেন? জবাবে ভোট ম্যানেজার বলেন, ‘আমি ব্যর্থ রাজনীতিবিদ। আমি ফিরে যেতে চাই, তারপর দেখব কী করতে পারি।’