অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি, প্রিয়জনের বিপথগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা, সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একমাত্র আমতা আসনটি জিতেছিল কংগ্রেস। সেখানে জিতেছিলেন অসিত মিত্র। বাকি ১৫টিতে জিতেছিল তৃণমূল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের বিধানসভাওয়াড়ি ফলাফলে বেশ কিছু আসনে এগিয়ে ছিল বিজেপি। নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়তেই বিজেপি এই জেলায় প্রচারের ঝাঁঝ বাড়িয়েছিল। কিন্তু পুরনো সৈনিকদের উপর ভর করেই বিজেপিকে মাত করল তৃণমূল। শহরাঞ্চলে অরূপ রায়, ভাস্কর ভট্টাচার্য, গ্রামীণ এলাকায় পুলক রায়, নির্মল মাজিদের মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরনো দিনের সঙ্গীরা দাবি করেছিলেন, কিছু নেতার দলবদলে তাঁরা আরও বরং শক্তিশালী হলেন।
‘মীরজাফর’রা বেরিয়ে যাওয়ায় তৃণমূলের ফলাফল আরও ভালো হবে। জেলার ১৬টি আসনেই জিতবে তৃণমূল। সেই চ্যালেঞ্জ যে ফাঁকা আওয়াজ ছিল না, তা এদিন ফলাফল ঘোষণার পর স্পষ্ট বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের নেতানেত্রীরা।
রাজ্যে দলবদলুদের মধ্যে শুভেন্দু অধিকারীর পর যাঁকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি শোরগোল পড়েছিল, তিনি হলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তৃণমূলের কল্যাণ ঘোষের কাছে ৪২ হাজার ২৩৪ ভোটে হেরেছেন। বিজেপির তারকা প্রার্থী তনুশ্রী চক্রবর্তী, পাপিয়া অধিকারীরা হেরে গিয়েছেন শোচনীয়ভাবে। গুলশন মল্লিক, সমীর পাঁজা, পুলক রায়, নির্মল মাজি, কালীপদ মণ্ডল, অরুণাভ সেনরা ফের যাচ্ছেন বিধানসভায়। তৃণমূল টিকিট না দেওয়ায় একেবারে ভোটের মুখে বিজেপিতে ভিড়েছিলেন শিবপুরের প্রাক্তন বিধায়ক জটু লাহিড়ী, সাঁকরাইলের প্রাক্তন বিধায়ক শীতল সর্দাররা। তাঁরা বিজেপিতে গেলেও তাঁদের সঙ্গে যে মানুষ শিবির বদল করেনি, এই ফলাফল তাও প্রমাণ করল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। উলুবেড়িয়া পূর্বের বিদেশ বসু, শিবপুরের মনোজ তেওয়ারি, সাঁকরাইলের প্রিয়া পাল, দক্ষিণ হাওড়ার নন্দিতা চক্রবর্তী, আমতার সুকান্ত পাল, বালির রাণা চট্টোপাধ্যায়রা প্রথমবারের জন্য বিধানসভার সদস্য হলেন। এই বিপুল জয় দলনেত্রী মমতাকেই উৎসর্গ করেছেন অরূপ রায়। তিনি বলেন, এই জয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উন্নয়নের জয় এবং বিশ্বাসঘাতকদের জন্য শিক্ষা। বিজেপির একাধিক নেতাকে ফোন করে তাঁদের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সংযুক্ত মোর্চার তরফে সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, ফলাফলের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ না করে মন্তব্য করা মুশকিল। তবে মানুষ যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকেই আবার দেখতে চেয়েছে, তা পরিষ্কার।