অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি, প্রিয়জনের বিপথগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা, সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
বাঙালির কাছে ‘দিদি’ শব্দটি মায়ের মতোই পবিত্র। ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার দিনে দিদির আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য বাংলার প্রতিটি ঘরে চলে বছরভর অপেক্ষা। সেই ‘দিদি’ শব্দটিকে নরেন্দ্র মোদি উপহাসের জায়গায় নিয়ে চলে গেছেন। তিনি শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ছোট করেননি, বাংলার নারী জাতিকে অপমান করেছেন। বর্ষীয়ান মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর এমন অশোভন কটাক্ষ বাংলার মা, বোনেরা ভালো চোখে দেখেননি। কমিশনে নালিশ জানানোর পরেও প্রধানমন্ত্রী বিরত হননি। উল্টে হাততালির লোভে প্রতিটি সভায় বারবার ‘দিদি অ দিদি’ বলে মমতাকে বিদ্রূপ করেছেন।
বিজেপি নেতা-কর্মীদের কাছে নরেন্দ্র মোদি ‘মহাজ্ঞানী’। তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি হওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। তিনিও দিনের পর দিন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেছেন। জখম মুখ্যমন্ত্রীকে বারমুডা পরার পরামর্শ দিয়ে অশিক্ষিত ভক্তকুলের হাততালি পেয়েছেন। মমতাকে কুরুচিকর আক্রমণ করে সিপিএম নেতা অনিল বসুও হাততালি কুড়িয়েছিলেন। কিন্তু, মানুষ তাঁকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছিল। দিলীপবাবু তা থেকে শিক্ষা নেননি। তাই বাংলার নারীরা তাঁদের সমুচিত শিক্ষা দিয়েছেন।
ভোটের হাওয়ার বোঝার জন্য তীব্র গরমের মধ্যেও আমরা জেলায় জেলায় ঘুরেছি। ‘বর্তমান’ পত্রিকার সাংবাদিকরাও করোনার ভয় উপেক্ষা করে মানুষের কাছে গিয়ে মাটির গন্ধ নিয়েছেন। তা থেকে বোঝা যাচ্ছিল, মহিলা ভোটের সিংহভাগ যাচ্ছে মমতার দিকে। শুধু তৃণমূল নেত্রীকে অপমানের কারণেই নয়, বাংলার নারীদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর একের পর এক প্রকল্প তাঁকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দিয়েছে। সবুজসাথী, কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর প্রকল্প চালু করে তিনি বাংলার মেয়েদের কাছে ‘দিদি’, প্রকৃত আপনজন হয়ে উঠেছেন। তাই মোদি বঙ্গে এসে যত ‘দিদি অ দিদি’ বলে কটাক্ষ করেছেন বাংলার মা, বোনেরা তত বেশি করে বিজেপির বিরুদ্ধে এককাট্টা হয়েছেন।
বিজেপি তৃণমূল নেত্রীকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য যখন বাংলার মা, বোনেদের অসম্মান করেছেন, তখন তৃণমূলনেত্রী তাঁদের সম্মানের ডালি উপহার দিয়েছেন। মমতা জানেন, সংসারে অবহেলিত নারীদের মর্যাদা দিতে হবে। তবেই সমাজ এগবে। তাই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পরিবারের মহিলাদের নামে। এতবড় সম্মান মমতার আগে আর কেউ তাঁদের দেননি। মাসে ৫০০ টাকা হাত খরচ দেওয়ার ঘোষণায় প্রমাণ হয়েছে, অভাবী পরিবারে মায়ের ব্যথা তিনি অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করেছেন। তার জন্য তাই বাংলার নারীরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ। তৃণমূলনেত্রীর প্রতিটি জনসভায় মহিলাদের বিপুল উপস্থিতিই ছিল তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
এবার মহিলা ভোট যে তৃণমূলের দিকে যাচ্ছে, সেকথা ‘বর্তমান’ বারেবারে লিখেছে। আমরা মাঠে ময়দানে ঘুরে সাংবাদিকতা করি। আমরা মানুষের মন বোঝার চেষ্টা করি। মাটির মানুষের মনের কথা কাগজে লিখি। তার জন্য কেউ কেউ হয়তো আমাদের গায়ে কোনও রং লাগানোর চেষ্টা করে। কিন্তু মানুষের রায় প্রকাশ্যে এলে প্রমাণ হয়ে যায়, আমরা কারও তাঁবেদারি করছি, নাকি মানুষের কথা বলছি।