নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাকপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বিধানসভা উপনির্বাচনের প্রচার থেকেই ‘মিশন-২০২৪’-এর শপথ। সুর বাধলেন তৃণমূল কংগ্রেসের তরুণ তুর্কি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শোনালেন দেশের আম জনতার আপ্তবাক্য, কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, গোটা দেশের নেত্রী, দেশনেত্রী মমতা। তিনিই হটাবেন বিজেপিকে। সঙ্গে স্লোগান, ‘দেশ কী নেত্রী ক্যায়সি হো, মমতা দিদি জ্যায়সি হো।’ সিংহগর্জনে তার সঙ্গে গলা মেলাল সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গোসাবা আর শিল্পাঞ্চলের খড়দহ। উপনির্বাচনে খড়দহের দলীয় প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং গোসাবার প্রার্থী সুব্রত মণ্ডলের সমর্থনে শনিবার সভা করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। প্রচারে আগাগোড়া গেরুয়া শিবির বিরোধী ঝাঁঝ বজায় রেখে ‘মিশন-২০২৪’-এর মূল প্রতিপক্ষ বিজেপিকে শক্ত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘সারা দেশে ১,৭০০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে মাত্র ছ’টি জাতীয় পার্টি হিসেবে স্বীকৃত। কালীঘাটের টালির ছাউনির নীচে, হাওয়াই চটি পরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলও সেই স্বীকৃতি পেয়েছে। এই ১,৭০০ দলের মধ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করার হিম্মত একমাত্র তৃণমূলেরই আছে।’আগামী লোকসভা নির্বাচনে মমতাই পারবেন বিজেপিকে হটাতে, এই প্রত্যয়ী বার্তা ছিল এদিন অভিষেকের গলায়। সাফ জানিয়েছেন, ‘২০২৪-এ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করে ওদের দিল্লি ছাড়া করব। তোমাদের (বিজেপি) ইডি, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স বিভাগ আছে। আমরা ছোট্ট দল। মাথার উপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি আর জোড়াফুলের পতাকা, সঙ্গে কর্মী-সমর্থকদের আবেগ ছাড়া আর কিছু নেই। তাও বাংলায় গোহারা হারিয়েছি ওদের।’ সেই উদ্যমে ভর করেই তৃণমূলের লক্ষ্য এবার গোয়া, ত্রিপুরা। বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের রাজনৈতিক পরিসর যে এবার তাঁদের নজরে, সেকথা উঠে এসেছে তাঁর বক্তব্যে। অভিষেক আরও বলেন, ‘আমরা মেঘালয় এবং উত্তরপ্রদেশে ঢুকছি। তিনমাস পরে গোয়ায় নির্বাচন। বিজেপিকে হারিয়ে সেখানে সরকার গঠন করব। ত্রিপুরাতে দেড় বছর বাদে নির্বাচন, সরকার গড়ব সেখানেও।’
সর্বভারতীয় এই পরিসর তৈরি হচ্ছে কীভাবে? তাও বিশদে বলেছেন অভিষেক—‘সারা দেশ থেকে চিঠি এবং মেল আসছে। সবাই দিদিকে চাইছেন। সবাই বলছেন, আপনিই (মমতা) পারবেন বিজেপিকে হটাতে। সারা দেশ বাংলার দিকে তাকিয়ে আছে। লক্ষ্য রাখছে, চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের আসন্ন উপনির্বাচনেও।’ আরও জানিয়েছেন, আগামী এক বছরের মধ্যে দেশের আরও ১২-১৫টি রাজ্যে ওয়ার্কিং ইউনিট করবে তৃণমূল। আব কি বার, ২০০ পার—স্বপ্নভঙ্গের পরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরার হিড়িক শুরু হয়েছিল। তা ঠেকাতে তিনিই যে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছেন, বুক ঠুকে জানিয়েছেন অভিষেক। বলেছেন, ‘বিজেপির গদ্দারদের ঢুকতে দেব না। আমি আছি তো! আমি নেত্রীর (মমতা) পায়ে ধরে বলেছি, বিশ্বাসঘাতকদের ঢুকতে দেব না। কর্মীদের আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে দরজাটা বন্ধ করে রেখেছি।’ তাঁর সাফ হুঁশিয়ারি, দরজা খুললেই বিজেপি পার্টিটা উঠে যাবে!