সংবাদদাতা, করিমপুর: সাধারণ মানুষের কাছে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দিতে একসময় সরকারি ব্যয়ে বহু জায়গায় সজলধারা প্রকল্পের কাজ হয়েছিল। অথচ কয়েক বছরের মধ্যেই করিমপুর ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় বসানো অনেক সজলধারা অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। সেইসব সজলধারা থেকে পানীয় জল পাচ্ছেন না এলাকার মানুষজন। সাধারণ মানুষের দাবি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেগুলো চালু করার ব্যাপারে উদ্যোগী হোক প্রশাসন। যমশেরপুরের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে করিমপুর ১ ব্লক স্থানীয় হাইস্কুল মাঠের পাশে একটি সোলার পাম্প সেট সজলধারা তৈরি করেছিল। খরচ হয়েছিল প্রায় চল্লিশ লক্ষ টাকা। সেখানে এখন কোনও জল পাওয়া যায় না। দীর্ঘদিন সেটা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। স্থানীয় উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পাশে নির্মিত সজলধারারও একই অবস্থা। হোগলবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের যাত্রাপুর আর্সেনিক অধ্যুষিত গ্রাম। ওই গ্রামে আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২৫ জন মানুষ মারা গিয়েছেন। গ্রামের সরোজ মণ্ডল বলেন, গ্রামের মানুষকে আর্সেনিক থেকে বাঁচাতে বছর দশেক আগে একটি সজলধারা তৈরি হলেও দুই-এক মাসের মধ্যেই তা খারাপ হয়ে যায়। বছর পাঁচেক আগে ওই গ্রামে আরও একটি সজলধারা তৈরি হলেও তার জল পানের অযোগ্য। তাই সবাইকেই পানীয় জলের জন্য কেনা জলেই ভরসা করতে হয়। অথচ গ্রামের বহু গরিব মানুষের তা কেনার ক্ষমতা নেই। বহু দূর থেকে জল টেনে আনতে হয়। করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতাল চত্বরে ৫টি সজলধারার সব ক’টিই খারাপ হয়ে গিয়েছে। সেগুলো থেকে কোনও জল পাওয়া যায় না। করিমপুর ফার্মের মধ্যেও রয়েছে অকেজো সজলধারা। হরেকৃষ্ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জয়রামপুর নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে স্থাপিত সজলধারা প্রায় তিন বছর আগে থেকে বন্ধ হয়ে রয়েছে।
জয়রামপুরের বাসিন্দা সুরজিৎ জোয়ারদার বলেন, প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোনও ব্যবস্থা হয়নি। তাঁর অভিযোগ, শুধু এই পঞ্চায়েতে নয় ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বহু টাকা খরচ করে সরকার এই সজলধারা প্রকল্পের কাজ করেছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অনেক জায়গায় বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। কোথাও বিদ্যুতের বিল জমা না দেওয়ার কারণে বন্ধ হয়েছে। কোথাওবা দেখভালের অভাবে। কারণ ওগুলো নির্দিষ্ট সময় অন্তর সার্ভিসিং করতে হয়। একবার তৈরি হলে আর সেগুলোর দিকে কেউ ঘুরেও তাকান না। ফলে কোথাও সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে আবার কোথাও জল পাওয়া গেলেও তা পানের অযোগ্য। ফলে সমস্যায় ভুগতে হয় আমজনতাকে। এবিষয়ে করিমপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি আলাউদ্দিন মণ্ডল বলেন, বেশিরভাগ সজলধারা চালু রয়েছে। তবে প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া কিছু সজলধারার ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে আগামী দিনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।