বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িতে স্ত্রী রোকেয়া বেগম ও মেয়ে নাজিমাকে নিয়ে থাকতেন নজরুল ইসলাম। তিনি তৃণমূলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় এলাকায় রাজনৈতিক অশান্তির কারণে তাঁর নামে একটি মামলা হয়। বর্তমানে সেই মামলাটি আরামবাগ মহকুমা আদালতে বিচারাধীন। নজরুল সাহেব কলকাতায় একটি বেকারিতে কাজ করতেন। গত শুক্রবার সকালে তিনি বাড়ি ফেরেন। শুনানির দিন থাকায় শুক্রবার তিনি আরামবাগ কোর্টেও যান। শনিবার দুপুরে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। এরপর রাতে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে আরামবাগ রেল স্টেশন সংলগ্ন ৩০নম্বর রেলগেটের পাশে জঙ্গলের মধ্যে ওই তৃণমূল কর্মীর দেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তারপর তাঁরা খবর দেন রেলের গেটম্যানকে। পরে রেল পুলিসের পক্ষ থেকে খবর দেওয়া হয় আরামবাগ থানায়। এরপর পুলিস এসে নজরুলের দেহ উদ্ধার করে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রেলগেট থেকে মাত্র ২০ফুট দূরে লাইনের পাশে একটি জঙ্গলের মধ্যে তাঁর দেহ পড়েছিল। দেহ উদ্ধারের সময় তাঁর পরনে ছিল কেবলমাত্র গেঞ্জি ও ফুল প্যান্ট। দেহের পাশেই পড়েছিল নীল রঙের জামা। মৃতের স্ত্রী রোকিয়া বেগম বলেন, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ স্বামী বাড়িতে আসেন। এরপর স্নান খাওয়া দাওয়া সেরে আরামবাগে কোর্টে যান। পরে দুপুরের দিকে কাজ সেরে বাড়িতে ফেরেন। পরিবারে কোনও অশান্তি ছিল না। শনিবার দিন সকাল থেকে স্বামী বাড়িতেই ছিলেন। এরপর বিকেলের দিকে বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ধানখেত দেখতে যাবেন বলে বের হন। তিনি পাড়াতেই থাকবেন বলে জানিয়ে গিয়েছিলেন। বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় হেঁটেই গিয়েছিলেন। তারপর রাতে ফোন আসে, আরামবাগ রেল স্টেশন সংলগ্ন রেল লাইনের পাশে তাঁর দেহ পড়ে রয়েছে। এই মৃত্যুকে কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন না। আমাদের ধারণা, রাজনৈতিক কারণেই তাঁকে খুন করা হয়েছে। আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। কিন্তু, বর্তমানে কলকাতায় বেকারিতে কাজ করার জন্য মাস চারেক ধরে বাড়ির বাইরে থাকতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ ব্লকের তিরোল গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ২০টি সংসদ রয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বিরোধী শূন্য আসনে জয়লাভ করে শাসক দল। এরপরই তৃণমূলের পক্ষ থেকে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করা হয়। লোকসভা নির্বাচনে পঞ্চায়েতের ২০টি সংসদের মধ্যে ১১টিতে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও বাকি ৯টিতে লিড পায় বিজেপি। এরপর থেকেই এলাকায় শাসক-বিরোধী রাজনৈতিক চাপানউতোর বাড়তে থাকে। এই ঘটনায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাদের কর্মীকে খুন করা হয়েছে। কিন্তু, সরাসরি বিরোধী কোনও রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তৃণমূল।
এবিষয়ে আরামবাগ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি স্বপন নন্দী বলেন, নজরুল আমাদের দলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তাঁর দেহ রেললাইনের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনাকে প্রাথমিকভাবে খুনের ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে পুলিস নিশ্চিত হতে পারবে। তবে রাজনৈতিক ক্ষোভ মেটাতে নজরুলকে খুন করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। মৃত তৃণমূল কর্মীর দেহ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর রবিবার বিকেলে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।