আর্থিক উন্নতি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। বস্ত্রাদি ও বিবিধ অলঙ্কারাদি ব্যবসার গতি বৃদ্ধি ও মানসিক তৃপ্তি। ... বিশদ
চোখের জল শুকোচ্ছে না রশ্মিরও। তাঁর স্বামী অনিল কুমার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ধাক্কা মারা মালগাড়ির লোকো পাইলট। বাড়ি বিহারের পাটনায়। শিলিগুড়ির দক্ষিণ দেশবন্ধুপাড়ায় ফ্ল্যাট কিনে থাকতেন তিনি। স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন রশ্মিদেবী। সঙ্গে ছিল তাঁর ১৫ বছরের ছেলে উজ্জ্বল ও ন’বছরের ছেলে আয়ূষ। সামনে ডাক্তার বা নার্স দেখলে তাঁকেই জড়িয়ে ধরে হাহাকার করছিলেন রশ্মি, ‘আমার স্বামীকে সুস্থ করে দিন। আমি ওঁকে ছাড়া থাকতে পারব না। আমার সংসার, আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ কী হবে!’ একটু সামলে নিয়ে রশ্মি বলেন, ‘কী করে এমনটা হল, বুঝে উঠতে পারছি না। রবিবার রাতেও অনেক গল্প করল। সংসারের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তখন কে জানত, কয়েক ঘণ্টা বাদে এমন ঘটনা ঘটবে।’ অনিল কুমারের বড় ছেলে উজ্জ্বল কেঁদেই চলেছে। সে বলল, ‘বাবা আমার সবকিছু ছিল। বাবার কত স্বপ্ন ছিল আমাকে নিয়ে। বাবা এভাবে চলে গেলে কেন।’ তার ভাই আয়ূষ জানে না, তার কত বড় ক্ষতি হয়েছে। মাকে সে বলে, ‘মা কেঁদো না। বাবা ঠিক হয়ে যাবে। তুমি কাঁদলে আমরা থাকব কী করে!’
আরও এক হতভাগ্য স্ত্রী অভীক্ষা। স্বামী কালেব সুব্বা। অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন তিনি। আবগারি বিভাগের অফিসার ছিলেন কালেব। মালদহে তাঁর পোস্টিং। এদিন কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন মালদহে। স্ত্রী অভীক্ষা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের নার্স। বাড়ি গোরুবাথানে। স্ত্রী ও নিজের কর্সসূত্রে কালেব তাঁর পরিবার নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের কাছেই থাকতেন। অভীক্ষা ভেবে উঠতে পারছেন না, কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল। ছুটি থাকা সত্ত্বেও কালেবের মালদহ যাওয়ার কী প্রয়োজন ছিল? বারবার নিজেকেই এই প্রশ্ন করে কেঁদে চলেছেন তিনি। চার বছর হল তাঁদের বিয়ে হয়েছে। রয়েছে দু’বছরের এক শিশুকন্যাও।
এরকমই হৃদয়বিদারক কান্না, হাহাকার আর আর্তনাদে সকাল থেকে ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ চত্বর। মৃতদের স্ত্রী, সন্তানদের সান্ত্বনা দেন পরিজনরা। ময়নাতদন্তের পর বিকেলে দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে।