গৃহে শুভকর্মের আয়োজনে ব্যস্ততা। বন্ধুসঙ্গ ও সাহিত্যচর্চায় মানসিক প্রফুল্লতা। উপার্জন বাড়বে। ... বিশদ
রানাঘাট শহরের রবীন্দ্র সরণির বাসিন্দা জয়দেববাবু। তিনি তাহেরপুর নেতাজি উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ২৫ বছর ধরে ইংরেজি পড়ান। তথ্যের অধিকার আইন নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি এই সংক্রান্ত নিজস্ব সংগঠনও রয়েছে তাঁর। চলতি মাসের ১৪ তারিখ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে থাকা কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের কাছে অনলাইন আবেদন করে তিনটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চান তিনি। জয়দেববাবুর প্রশ্ন ছিল, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ২০১৯ এবং ২০১৪-এর মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য সরকারি পোর্টালে গত ১৩ মে পর্যন্ত সমগ্র ভারত থেকে কতজন তাঁদের আবেদন জমা দিয়েছেন? একই প্রশ্ন তিনি আলাদা করে পশ্চিমবঙ্গ এবং নদীয়া জেলার ক্ষেত্রেও করেন। কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের তরফে চিঠিতে উত্তরে জানানো হয়েছে, এই বিষয়ে শুধুমাত্র সহজলভ্য তথ্য সরবরাহ করা যেতে পারে এবং আরটিআই আইন ২০০৫-এর অধীনে আবেদনকারীকে সরবরাহ করার জন্য তথ্য তৈরি বা সংকলন করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর বাধ্য নয়। পাশাপাশি এও জানানো হয়েছে, যদি আবেদনকারী এই উত্তরে সন্তুষ্ট না হন তাহলে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব (বিদেশ) তথা প্রথম আপিল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে পারেন। বিষয়টি নিয়ে স্কুল শিক্ষক জয়দেববাবু বলেন, হাতের কাছে থাকা তথ্য ছাড়া আর অন্য কোনও তথ্য দেওয়া যাবে না, এটা তথ্যের অধিকার আইনে লেখা নেই। সরকারি পোর্টালে নাগরিকত্বের জন্য কতজন আবেদন করছেন, সেই সংখ্যা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে থাকবে সেটাই তো স্বাভাবিক।
লোকসভা নির্বাচনের আগে নাগরিকত্ব আইন লাগু হতেই দেশচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা কার্যত সুনামির জলোচ্ছ্বাসের মত আছড়ে পড়ে নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগনার মতুয়া সমাজে। আরও স্পষ্ট করলে, এবারের লোকসভা নির্বাচনে এই দুই কেন্দ্রের নির্ণায়ক শক্তি মতুয়াদের সিএএ ইস্যু দিয়েই মন জয়ের মরিয়া চেষ্টা করছে বিজেপি। নদীয়ার নির্বাচন চতুর্থ দফায় শেষ হয়েছে। পঞ্চম দফায় উত্তর ২৪ পরগনার নির্বাচন আগামীকাল। তথ্য জানার আইনে স্কুল শিক্ষকের আবেদনের উত্তরে কেন্দ্রের তরফে এহেন যুক্তি নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
বিজেপিকে নিশানা করে তৃণমূলের রানাঘাট দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, যাঁদের ভোটে গদিতে বসেন রাজা, তাঁদেরই আজ দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। স্বৈরাচারের শেষ সীমা পার করে গিয়েছে বিজেপি। নাগরিকত্বের জন্য কতজন আবেদন করেছেন, এই তথ্য হাতে থাকলে তবে তো দিতে পারবে কেন্দ্র। পুরো বিষয়টাই যে ভাঁওতা, সেটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।