গৃহে শুভকর্মের আয়োজনে ব্যস্ততা। বন্ধুসঙ্গ ও সাহিত্যচর্চায় মানসিক প্রফুল্লতা। উপার্জন বাড়বে। ... বিশদ
‘অধিকারী’ ছত্রচ্ছায়ায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘জাত ক্রোধ’ আর ‘চাকরিখেকো’ কিছু রায়’কে পুঁজি করে তমলুকের বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁকে সামনে রেখেই ২০১৯’এর ১ লক্ষ ৯০ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধান টপকে লোকসভা আসন দখলের স্বপ্নে এখন বিভোর গেরুয়া শিবির। তবে তাদের বিড়ম্বনায় ফেলেছেন খোদ প্রার্থীই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে ‘কূকথার’ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে মহিলাদের প্রতি যে ভাবে ‘সম্মান জ্ঞাপন’ করেছেন অভিজিৎবাবু, তাতে ক্ষোভ গেরুয়া শিবিরেও। তাছাড়া প্রচারপর্বে কর্মী-সমর্থকদের প্রতি অনীহা এবং খারাপ ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাদের কপালের ভাঁজ আরও চওড়া হয়েছে প্রাক্তন বিচারপতির দেওয়া এক অনলাইন ইন্টারভিউতে। ওই ইন্টারভিউতে বিজেপি প্রার্থীর বক্তব্য—‘এবারই শেষ, আর ভোটে লড়তে চাই না।’ তাঁর এই বক্তব্যকে সামনে রেখেই তৃণমূল এবং সিপিএম গ্রামে গঞ্জে লাগাতার প্রচার শুরু করেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের ভোটযুদ্ধে দুই আসনে তৃণমূলের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক হয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়ি ভাড়া নিয়ে গত দু’মাসের বেশি সময় ধরে তমলুকেই পড়ে রয়েছেন তিনি। রাজীব এবং এই কেন্দ্রের নির্বাচনী কমিটির চেয়ারম্যান সৌমেন মহাপাত্রের কথায়, ‘একবার জেতাটাই যে প্রার্থীর একমাত্র লক্ষ্য, তাঁকে ভোট দেবে কেন, গ্রামবাংলার মানুষ! কোন ভরসায় তাঁকে ভরসা করবে, যিনি সাফ জানাচ্ছেন, ‘আবার ভোটে দাঁড়াব, পাগল নাকি’! আমরা সেটাই সবাইকে বলছি। সঙ্গে বলছি, বিজেপি প্রার্থীর আরেকটি কৃতিত্বের কথা। উনি মহিলাদের ’দাম’ নির্ধারণ করতেও পারদর্শী!’
ম্যানেজ করতে আসরে নেমেছেন জেলার পোড়খাওয়া বিজেপি নেতা মেঘনাদ পাল। তাঁর কথায়, ‘দুর্ব্যবহারের অভিযোগ বলছেন বটে, তবে ভাবতে হবে আমাদের প্রার্থী একটা অন্য জগত থেকে এসেছেন। তাঁর আদব-কায়দার সঙ্গে গ্রামের সাধারণ মানুষের তফাৎ হবেই। তবে উনি (অভিজিৎবাবু) আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন, পরিশ্রম করছেন। সবার সঙ্গে মিলেমিশে তমলুকের ‘ঘরের লোক’ হয়ে উঠেছেন!
এবারের ভোট যুদ্ধে ‘ঘরের ছেলে’ হয়ে ওঠার লক্ষ্যে তমলুকে এসেছেন তিন বহিরাগত। সিপিএমের সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের দেবাংশু ভট্টাচার্য এবং অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ঠারেবহরে এবার সিপিএম তমলুকে নজর কাড়ছে। প্রচার কোনও খামতিও রাখছেন না সায়ন। ২০২১’এর বিধানসভায় এই লোকসভা কেন্দ্রের তিনটি বিধানসভা দখল করেছিল বিজেপি। সেবারও এখানকার ‘বাম’ভোট ‘রামে’ গিয়েছিল। তবুও বিধানসভাওয়াড়ি প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে বিজেপির থেকে ‘২১’ ভোটে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। ‘রামে’ যাওয়া ভোট যদি ‘বামে’ ফেরাতে সক্ষম হন সিপিএমের সায়ন, তবে কপালে ভাঁজ পড়বেই গেরুয়া শিবিরের। কারণ মূল প্রতিপক্ষ তৃণমূলের দেবাংশু নয়, সিপিএমের সায়ন বলে ‘ঢাকঢোল’ পিটিয়ে বিজেপিকে ইতিমধ্যেই বেকায়দায় ফেলে দিয়েছেন খোদ তাদের প্রার্থীই।