আর্থিক উন্নতি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। বস্ত্রাদি ও বিবিধ অলঙ্কারাদি ব্যবসার গতি বৃদ্ধি ও মানসিক তৃপ্তি। ... বিশদ
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং কিছুদিন আগেই বলেছিলেন, প্রয়োজন মনে হলে অগ্নিপথ প্রকল্পের সংস্কার করা হবে। সেটা মুখের কথা ছিল না। আর্মি, এয়ারফোর্স এবং নেভি—তিন বাহিনীকেই এব্যাপারে সমীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাহিনীর অভ্যন্তরে এই স্কিম নিয়ে কী মনোভাব এবং যে উদ্দেশ্যে এই প্রকল্প চালু হয়েছে সেটি আদৌ পূরণ হবে কি না, তাও জানতে চেয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সেই রিপোর্ট হাতে আসার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ বাতিল করা না হলেও, অগ্নিবীরদের রেগুলার সার্ভিসেই অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে কোনও মধ্যপন্থা নেওয়া হতে পারে। জোটশরিকদের তুষ্ট করতে আনা হবে এই বদল। তারাও নিজেদের ভোটব্যাঙ্ককে বার্তা দিতে পারবে যে, সরকারের অঙ্গ হয়ে এই স্কিমে বদল আনতে সক্ষম হয়েছে।
কিন্তু জোটশরিকরা এই ইস্যুতে সরকারের উপর চাপ দিচ্ছে কেন? কারণ, আগামী বছর বিহারে বিধানসভা ভোট। অগ্নিপথ প্রকল্প ঘোষণা করার পর সবথেকে বেশি প্রতিবাদ, আন্দোলন ও বিক্ষোভ হয়েছিল এই রাজ্যেই। এবার বিহারের অন্যতম প্রধান দুই রাজনৈতিক দল কেন্দ্রে এনডিএ সরকারের মন্ত্রিসভায়। তারা অগ্নিপথ প্রকল্পকে মেনে নিয়েছে, বিধানসভা ভোটে এই প্রচার চালাবেই বিরোধী মহাজোট ‘ইন্ডিয়া’। আবার চলতি বছরে হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ডেও বিধানসভা নির্বাচন হবে। এই দুই রাজ্যে এবার আশানুরূপ ফল হয়নি বিজেপির। আর হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড থেকে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের প্রবণতাও বেশি। কাজেই বিরোধীদের হাত থেকে ইস্যু ছিনিয়ে নিতেই অগ্নিপথ প্রকল্পে বদলের এই উদ্যোগ।
অগ্নিপথ প্রকল্প অনুযায়ী বর্তমানে চার বছরের জন্য সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে পারেন অগ্নিবীররা। সাড়ে ১৭ থেকে ২১ বছর বয়সিরা এই সুযোগ পান। ২৪ সপ্তাহের প্রশিক্ষণ শেষে তাদের বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চার বছর পর তাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশেরই অবসর নেওয়া বাধ্যতামূলক। বিনিময়ে তারা পাবেন ১১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা। বাকি ২৫ শতাংশকে নেওয়া হবে স্থায়ী সার্ভিসে। প্রাথমিকভাবে এই অগ্নিবীররা মাসে ৩০ হাজার টাকা বেতন পায়। চার বছরে সেটা সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত পৌঁছয়। চলতি বছর পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার অগ্নিবীর যোগ দিয়েছে সেনায়। ৮ হাজার নৌবাহিনীতে এবং সাড়ে ৭ হাজার বায়ুসেনায়।
সরকারি সূত্রের খবর, অভ্যন্তরীণ সমীক্ষার পর সামরিক বাহিনীতে একাধিক বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। সেই মুখরক্ষার ফর্মুলাগুলির মধ্যে অন্যতম—এক, ২৫ শতাংশের পরিবর্তে ৭০ শতাংশকে রেগুলার সার্ভিসে নেওয়া। দুই, অগ্নিপথ প্রকল্পে যোগ দেওয়ার বয়সের ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধি করা। এবং তিন, প্রশিক্ষণ পাওয়া অগ্নিবীরদের অবসরের পর সেনার পাশাপাশি আধা সামরিক বাহিনীতে পাঠানো, যাতে প্রত্যেকেই পূর্ণ মেয়াদেই চাকরি করার সুযোগ পায়। আদতে শক্তিশালী বিরোধীপক্ষ এবং জোটশরিক ফ্যাক্টরের দ্বিগুণ চাপের মুখেই ব্যাকফুটে নতুন সরকার।