সংবাদদাতা, বজবজ: আম জনতাই হোক বা বিরোধী মনোভাবাপন্ন কোনও ভোটার—কারও সঙ্গেই খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। তৃণমূলকে ভোট দেননি, এমন নাগরিককে মারধর, হুমকি বা বাড়ি থেকে বার দেওয়ার মতো কাজগুলি করা যাবে না। বরং দলের নেতা-কর্মীদের আরও ভদ্র, নম্র এবং বিনয়ী হতে হবে। সংযমের মধ্যে থাকতে হবে তাঁদের। সুস্পষ্টভাবে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই নির্দেশের পর তৃণমূলের একাংশ তা কার্যকর করতে তৎপর হয়েছে। দলের এই অংশের মতে, লোকসভা ভোটে মানুষের আশাতীত সমর্থন পেয়েছে তৃণমূল। দু’বছর বাদে বিধানসভা ভোটের দামামা বেজে উঠবে। এর মধ্যে বিরোধীদের আক্রমণ চলতে থাকলে হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই ভোটারদের মন জুগিয়েই চলতে চাইছেন তাঁরা। অভিষেকের নির্দেশকে হাতিয়ার করে দলের মধ্যে থাকা ‘উচ্ছৃঙ্খল’ অংশকে বাগে আনার চেষ্টা চলছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। 
বিষয়টি নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত নজরদারির জন্য ইতিমধ্যে অভিষেকের অফিস থেকে ডায়মন্ডহারবারের বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট টিম তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ওই টিম নজরদারি চালানোর পাশাপাশি রিপোর্টও দেবে। লোকসভা ভোটে সাতগাছিয়ার একাধিক বুথ, বজবজ গ্রামীণ এলাকার কিছু বুথ ছাড়াও আরও কিছু বুথে অভিষেক পিছিয়ে রয়েছেন। রেকর্ড ব্যবধানে জয়ের পরও ওইসব বুথে কেন হারতে হল, তা নিয়ে অভিষেক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে দলের তথাকথিত অতি উৎসাহীদের অভব্য আচরণ, হুমকি ইত্যাদি দায়ী কি না, তা নিয়ে চিন্তিত অভিষেক নিজেই। আর সেই কারণে তিনি এ বিষয়ে তদন্ত ও নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন বলে খবর। তৃণমূলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা মনে করছেন, আগামী নির্বাচনে ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার অধীন একটি বুথেও যাতে তৃণমূলকে হারতে না হয়, তা এখন থেকেই নিশ্চিত করতে চাইছেন দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। বছর দু’য়েক পর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার জন্য প্রস্তুতির এখন ঢের দেরি। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে বিপুল সাফল্যের উৎসাহে মানুষকে হেনস্তা বা চটিয়ে দেওয়া হলে তা সাধারণ তৃণমূল সমর্থকের মনেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন দলের ভোট ম্যানেজাররা। আর সেই কারণে এখন থেকে আটঘাঁট বেঁধে প্রতিটি পদক্ষেপ করতে চাইছে তৃণমূল। এমনটাই রাজনৈতিক মহলের ব্যাখা।