আর্থিক উন্নতি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। বস্ত্রাদি ও বিবিধ অলঙ্কারাদি ব্যবসার গতি বৃদ্ধি ও মানসিক তৃপ্তি। ... বিশদ
পানিহাটির মহোৎসবতলা ঘাটে দণ্ড মহোৎসবের ইতিহাস প্রায় ৫০৮ বছরের। ঘাট লাগোয়া রাঘব পণ্ডিতের বাড়িতে চৈতন্য মহাপ্রভু ও নিত্যানন্দ মহাপ্রভু আসতেন। হুগলির সপ্তগ্রামের জমিদারের পুত্র রঘুনাথ দাস দীক্ষা নেওয়ার জন্য চৈতন্য মহাপ্রভুর কাছে গিয়েছিলেন। তিনি তাঁকে পানিহাটিতে নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর কাছে পাঠান। মহোৎসবতলা ঘাটে ভক্তদের সঙ্গে বসেছিলেন নিত্যানন্দ। রঘুনাথ এলে নিত্যানন্দ তাঁকে দই, চিঁড়ে খাওয়ানোর ‘দণ্ড’ দেন। পরমানন্দে সেই ‘দণ্ড’ মাথা পেতে নিয়ে ভক্তদের দই, চিঁড়ে, গুড় সহ মরশুমি ফল খাওয়ান রঘুনাথ। সেই থেকে আজও প্রতি বছর আয়োজিত হয়ে আসছে দণ্ড মহোৎসব।
এদিন ভোররাত থেকেই মহোৎসবতলা ঘাটে ভিড় উপচে পড়ে। ভোর ৪টে নাগাদ মঙ্গল আরতির পর ভক্তদের পুজো দেওয়ার জন্য মন্দির খুলে দেওয়া হয়। সময় যত গড়িয়েছে, ভক্তদের ভিড় বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। ইসকন মন্দির থেকে শুরু করে মহোৎসবতলা ঘাট হয়ে গঙ্গাপাড়ের বিস্তৃত এলাকার জায়গায় জায়গায় ভেসে আসে হরিনামের আসর। দুপুরে মেলায় আসেন সাংসদ সৌগত রায়। সকাল থেকে পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ সহ পুরসভার সিআইসি ও কাউন্সিলাররা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসেন বারাকপুরের পুলিস কমিশনার অলক রাজোরিয়া সহ পুলিসকর্তারা। এদিন সকাল থেকে মেঘলা আকাশ ও ভ্যপসা গরমে প্রবীণ ভক্তদের তীব্র কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়া আটকাতে ভক্তদের উপর দফায় দফায় কুয়াশার মতো জল স্প্রে করা হয়। দুপুর ১টা নাগাদ বৃষ্টি আসার পর স্বস্তি মেলে। ২০২২ সালে এই উৎসবে মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখে এদিন পুলিসি নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো। গঙ্গার ঘাটগুলিতে কোমরসমান জল পর্যন্ত বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি ঘাটে নৌকা ও স্পিড বোট মোতায়েন রাখার পাশাপাশি গঙ্গায় দিনভর পুলিসের লঞ্চ টহল দিয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছিল বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদেরও। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিভিন্ন মঠ ও আশ্রমে ভক্তদের বসে খাওয়ার ব্যবস্থা ও মন্দিরের আশপাশে মেলা বসতে দেওয়া হয়নি। পুলিসের হিসেবে লক্ষাধিক জনসমাগম হলেও শেষ পর্যন্ত এই কারণে কোনও বিপত্তি হয়নি বলে মনে করা হচ্ছে। মন্দিরের প্রধান সেবায়েত বঙ্কুবিহারী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রত্যেক বছর ভক্তদের ভিড় বাড়ছে। বুধবার রাত থেকেই ভক্তদের লম্বা লাইন পড়েছিল। বিদেশ থেকেও ভক্তরা আসছেন। সবই মহাপ্রভুর লীলা।’