লন্ডন: ‘ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন...’অ্যানফিল্ডে যে কোনও ম্যাচের আগেই বেজে ওঠে এই গান। ছয়ের দশকে প্রাক মরশুম প্রস্তুতিতে এক ম্যাচের আগে ড্রেসিং-রুমে ফুটবলারদের উদ্বুদ্ধ করতে এই গান গেয়েছিলেন তৎকালীন কোচ বিল শাঙ্কলে। তারপর থেকেই ধীরে ধীরে সেটা হয়ে ওঠে ‘দ্য রেডস’ ব্রিগেডের থিম সং। রবিবার মরশুমের শেষ ম্যাচে উলভসের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগে আরও একবার বাজল সেই গান। তবে এদিনের পর আর অ্যানফিল্ডের ডাগ-আউটে হাঁটতে দেখা যাবে না কোচ জুরগেন ক্লপকে। লিভারপুলে দীর্ঘ সাড়ে আট বছরের অধ্যায়ে ইতি টানলেন জার্মান কোচ। এই সময়কালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, প্রিমিয়ার লিগ সহ প্রায় সব ট্রফিই জিতেছেন তিনি। আধুনিক ফুটবলে কোচদের বিদায় যেখানে নিয়মিত ঘটনা, ক্লপ সেখানে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। খেলোয়াড়, সমর্থক, ক্লাবের কেউই চাননি তিনি এভাবে চলে যান। কিন্তু ক্লান্তির কাছে হার মেনে আপাতত বিশ্রামের পথ বেছে নিলেন জার্মানির ব্ল্যাক ফরেস্ট থেকে উঠে আসা এই কোচ।
ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা আগে ক্লপকে সম্মান জানিয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন লিভারপুল কর্তারা। তাঁর কোচিংয়ে জেতা সব ট্রফি নিয়ে বিশেষ ফটোসেশন সারেন জার্মান কোচ। সেই সঙ্গে আরও একবারের জন্য ঘুরে দেখেন অ্যানফিল্ডের চারদিক। এই সময় চিকচিক করে ওঠে তাঁর চোখের কোণ, আবেগের আনন্দাশ্রু। তবে নিজেকে দ্রুত সামলে নেন অভিজ্ঞ কোচ। লিভারপুলের সোনালি দিনগুলি কখনও ভুলবেন না তিনি। ক্লপের কথায়, ‘এটা আমার জীবনের সবচেয়ে আবেগপ্রবণ একটা সপ্তাহ ছিল। কোনওদিনও ভাবিনি, এতো বছর দলের দায়িত্ব সামলাতে পারব। এজেন্ট প্রথম যখন লিভারপুলে কোচিংয়ের কথা জানায়, সেই মুহূর্তে কী আনন্দ হয়েছিল তা বলে বোঝাতে পারব না। যেন আমার স্ত্রী বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছে। কোনওকিছু না ভেবেই হ্যাঁ বলেছিলাম। তবে শুরুর দিকে একটা ভীতি কাজ করেছিল। চিন্তা ছিল, পুরোপুরি এক নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারব কিনা। তবে এখানকার মানুষের কাছ থেকে পাওয়া ভালোবাসা আমি সারাজীবন বুকে বয়ে বেড়াব। বিদায়বেলায় একগুছ ভালো মুহূর্ত সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছি। তাই এখন আমি মুক্ত কণ্ঠে বলতে পারি— আই উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন।’